ফাইল ছবি

ছেলের স্বপ্নের বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ আবু সাঈদের শূন্যতা ঘিরে আছে তার পৈতৃক নিবাস পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ায়। বাড়িটিতে বাবা-মাসহ ভাইবোন সবাই আছেন। আছে আবু সাঈদের ব্যবহৃত জামা-কাপড়সহ অন্যান্য জিনিসপত্র। সবকিছুই চলছে আগের মতোই। তবুও সেখানে বিরাজ করছে আবু সাঈদের শূন্যতা।

তার বাবা-মার এই শূন্যতা পূরণ হবে না কোনো দিন। সেখানে শুধুই হাহাকার, যা তারা বয়ে বেড়াবেন সংগোপনে। রংপুর শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামের জাফরপাড়ার একটি সাধারণ পরিবারের সন্তান ছিলেন আবু সাঈদ। বাড়িতে ঘরের পাশেই আবু সাঈদের কবরের সামনে নিষ্পলক দাঁড়িয়ে ছিলেন মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা মকবুল হোসেন। তার মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার সন্তানের কারণে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। আমার ছেলের মতো যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়, এটা সবার কাছে দাবি। সে যে চেতনা নিয়ে বুকের রক্ত দিয়েছে সেই চেতনার বাংলাদেশে দেখে মরে গেলে শান্তি পাব। আমাদের বাড়িতে এখন সবাই আসেন, জানতে চান আমার ছেলের আত্মদানের কথা। সকাল হচ্ছে, সন্ধ্যা হচ্ছে, মানুষজন আগের মতোই বাড়িতে আসেন। কিন্তু হাজার মানুষের ভিড়ে আমার বুকে এক শূন্যতা বিরাজ করে। একবুক হাহাকার নিয়ে আমার প্রতিটি মূহূর্ত কাটে। সেই শূন্যতা কে পূরণ করবে? আমি মা হিসাবে আমার ছেলের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ দেখার অপেক্ষায় আছি।

আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আমার ছেলের আত্মদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ জালিম সরকারের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। আর দেশের মানুষ স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। আন্দোলনে তার ছেলের আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ছেলেরা পড়াশোনা করে চাকরি না পাওয়ায় আন্দোলন করেছে। এটা ন্যায্য দাবি ছিল। আবু সাঈদের হত্যাকারীদের ব্যাপারে তিনি বলেন, যে পুলিশ সদস্য আমার ছেলের বুকে গুলি চালিয়েছে, সেসহ অন্যান্য হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।