প্রকাশ: ২৮ আগস্ট, ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন নির্বাচন কমিশনার। তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বিতরণ করা শুরু হবে ১৪ সেপ্টেম্বর আর ১২ অক্টোবর ভোটগ্রহণ।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে তফসিল ঘোষণা করেন চাকসুর নির্বাচন কমিশনার রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মনির উদ্দিন।
এ সময় তিনি বলেন, নির্বাচনের মোট খসড়া ভোটার ২৫ হাজার ৭৫২ জন। আগামী সোমবার এই তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভোটার তালিকার বিষয়ে আপত্তি জানানো যাবে। ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বিতরণ করা শুরু হবে ১৪ সেপ্টেম্বর। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে মনোনয়ন জমা নেওয়া শুরু হবে। ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র নেওয়া যাবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু ১৮ সেপ্টেম্বর। ২১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। এটি প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।
১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। এরপরই ভোট গণনা শুরু হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক জাফর উল্লাহ তালুকদার, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম হোসেন হাবীব প্রমুখ। চাকসু নির্বাচন কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক একেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
এদিকে চাকসু নির্বাচন ঘিরে শিবির ও ছাত্রদলের পালটাপালটি বিবৃতির পর উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার শিবিরের এক বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, চাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে ছাত্রদল। এতে বলা হয়- দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীদের দাবি, আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির পর নির্বাচন এগিয়ে আসছে। কিন্তু ছাত্রদল নানা অজুহাতে নির্বাচন ঠেকাতে চাচ্ছে।
মূলত রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে পক্ষপাতদুষ্ট আখ্যা দিয়ে তাদের পদত্যাগ দাবিতে মঙ্গলবার মিছিল করে ছাত্রদল। এদিন রাতে বিবৃতি দেয় শিবির।
একদিনের ব্যবধানে বুধবার পালটা বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। বিবৃতিতে শিবিরের অভিযোগকে ‘মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়, চাকসু নির্বাচন বাধাগ্রস্ত নয় বরং তারাই স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।
ক্যাম্পাসে চাকসু নির্বাচন ঘিরে এই দুই বড় ছাত্র সংগঠনের পালটাপালটি অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী যুগান্তরকে বলেন, আমরা শুরু থেকেই চেয়েছি দ্রুত চাকসু নির্বাচন হোক। কারণ অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা রাজনীতি করেন না, তাদের যৌক্তিক কথাগুলো বলার জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধি দরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান যুগান্তরকে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে দাবি আমাদেরও সেই দাবি। আমরা চাই অতিদ্রুত চাকসু নির্বাচন হোক। কেউ কৌশলে নির্বাচন দীর্ঘায়িত করতে চাইলে ছাত্রদল মেনে নেবে না।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। এর পর নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। ছাত্রসংগঠনগুলোর মুখোমুখি অবস্থান, কয়েক দফা সংঘর্ষ ও উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
আরও পড়ুন