বরগুনায় চাঁদাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৪
প্রকাশ: ১ জুলাই, ২০২৫
বরগুনার তালতলী উপজেলায় চাঁদাবাজির অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তালতলী উপজেলা শহরের সদর সড়কে এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত চারজনকে বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হকের বিরুদ্ধে মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে গতকাল সোমবার (৩০ জুন) সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি কর্মী ও ব্যবসায়ী মো. আবুল কালাম। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহিদুল হকের সমর্থকেরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কর্মসূচি পালন করেন। একই সময় তালতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মামুন ও উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মিয়া রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের নেতৃত্বে একই স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরে নৌবাহিনীর সদস্যরা এসে লাঠিপেটা করে দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তালতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও তালতলী বাজার বহুমুখী সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, শহিদুল হক ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি ও একজন ব্যবসায়ীকে মারধর করেন। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা ব্যবসায়ীদের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এ কর্মসূচি চলাকালীন হামলা করা হয়। এতে ব্যবসায়ী ও বিএনপির নেতা–কর্মীরা আহত হন।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর প্রতিবাদে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মানববন্ধন চলছিল। এ সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম ও যুবদলের সদস্যসচিব মিয়া রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের নেতৃত্বে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আহত আমার চারজন সমর্থককে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানো হয়েছে।’
তালতলী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন গুরুতর আহত থাকায় বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে নৌবাহিনীর সহায়তায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরের দোকানপাট দুই ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি।