Advertisement

দলের সুনাম রক্ষায় নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান তারেক রহমানের

নয়াদিগন্ত

প্রকাশ: ২ জুলাই, ২০২৫

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলের প্রধান কাজ সাধারণ মানুষকে খুশি করা এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করা। বিএনপি’র সুনাম নষ্ট হয় বা মানুষের ক্ষতি হয় এমন কাজে লিপ্ত হওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না। প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে।’

বুধবার (২ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে পটুয়াখালী শহরের ব্যায়ামাগার মিলনায়তন কক্ষে পটুয়াখালী জেলা বিএনপি আয়োজিত ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘গত ১৫ বছরে স্বৈরাচার সরকার গণতন্ত্রের ভিত্তি ধ্বংস করেছে। এর আগেও বাকশাল গঠন করে সকল দল নিষিদ্ধ এবং চারটি সংবাদপত্র বাদে সকল সংবাদপ্রচার মাধ্যম বন্ধ করে দেশের গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে। এরপর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘জনগণের সাথে থাকুন এবং জনগণকে সাথে রাখুন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভিত্তি আরো মজবুত করার জন্য নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে।’

দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি এ মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এজন্য আমাদের দায়িত্ব বেশি। দেশের ১২ কোটি ৫০ লাখ ভোটারের দোরগোড়ায় দলের দাওয়াত ও আহ্ববান পৌঁছে দিতে হবে। আমরা সরকার গঠন করলে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী, আগামী প্রজন্মের কর্মসংস্থান এবং বিচার ও আইনশৃঙ্খলা কী রকম হবে সেই ব্যাপারে মানুষদের সুস্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।’

বিএনপি’র এ শীর্ষ নেতা বলেন, ‘গত ১৫ বছরে খুন, গুম ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে আদালতের বারান্দায় যেতে হয়েছে দলটির নেতাকর্মীদের। এ লড়াইয়ে ৭০০ নেতাকর্মী হারিয়েছে আমরা। তারপরেও দমে যায়নি দলটি। গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে বিএনপি ছিল এবং থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘পটুয়াখালীর কাউন্সিলররা ভোট দিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। এর মাধ্যমেই প্রমাণিত হবে বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। বিএনপি যেহেতু বড় দল সেক্ষেত্রে ছোট দলের সাথে বসতে হবে। তাদের মতামত শুনতে হবে। তাদের মতের গুরুত্ব দিয়ে সকল সমস্যা নিরসন করতে হবে। পহেলা জুলাই থেকে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে একত্রিত হয়ে দেশ থেকে স্বৈরাচার হাসিনাকে তাড়িয়েছে। তেমনিভাবে আগামী দিনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সকলে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।’

জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ চুন্নুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টির সঞ্চালনায় সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরি, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহবুবুল হক নান্নু, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সদস্য ও সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক দুলাল হোসেন ও সদস্য হাসান মামুন প্রমুখ।

দীর্ঘ ২৩ বছর পরে জেলা বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো। কদর বেড়েছে নেতাকর্মীসহ ভোটারদের। সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে সম্মেলনস্থলে জড়ো হয়েছেন জেলা, পৌর ও উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। এ সময় বিভিন্ন ব্যানারে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসেন তারা।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে সর্বশেষ সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং স্নেহাংশু সরকার কুট্টি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে ২০২০ সালে ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এবারের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোট আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ১৪টি ইউনিটের ১ হাজার ৫১১ জন কাউন্সিলর ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

Lading . . .