Advertisement

চাকসু নির্বাচনের তফশিল বৃহস্পতিবার

যুগান্তর

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট, ২০২৫

24obnd

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হবে বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায়। সেপ্টেম্বর মাসেই নির্বাচন আয়োজনের কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদিকে নির্বাচন ঘিরে সরগরম রয়েছে ক্যাম্পাস। চায়ের দোকানের আড্ডা কিংবা আলাপচারিতা, সবখানে আলোচনার বিষয় এখন চাকসু নির্বাচন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে ক্যাম্পাসে। নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি না থাকায় অনেক যৌক্তিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। এবার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে প্রতিনিধি নির্বাচন করার সুযোগ পেতে যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত তারা।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মনির উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার ৩টায় তফশিল ঘোষণা হবে। ছাত্রদের নিয়েই আমাদের কাজ। সারা বছর আমরা ছাত্রদের নিয়েই থাকি। তাই কোনো আশঙ্কা দেখছি না।

পালটাপালটি বিবৃতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন ঘিরে শিবির ও ছাত্রদলের পালটাপালটি বিবৃতির পর উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার শিবিরের এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়- চাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে ছাত্রদল। এতে বলা হয়- দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীদের দাবি, আন্দোলন ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির পর নির্বাচন এগিয়ে আসছে। কিন্তু ছাত্রদল নানা অজুহাত দাঁড় করিয়ে নির্বাচন ঠেকাতে চাচ্ছে।

মূলত রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে পক্ষপাতদুষ্ট আখ্যা দিয়ে তাদের পদত্যাগ দাবিতে মঙ্গলবার মিছিল করে ছাত্রদল। এদিন রাতে বিবৃতি দেয় শিবির।

একদিনের ব্যবধানে বুধবার পালটা বিবৃতি দেয় শাখা ছাত্রদল। বিবৃতিতে শিবিরের অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়, চাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত নয়, বরং তারাই স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।

ক্যাম্পাসে চাকসু নির্বাচন ঘিরে এই দুই বড় ছাত্র সংগঠনের পালটাপালটি অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে।

শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী যুগান্তরকে বলেন, আমরা শুরু থেকেই চাইছি দ্রুত চাকসু নির্বাচন হোক। কারণ অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা রাজনীতি করে না। তাদের যৌক্তিক কথাগুলো বলার জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি দরকার।

শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান যুগান্তরকে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে দাবি, আমাদেরও সেই দাবি। আমরা চাই অতিদ্রুত চাকসু নির্বাচন হোক। কেউ কৌশলে নির্বাচন দীর্ঘায়িত করতে চাইলে ছাত্রদল মেনে নেবে না।

দুই ভাগ বাগছাস

এদিকে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) অভ্যন্তরীণ দলাদলির কারণে নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। চাকসু নির্বাচনেও দলটির দুটি প্যানেল হতে পারে বলে দাবি সূত্রগুলোর।

এই দলাদলি প্রকাশ্যে এসেছে গত রোববার বাগছাসের চবি শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর। অভিযোগ রয়েছে, একটি নির্দিষ্ট কোরামের কর্মীদের নিয়ে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের শুরু থেকে যারা এতে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা অনেকে এই কোরামের ‘পছন্দের’ না হওয়ায় পদ পাননি। এছাড়া সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব পদ পাওয়া আশরাফ চৌধুরী ছাত্রলীগে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কমিটিতে আহ্বায়ক হয়েছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসির মাহমুদ। তিনি অরাজনৈতিক গাউসিয়া কমিটির চবি শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

সদস্য সচিব হয়েছেন ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আল মাসনূন। তিনি নানা অভিযোগে চবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক থেকে ২০২৪ সালের ১৬ আগস্ট পদত্যাগ করেন। তবে ডিসেম্বরে ফের উদযাপন করে মিডিয়া সেলের দায়িত্ব নেন মাসনূন।

জানা যায়, বাগছাসের বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে একটি প্যানেল হতে পারে চাকসু নির্বাচনে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান ও কেন্দ্রীয় সংগঠক রশিদ দিনারসহ পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা একটি প্যানেল গঠন করতে পারেন।

বাগছাসের কেন্দ্রীয় সংগঠক রশিদ দিনার যুগান্তরকে বলেন, আপাতত চাকসু নির্বাচনে ফোকাস করছি। নির্বাচনের পর অন্যান্য বিষয় দেখা যাবে।

১ জুলাই থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে অংশ নিতে দেখা যায় মশিউর রহমান সোহাগকে। তিনিও কমিটিতে পদ পাননি। মশিউর যুগান্তরকে বলেন, সম্মুখসারির জুলাই-যোদ্ধাদের পদ দেওয়া হয়নি। একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে থাকাদের পদ দেওয়া হয়েছে। আমি আপাতত চাকসু নির্বাচন নিয়ে ভাবছি।

চবি বাগছাসের আহ্বায়ক মুনতাসির মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, পদে কারা আসবে সেটা কেন্দ্র থেকে নির্ধারণ করেছে। এটাতে আমাদের খুব বেশি ভূমিকা নেই। আর আশরাফ চৌধুরী পূর্বে ছাত্রলীগ করলেও আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। হলে থাকার জন্য অনেককেই ছাত্রলীগ করতে হয়েছে।

Lading . . .