Advertisement

জামালপুরে গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে দর্শকের ঢল

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

খেলা শুরুর অনেক আগেই পূর্ণ হয়ে যায় ১৫ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি। সোমবার বিকেলে জামালপুর স্টেডিয়ামেছবি: প্রথম আলো
খেলা শুরুর অনেক আগেই পূর্ণ হয়ে যায় ১৫ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি। সোমবার বিকেলে জামালপুর স্টেডিয়ামেছবি: প্রথম আলো

ফুটবল যে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের আবেগের সঙ্গে মিশে আছে, জামালপুরে তা আরেকবার টের পাওয়া গেল। আজ সোমবার বিকেলে জামালপুর স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ হয়েছে, যেখানে হাজারো দর্শক ছিলেন।

বিকেলে হওয়া ম্যাচটি দেখতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুপুরের পর থেকেই দলে দলে স্টেডিয়ামে আসেন স্থানীয় মানুষ। খেলা শুরুর অনেক আগেই পূর্ণ হয়ে যায় ১৫ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটি। শুধু তা–ই নয়, গ্যালারিতে জায়গা না হওয়ায় অসংখ্য দর্শক মাঠের ভেতরে ঢুকে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে খেলা দেখেন।

বিকেল চারটার দিকে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে জামালপুর পৌরসভা ও সরিষাবাড়ী উপজেলার মধ্যে। ৯০ মিনিটের এই খেলায় জামালপুর পৌরসভা ২-১ গোলে বিজয়ী হয়েছে।

দেওয়ানগঞ্জ থেকে খেলা দেখতে এসেছিলেন বুলবুল আহাম্মেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি দুই দলের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। অভিভূত হয়েছি বিপুলসংখ্যক দর্শক দেখে। আমাদের সময়েও অনেক দর্শক হতো। কিন্তু জামালপুরের কোনো মাঠে এত দর্শক এর আগে দেখেছি বলে মনে হয় না। ফুটবল যে কত জনপ্রিয় খেলা, আজ আবার তা স্মরণ করিয়ে দিল।’

জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক এ কে এম আবদুল্লাহ-বিন-রশিদ বলেন, ‘অনেক দিন পর জেলা পর্যায়ের ফুটবল–উন্মাদনা দেখলাম। পুরো স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। গ্যালরিতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। এত মানুষ এর আগে কখনো এমন খেলায় দেখিনি। ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়, এটি মানুষের আবেগ, ভালোবাসা আর ঐক্যের প্রতীক। মাঠের খেলোয়াড়েরা যেমন খেলার প্রাণ, তেমনি গ্যালারির দর্শকেরাই হলো সেই খেলার আত্মা। দর্শক ছাড়া ফুটবল খেলা কখনো পূর্ণতা পায় না।’

জামালপুর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী (মামুন) জানান, একসময় জামালপুর জেলার খেলোয়াড়েরা দেশ-বিদেশের মাঠে গিয়ে খেলতেন। জামালপুরের মানুষের প্রাণের খেলা এই ফুটবল। বিকেল হলেই ফুটবল মাঠ দর্শকে পরিপূর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে জামালপুরে ফুটবল ঝিমিয়ে পড়ে। জামালপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম রয়েছে। কিন্তু খেলাধুলা না হওয়ায় সেটি কাশবন ও গোচারণভূমিতে রূপ নিয়েছিল। ৫ আগস্টের পর সবকিছু আবারও নতুন করে শুরু করা হয়েছে। এখন পুরোদমে খেলাধুলা শুরু হয়েছে। জামালপুরের ঝিমিয়ে পড়া ফুটবলকে চাঙা করতে আরও খেলার আয়োজন করা হবে।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ, ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আতাউল কিবরিয়া, জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, জামালপুর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী (মামুন), ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল্লাহ আল ফুয়াত রেদোয়ান প্রমুখ।

জেলা প্রশাসন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে ৩০ আগস্ট থেকে জামালপুর স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। এতে জামালপুর সদর উপজেলা, জামালপুর পৌরসভা, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা, বকশীগঞ্জ উপজেলা, ইসলামপুর উপজেলা, মেলান্দহ উপজেলা, মাদারগঞ্জ উপজেলা ও সরিষাবাড়ী উপজেলা অংশ নেয়। আজ ফাইনাল ম্যাচ ছিল।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম বলেন, ‘এত দর্শক দেখে আমি সত্যিই অভিভূত হয়েছি। জামালপুরের মানুষ যে ফুটবল ভালোবাসেন, তা দর্শক দেখে বোঝা গেল। জামালপুর জেলার খেলোয়াড় একদিন বিশ্ব মঞ্চে খেলবে বলে আশা করি। এ ধরনের আয়োজন আরও করা হবে। যাতে দর্শকেরা আজকের মতো এভাবেই খেলা উপভোগ করতে পারেন।’

Lading . . .