Advertisement

জাইকার সহায়তা বাড়াতে আহ্বান ড. ইউনূসের

যায় যায় দিন

প্রকাশ: ৩০ মে, ২০২৫

জাইকা প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত
জাইকা প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহেশখালী-মাতারবাড়ি ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআইডিআই) অঞ্চলে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) প্রতি সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিকেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়া সম্মেলনের ফাঁকে জাইকা প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকোর সঙ্গে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।

‘এমআইডিআই অঞ্চল বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ’ মন্তব্য করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বঙ্গোপসাগরের প্রবেশাধিকারকে কেন্দ্র করে আমরা গভীর সমুদ্রবন্দর, মহাসড়ক এবং রেলপথ নির্মাণ করছি, যা এমআইডিআই অঞ্চলকে নেপাল, ভুটান এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অংশের সাথে যুক্ত করবে।

জাইকা প্রথমে মাতারবাড়িতে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন পুরো এমআইডিআই অঞ্চলকে বন্দর, লজিস্টিকস, মৎস্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের একটি হাব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একটি বিস্তৃত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করছে।

এ অঞ্চলে একটি মেগাসিটি গড়ে তোলা আমাদের ভিশনে রয়েছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, “বর্ধিত ভ্রমণ চাহিদা মেটাতে বিমানবন্দরগুলোকেও আপগ্রেড করা হচ্ছে।

ড. তানাকা জাইকার এমআইডিআই‌ প্রকল্পের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

জবাবে ড. ইউনূস জানান, এমআইডিআই প্রকল্পগুলোর তদারকি এবং জাইকা ও অন্যান্য সম্ভাব্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য একজন সিনিয়র কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, এমআইডিআই অঞ্চলে ফ্রি ট্রেড জোন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা স্থাপন করতে পারবেন। এ অঞ্চলে একটি এক্সক্লুসিভ ফিশারিজ জোনও তৈরি করা হবে, যেখানে বড় মাছ ধরার জাহাজগুলো পরিচালনা করা যাবে।

আমাদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরায় যুক্ত হতে হবে বলে মন্তব্য করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের ট্রলারগুলো গভীর সমুদ্রে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট বড় নয়। ফলে আমাদের জলসীমায় পার্শ্ববর্তী দেশের জাহাজগুলো মাছ ধরছে। আমরা যদি সক্ষমতা তৈরি করতে পারি, তাহলে ফিশারিজ জোনে মাছ প্রক্রিয়াকরণ করে দেশীয় চাহিদা ও রপ্তানির জন্য সরবরাহ করতে পারব।

এ সময় ড. তানাকা জানান, সম্ভবত প্রথমবারের মতো তিনি কোনো বাংলাদেশি নেতার কাছ থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার বিষয়ে এমন পরিকল্পনার কথা শুনলেন।

দুই নেতা জুলাই মাসের গণ-আন্দোলনের পর বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি, দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্নীতি দমন প্রচেষ্টা নিয়েও আলোচনা করেন।

ড. ইউনূস নিশ্চিত করেন, সাধারণ নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি আগের কাজের জায়গায় ফিরে যাবেন। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়, যেখানে প্রধান উপদেষ্টা মানবিক সহায়তায় জাইকার সমর্থন বাড়ানোর আহ্বান জানান।

ড. তানাকা রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় জাইকার অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

Lading . . .