Advertisement

পাটগ্রামে পাথর কোয়ারীর লোকজনের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে আহত ১৭, বিজিবির টহল

নয়াদিগন্ত

প্রকাশ: ৭ জুলাই, ২০২৫

পাটগ্রামে পাথর কোয়ারীর লোকজনের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে আহত ১৭, শহরে বিজিবির টহল
পাটগ্রামে পাথর কোয়ারীর লোকজনের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে আহত ১৭, শহরে বিজিবির টহল

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় বুধবার রাতে পাথর কোয়ারীর লোকজনের হামলার ঘটনায় পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ১৭ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এ ঘটনায় পাথর কোয়ারীর ইজারাদার ও পৌর যুবদল নেতা মাহমুদ হোসেন রাব্বী পৌর শহরের একটি অফিস রুমে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন ইউএনও ও ওসি তাদের নিকট মোটা অংকের টাকা ঘুষ দাবি করেন।

অন্যদিকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, থানায় যারা হামলা করেছে তারা দুষ্কৃতকারী। তারা যেই হোক কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

জানা গেছে, লালমনিরহাট বুড়িমারী আঞ্চলিক মহাসড়কের অবাজার নামক স্থানে বুধবার (২ জুলাই) পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উত্তম কুমার দাশ চাঁদাবাজির অভিযোগে বেলাল ও সোহেল নামে পাথর কোয়ারীর দু’জনকে আটক করে একমাসের জেল দেন।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ লোকজন রাতে থানায় গিয়ে ওই দু’জনকে আটকের প্রতিবাদ করলে পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীরা আটক ওই দু’জনকে মুক্ত করে নেয়। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা বাদশা জাহাঙ্গীর মোস্তাজীর চপলসহ প্রায় ১৭ জন আহত হন। এদের মধ্যে চপলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়েছে। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে।

এদিকে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টে তিনি দাবি করেন, পাটগ্রাম উপজেলায় সরকার কতৃক অনুমোদিত সাইটগুলো থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাওয়া পাথর বালুর ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি করা হয়। এভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি করলে দেশ সংস্কার হবে কিভাবে?

স্থানীয় পাথর বালু ইজারাদার পৌর যুবদল নেতা মাহমুদ হোসেন রাব্বী বৃহস্পতিবার দুপরে পৌর শহরের একটি অফিস রুমে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন সদ্য যোগদান করা ইউএনও উত্তম কুমার দাশ এবং ওসি মিজানুর রহমান তাদের নিকট মোটা অংকের টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। ওই টাকা না পেয়ে বুধবার রাতে ছাড়পত্র চেকিং পয়েন্ট থেকে বেলাল ও সোহেল নামে তাদের দুইজন কোয়ারী কর্মীকে ধরে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় কয়েকজনকে নিয়ে অপর ইজারাদার বিএনপি নেতা বাদশা জাহাঙ্গীর চপল বিষয়টি জানতে রাতে থানায় গেলে ওসি তাকেসহ অপর ইজারাদার চপলকে মারধর করে। পরে এ ঘটনা শহরে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ লোকজন থানার সামনে জড়ো হয়।

একপর্যায়ে ওসির নির্দেশে পুলিশ গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে তাদের ১৭ জন আহত হয়।

রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম থানায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু দুষ্কৃতকারী অ বাজার নামক স্থানে চাঁদা আদায় করছিল। পরে ওসি এবং ইউএনও তাদের চাঁদা আদায় না করার জন্য সতর্ক করেন। পরে পাথর কোয়ারী ইজারাদারের সাথে কয়েকদফা বৈঠক হয়। সেখানে তাদের বিধি মোতাবেক পাথর কোয়ারী এবং চাঁদা না তোলার বিষয়টি মনিটরিং করার জন্য বলা হয়। কিন্ত এরপরও অ, বাজার মোড়ে চাঁদা আদায় করা হলে ইউএনও মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বেলাল ও সোহেল নামে দুইজনকে আটক করে একমাসের জেল দেয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার জেরে কিছু দুষ্কৃতকারীরা থানায় হামলা করে ল্যাপটপসহ অন্য জিনিসপত্র ভাংচুর করে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া নেয়া হচ্ছে। সিসি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘বিভিন্ন ইউনিয়নে নয়টি মৌজা ইজারা দেয়া হয়েছে। এর বাইরে অন্যস্থানে পাথর তোলা বা ব্যানার লাগিয়ে ট্রাক থেকে চাঁদা তোলার কোনো সুযোগ নেই। এ ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে থানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’

Lading . . .