Advertisement

জুড়ীতে ভাতা আত্মসাৎকারী সাব্বিরের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

দৈনিক সংগ্রাম

প্রকাশ: ৮ জুন, ২০২৫

24obnd

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে মাতৃত্বকালীন ভাতা আত্মসাৎকারী প্রাইম ব্যাংকিং এজেন্ট জুড়ী শাখার পরিচালক সাব্বির আহমেদের বিচার ও ভোক্তভোগীদের সরকারি ভাতার টাকা ফেরত দেওয়ার দাবীতে ভূক্তভোগী জনসাধারণের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জুন)

জুড়ী উপজেলা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ভূক্তভোগী নারীরা বলেন, অবিলম্বে আমাদের ভাতার সরকারি টাকা ফেরত না দিলে প্রতারক সাব্বিরের বিরুদ্ধে আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।

জানা যায়, কয়েকদিন ধরে মহিলা বিষয়ক অফিস কতৃক প্রদেয় সরকারি মাতৃত্বকালীন ভাত প্রাপ্ত হতদরিদ্র নারীরা ভাতা আত্মসাৎ এর অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মহিলা বিষয়ক অফিসারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে আসছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলেও কোন সুরাহা পাননি ভুক্তভোগী নারীরার। ফলে গত রবিবার (১ জুন) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন কয়েকজন ভুক্তভোগী নারী।

ইউএনও অফিসে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত বছরে তাদের নাম মাতৃত্বকালীন ভাতায় চুড়ান্তভাবে তালিকাভূক্ত হয়। অফিসে ফরম জমা দেওয়ার সময় মহিলা বিষয়ক অফিসের কর্মকর্তা মোঃ সুজা উদ্দৌলার সামনের টেবিলে বসে থাকা সাব্বির আহমেদ সকলের ফাইল জমা নেয়। কাগজপত্র জমা নেওয়ার পর সাব্বির নিজেই (সাব্বিরের নিজস্ব এজেন্ট ব্যাংকিং) প্রাইম ব্যাংকের এজেন্টে শাখায় সকলকে একাউন্ট খুলতে চাপ দিয়ে একাউন্ট খোলান। পরে বিভিন্ন সময় সরকার কর্তৃক ভাতা একাউন্টে আসলেও সাব্বির তার এজেন্ট ব্যাংকিং থেকে টাকা দিতে নানা টালবাহানা শুরু করেন‌। কিছু টাকা দেওয়ার পর কৌশলী সাব্বির একাউন্ট থেকে টাকা হ্যাকাররা নিয়ে গেছে এমন কথা বলে নারীদের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। মাসের পর মাস ভোক্তভোগী নারীরা প্রাইম এজেন্ট ব্যাংক, মহিলা বিষয়ক অফিস ও সাব্বিরের কাছে ধরনা দিলেও এর কোন সমাধান না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ শুরু করেন। এ সময় বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধরের কাছে গণমাধ্যম কর্মীরা জানতে চাইলে তিনি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

সরজমিনে উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে ভাতা প্রাপ্ত হতদরিদ্র ১৫/২০ জন নারী জানান, অভিযুক্ত সাব্বির বেশ কয়েকবছর ধরে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিসে খন্ডকালীন হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেই প্রাইম ব্যাংকের এজেন্ট শাখা এনে ওই শাখায় হতদরিদ্র মহিলাদের অ্যাকাউন্ট খুলে অফিসের কর্মকর্তা মোঃ সুজা উদ্দৌলার যোগসাজশে প্রতারণা করে তাদের মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা হাতিয়ে নেন। অবশেষে কোন সুরাহা না পেয়ে ভোক্তভোগী নারীরা উপজেলা নিবার্হী অফিসার বাবলু সূত্র ধর এর নিকট আত্মসাৎ এর টাকা ফেরত পেতে সাব্বির ও সুজাউদ্দৌলার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে সাব্বির আহমেদের মুঠোফোনে ফোন দিলে সে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলেন, গ্রাহকদের টাকা হ্যাকাররা নিয়েছে। আমার কিছু করার নেই।

এবিষয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মরত মোঃ সুজাউদ্দৌলা সাব্বির এই অফিসে কর্মরত ছিল বিষয়টি স্বীকার করলেও তাকে বাঁচাতে নানা দায়সারা বক্তব্য দিয়ে বিভিন্ন তথ্য গোপন করে বলেন, এ বিষয়ে আমার ম্যাডামের অনুমতি ছাড়া কোন কথা বলতে পারব না।

অভিযোগের বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির সহকারী পরিচালক ফ্লোরা ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্র ধর জানান, সাব্বিরের অভিযোগের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলার মিটিং ও আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারীদের অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন

Lading . . .