মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান দরিদ্রদের ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির মাধ্যমে মামলাপূর্ব বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতার যে বিধান কার্যকর হচ্ছে তাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার পাওয়ার অভাবনীয় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধান কার্যকর উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের আওতাধীন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার উদ্যোগে সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগের সিনিয়র বিচারক, বন্ধু রাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগী প্রতিনিধিবৃন্দসহ সিলেট বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী, বিভিন্ন সরকারী দফতরের কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নতুন অধ্যাদেশ কার্যকরের সুফল সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধানের ফলে মানুষের অধিকার সুরক্ষার পথ আরও সুগম হবে। একদিকে যেমন মামলা নিষ্পত্তির সময় কমবে, তেমনি খরচও বাঁচবে। মামলার জট হ্রাস পেয়ে জনগণের হয়রানি দূর হবে। এ পরিবর্তনের ফলে জনগণ দ্রুত আইনি প্রতিকার পাবে। এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি আরো বলেন, লিগ্যাল এইডের মামলাপূর্ব মধ্যস্থতায় বেশিরভাগ বিবাদীপক্ষই সন্তুষ্ট হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে এর মাধ্যমে দুই পক্ষই জয় লাভ করে। একারণেই এটিকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আইনত সহায়তা প্রদান আইনের সাম্প্রতিক সংস্কার বিষয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ও সিনিয়র জেলা জজ শেখ আশফাকুর রহমান ও মামলাপূর্ব মধ্যস্থতা বাস্তবায়নে জেলা বিচার বিভাগের ভূমিকা বিষয়ে সিলেটের জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
তারা বলেন, এ ধরণের যুগোপযোগী সংস্কার বিচার ব্যবস্থাকে অধিক গতিশীল ও জনবান্ধব করবে। জেলা লিগ্যাল এইড জনগণের আস্থার প্রতীক হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বন্ধু রাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগী প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ‘জিআইজি’ বাংলাদেশের বর্তমান কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্টিনা বুরকার্ড।
অনুষ্ঠানে মঞ্চনাটক ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বাধ্যতামূলক বিধানের প্রয়োজনীয়তা ও সুফল তুলে ধরা হয়।
আইনগত সহায়তা সম্প্রসারণ ও গতিশীল করার লক্ষ্যে গত ১ জুলাই আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ জারি করা হয়। এর ফলে এ অধ্যাদেশের তফসিলভুক্ত বিষয়গুলো যেমন পারিবারিক বিরোধ, পিতা-মাতার ভরণপোষণ, বাড়ি ভাড়া, বণ্টন, যৌতুক ইত্যাদি ক্ষেত্রে মামলাপূর্ব মধ্যস্থতার বিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জসহ মোট ১২ (বার) টি জেলায় ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে এ বিধান কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন