সাবেক জ্বালানি মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ‘অদক্ষ’ প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ঘোষিত এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) পাইপলাইন অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স প্রকল্পের টেন্ডারকে ঘিরে নতুন করে বিতর্কের তৈরি হয়েছে। ‘পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও আর্থিক সক্ষমতা না থাকা’ একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেওয়াকে ঘিরে এ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানি পার্টিমেনা ট্রান্স কন্টিনেন্টাল বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ‘ইন্ট্রাকো গ্রুপ’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি দরপত্রে অংশ নিয়েছে। দরপত্রের নম্বর-বিপিসি এসপিএম ওএন্ডএম ০১/২০২৫।
অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইন্ট্রাকো গ্রুপ সাবেক জ্বালানি মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে কোনো ধরনের টেন্ডার ছাড়াই ভোলা থেকে সিএনজি আকারে গ্যাস নিয়ে আনার কাজ পায়। বেশি দামে এ কাজ দেওয়া হয়। ওই সময় আরও অনেক কোম্পানি আগ্রহ দেখালেও তাদের দেওয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, ইন্ট্রাকো গ্রুপের পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও আর্থিক সক্ষমতা নেই। তবু তারা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি পরিবহন ও অপারেশন প্রকল্পের জন্য আবারও টেন্ডারে অংশ নিয়েছে। এতে টেন্ডার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যায়সংগত প্রতিযোগিতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে। এ ছাড়া কোম্পানিটির বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রকল্প থেকে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করা এবং পূর্ববর্তী স্বৈরশাসক গোষ্ঠীর সহযোগীদের কাছে পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে দেশের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক মহলের ভাষ্য অনুযায়ী, ইন্ট্রাকো গ্রুপ আগে তাদের আইপিও শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়েছে এবং বিপুল অর্থ বিদেশে, বিশেষ করে দুবাইয়ে পাচার করেছে। সিএনজি স্টেশন ব্যবসা থেকে অর্জিত রাজস্বও দেশে যথাযথভাবে প্রদান না করে বিদেশে স্থানান্তরের অভিযোগ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অবিলম্বে তদন্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
অভিযোগকারীরা বলছেন, ইন্ট্রাকো গ্রুপ ও তাদের সহযোগীদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে স্বচ্ছ তদন্ত, চলমান টেন্ডার মূল্যায়ন বাতিল করা এবং ভবিষ্যতে শুধু প্রযুক্তিগত ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডার প্রদান নিশ্চিত করা উচিত।
সরকারের স্বচ্ছ পদক্ষেপ না থাকলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো দুর্নীতি ও অনিয়মের শিকার হবে, যা সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টজন।
আরও পড়ুন