Advertisement

জুলাই বিপ্লবীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভূষিত করতে হবে : সেলিম উদ্দিন

নয়াদিগন্ত

প্রকাশ: ৮ জুলাই, ২০২৫

জুলাই বিপ্লবীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভূষিত করতে হবে : সেলিম উদ্দিন
জুলাই বিপ্লবীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভূষিত করতে হবে : সেলিম উদ্দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবীদের স্মরণীয় ও বরণীয় করে রাখার জন্য তাদেরকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করতে হবে।’

এসময় তিনি জুলাই বিপ্লবকে স্মরণীয় ও অর্থবহ করতে দেশে সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধাসম্পন্ন বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে জুলাই শহীদদের পরিবার ও আহতদের আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা-১৫ আসনের কাফরুল অঞ্চলের স্থানীয় একটি মিলনায়তনে ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহ আলম তুহিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, কাফরুল পশ্চিম থানার আমির আব্দুল মতিন খান, কাফরুল উত্তর থানার আমির রেজাউল করিম, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান, পরশ আব্দুল্লাহ, আবু জাফর ও সুলতান মাহমুদ প্রমূখ।

সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘৩৬ জুলাই গণঅভ্যুত্থনের মাধ্যমে একটি স্বৈরাচারি ও ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পতন এবং দেশের নতুন সূর্যের উদয় ঘটেছে। এ আন্দোলনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলো মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। তারা অনেকেই শহীদ হয়েছেন। অনেকেই আহত হয়ে হাত-পা, চোখ হারিয়ে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। শুধু তাই নয় বরং ২০১৩ সালে হেফাজতের আন্দোলনে শাপলা চত্বরেও আওয়ামী পেটুয়া বাহিনীর হামলার মুখোমুখি হয়ে শাহাদতের অনন্য নজরানা পেশ করেছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।’

তিনি আওয়ামী জাহেলিয়াতের মোকাবেলায় যারা জীবন দান করেছেন তাদেরকে শহীদ হিসাবে কবুল করে নেয়ার জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে দোয়া করন।

মহানগরী আমির শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং আহতদের শিফায়ে কামেলা এবং সকলকে সবরে জামিল ধারণের তাওফিক কামনা করেন।

তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই আমরা নতুন করে স্বাধীনতা পেয়েছি। তাই ফ্যাসিবাদীরা যাতে নতুন করে রাজনৈতিক দৃশ্যপটে ফিরে আসতে না পারে বা নতুন যাতে ফ্যাসিবাদের জন্ম না হয় সেদিকে আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনো শহীদ পরিবার যাতে অর্থকষ্টে না পড়ে সে জন্য রাষ্ট্রীয়, সামাজিক সংগঠনসহ রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু চেতনার কথা বলে দায় সারলে চলবে না বরং আগামী দিনে দেশ ও জাতির যেকোনো ক্রান্তিকালে নতুন প্রজন্ম যাতে জানমালের কোরবানী করতে উদ্বুদ্ধ হয় যেজন্য বৈপ্লবীদের দিতে হবে জাতীয় বীরের মর্যাদা। তাহলেই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা সুরক্ষিত থাকবে।

মহানগরী উত্তরের আমির বলেন, ‘অনেককেই নিজেদের মাস্টারমাইন্ড-আন্ডার মাইন্ড বলে দাবি করলেও বিপ্লবীদের জন্য তারা কিছুই করেনি। কেউ কেউ একাত্তরের চেতনার কথা বলে নিজেদের দায় সারেন। অথচ জুলাই বিপ্লবের প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে গড়ে দু’লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছে। আহতদের সাধ্যমত সুচিকিৎসা ও আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। জামায়াতের পক্ষ হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ ফ্রি অথবা নিজেরাই আমরা তা পরিশোধ করেছি।

আমরা বিপ্লবীদের স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রায় আড়াই হাজার পৃষ্ঠার ১২ খণ্ডের এক হাজার শহীদের আত্মজীবনী প্রকাশ করেছি। যা আরবী ও ইংরেজী ভাষায় অনূদিত হয়েছে। যারা একাত্তরের চেতনা ফেরি করছেন তারা এখন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাই প্রণয়ন করতে পারেনি।

মূলত, জুলাই বিপ্লব ছিলো একটি ইউনিক আন্দোলন। এ আন্দোলনে স্বৈরাচার ও তাদের দোসর ছাড়া দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের অংশ গ্রহণ রয়েছে। তাই জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকলকে এক মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

Lading . . .