Advertisement

নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

নয়াদিগন্ত

প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২৫

ভেঙে গেছে নদী রক্ষা বাঁধ
ভেঙে গেছে নদী রক্ষা বাঁধ

কামরুজ্জামান, চরফ্যাশন (ভোলা)

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো। মঙ্গলবার (৩ জুন) উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে, এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার ঢালচর, চরনিজাম, কুকরী-মুকরী ও মুজিব নগরের সিকদারচর। এসব অঞ্চলের ৩০ হাজার মানুষ নিম্নচাপের থাবার মুখে পড়েছেন।

এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঢেউর তোরে ভেসে যায় বাঁধ রক্ষা সংরক্ষণ প্রকল্পের ব্লকের জিও ব্যাগ। ভেঙে গেছে আবাসন প্রকল্পের ঘর, স্কুল, মাদরাসাসহ প্রায় তিন শতাধিক বসতঘর। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে মানুষের পুকুরের ও ঘেরের মাছ, এবং ভেসে গেছে কৃষকের গবাদি পশু। এতে সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

চরফ্যাশন পানি উন্নয়ন বোর্ডে-২ (পাউবো)-এর উপ-প্রকৌশলী আহসান আহম্মেদ বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে নদীর পানি সাত থেকে আট ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিকই কিন্তু কোথায় বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। তবে গত বুধবার রাতে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে খেজুরগাছিয়া বেড়িবাঁধটি পানির স্রোতে ভেঙে পানি ভেতরে প্রবেশ করে। সেই বেড়িবাঁধটি জরুরি মেরামতের জন্য প্রায় ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রাণীসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ডা: মো: রাজন আলী বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে চরফ্যাশনে দুই হাজার ৯৮৮টি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ১৯৬টি।

এছাড়া ২১১ একর চারণভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃত গবাদিপশুর ক্ষতির পরিমাণ ২০ লাখ দুই হাজার ৮৮০ টাকা। এছাড়া খামারের অবকাঠামো, শুকনো খড়, ঘাস, দানাদার খাবারসহ অন্য ক্ষতির পরিমাণ ২৯ লাখ ১৯ হাজার ৮৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারণ করা এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে কৃষি খাতে চার কোটি টাকার ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে আউশ ধানের বীজতলা ৩৪ হেক্টর, সদ্য রোপা আউশ ধান ১০৫ হেক্টর, শাকসবজি ১৪৪ হেক্টর ক্ষতি হয়েছে। এতে দুই হাজার ৯৬০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, নিম্নচাপে মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ চার কোটি ২৫ লাখ টাকা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মাছের ঘের ১২০টি, পুকুর ও দীঘি এক হাজার ২০০টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮ লাখ পোনা ও ১৫৩ দশমিক ৩৬ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। এছাড়া ৩২টি মৎস্য নৌযানের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ‘ঢালচর, চরনিজাম, চরকুকরি-মুকরি, চরপাতিলা ও মুজিব নগরসহ বিভিন্ন গ্রামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ তিন শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল থেকে এসব প্রতিষ্ঠানকে টিন দেয়া হয়েছে। গৃহহীন পরিবারের মাঝে ৪০ বান টিন বিতরণ করেছি। পর্যায়ক্রমে আরো টিন বিতরণ করা হবে। এ ছাড়াও শুকনো খাবার, শাড়ি কাপড় বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তবে উল্লিখিত চারটি খাতের ক্ষতিপূরণ সরকারিভাবে নির্ধারিত নেই।

আরও পড়ুন

Lading . . .