Advertisement
  • হোম
  • শিক্ষা
  • ৯ম গ্রেডভিত্তিক পদসোপানের দাবি সরকারি মাধ্যমিকের শ...

৯ম গ্রেডভিত্তিক পদসোপানের দাবি সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের

জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

৯ম গ্রেডভিত্তিক পদসোপানের দাবি সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের
৯ম গ্রেডভিত্তিক পদসোপানের দাবি সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের

দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে এন্ট্রি পদ নবম গ্রেডভিত্তিক পদসোপানের দাবি জানানো হয়েছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে দাবিগুলোর ব্যাপারে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সফল বৈঠক না হলে ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে চারস্তরীয় অ্যাকাডেমিক পদসোপান বাস্তবায়ন পরিষদ’র ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১৯৭৩ সালের জাতীয় বেতন কমিশনের সুপারিশে সহকারী শিক্ষক পদটি দ্বি-স্নাতক যোগ্যতার হলেও পদসংশ্লিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএড/বিপিএড কোর্স (এক বছর) দুই বছরের না হওয়ায় পদটি সেসময়ের পঞ্চম গ্রেড; বর্তমানের নবম গ্রেডের বেতন ও মর্যাদা লাভ করতে পারেনি। তবে ১৯৯১ সালে পদটির শিক্ষাগত যোগ্যতায় প্রথম শ্রেণির স্নাতকোত্তর অথবা দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকসহ দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সংযোজিত হওয়ায় পদটি নবম গ্রেডের অধিকারী হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটার বাস্তবায়নের কোনো নাম নেই। এর মানে হলো, এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড কোনো দাবি নয়, এটি বকেয়া অধিকার।

মাধ্যমিক শিক্ষকরা আরও বলেন, ১৯৯০ সালের আগে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও পিটিআই ইন্সট্রাক্টর একই সার্কুলারে নিয়োগ ও পারস্পরিক বদলি হতে পারতেন। ১৯৯০ সালে টিইও ও ১৯৯৬ সালে ইন্সট্রাক্টররা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হলেও সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকরা আজও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে আছেন। বৈষম্যের যদি কোনো প্রতিশব্দ বা সমার্থক শব্দের প্রয়োজন হয়, তাহলে মাউশির বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখা; আরও বিশেষভাবে বলতে গেলে সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষক পদটির কথা নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর বা অধিদপ্তর অথবা পরিদপ্তরের দশম গ্রেড তো বটেই, অনেক নিচের গ্রেডের পদও নবম গ্রেডে আপগ্রেড হয়েছে। শুধু দশম গ্রেডের সহকারী শিক্ষক পদটির ন্যায্যতা থাকা সত্বেও কোনো নড়চড় নেই। একই অধিদপ্তরের দুটি শাখা হলেও বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখা ৪৫ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার। এ বৈষম্যের অন্তর্নিহিত কারণ হলো–কলেজ শাখার প্রবেশ পদ যেখানে নবম গ্রেড (ক্যাডার); সেখানে বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার প্রবেশ পদ একটি অতিরিক্ত যোগ্যতা থাকা সত্বেও দশম গ্রেডের নন-ক্যাডার পদ।

‘অন্যান্য সব বৈষম্যের উৎপত্তি এখান থেকেই। আবার ১৯৯১ সাল হতে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ যোগ্যতা দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। এর সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদেরকে পদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পেশাগত ডিগ্রি বিএড বা বিপিএড অর্জন করতে হয়, যা বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কলেজ শাখার সাধারণ কলেজের প্রভাষক পদের নিয়োগ যোগ্যতা দ্বিতীয় শ্রেনির স্নাতকোত্তর হতে একটি বেশি এবং টিটি কলেজের প্রভাষক পদের নিয়োগ যোগ্যতার (স্নাতকোত্তর-২য় শ্রেণি, বিএড) সমান। একটি কম যোগ্যতার কলেজ প্রভাষক পদ এবং সমান যোগ্যতার টিটি কলেজের প্রভাষক পদ দুটিকেই নবম গ্রেড ও ক্যাডার মর্যাদা দেওয়া হলেও একই ক্যাডারের বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার সহকারী শিক্ষক পদকে দেওয়া হয়েছে দশম গ্রেড ও নন-ক্যাডার মর্যাদা, যা শুধু চরম বৈষম্যমূলকই নয়; বিমাতাসুলভও বটে।’

৯ম গ্রেডভিত্তিক পদসোপানের দাবি সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের

৯ম গ্রেডভিত্তিক পদসোপানের দাবি সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের

সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক শিক্ষকরা বলেন, ‘এ অবস্থায় বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার শিক্ষকতা পেশার এন্ট্রিপদ সহকারী শিক্ষক পদটিকে নবম গ্রেড (ক্যাডার) ধরে একটি চার স্তরের অ্যাকাডেমিক পদসোপান প্রস্তুত করা সময়ের প্রয়োজনে অনিবার্য হয়ে পড়েছে।’

তারা আরও বলেন, ১৯৯১ সালের পরে নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষক রয়েছেন, যারা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা করে কোনো পদোন্নতি পাননি। সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে সহকারী শিক্ষক হিসেবেই অবসরে গেছেন। উনাদের মর্মবেদনা, হতাশা ও গ্লানি ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বুঝবেন না। এ পদোন্নতি না হওয়ার কারণ হলো, প্রশাসনিক পদগুলোর সংখ্যা সীমিত। অথচ এন্ট্রিপদ নবম গ্রেডভিত্তিক চার স্তরীয় পদসোপান হলে তারাও চতুর্থ গ্রেড থেকে অবসরে যেতেন। এসব কিছুর মূল কারণ একটি সময়োপযোগী পদসোপান না থাকা।’

৩৬তম বিসিএসের নন-ক্যাডার শিক্ষক সুমন মিয়া বলেন, আমরা ২০১৯ সালে যোগদান করার পর থেকে সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা দেখেছি। কারণ তাদের অনেকেই ২০ বছরের অধিক সময় ধরে একই পদে চাকরি করছেন। তাদের কোনো ধরনের পদন্নোতি হয়নি। এই ধারা অব্যাহত থাকলে শিক্ষক পেশা থেকে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।

৩৫তম বিসিএস নন-ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত বরগুনা জেলা স্কুলের শিক্ষক রাশিদুজ্জামান বলেন, সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সমস্যা কি অনেকে জানেন না। আমরা আর বৈষম্যের শিকার হতে চাই না। আমরা নিজেদের ন্যায্য অধিকার চাই।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফুলপুর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এ কে এম আজাদ। তিনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এন্ট্রিপদ নবম গ্রেড ধরে চারস্তরীয় অ্যাকাডেমিক পদসোপান বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি।

এ কে এম আজাদ বলেন, গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আমাদের সহকর্মীদের ওপর হামলা হয়। এ হামলার পর বিচারের আশ্বাস দিলেও সেটি পূরণ করা হয়নি। তাই সারাদেশে এদিন শিক্ষকরা কালোব্যাজ ধারণ করবো। এছাড়া ১৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পদসোপান নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে দাবির ব্যাপারে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ। সেটি সফল না হলে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দেবো আমরা।

বিশেষ অতিথি ছিলেন মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মঈন উদ্দিন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ৪১তম বিসিএস ননক্যাডার সভাপতি আল হাশেম, ২২তম ব্যাচের পক্ষে রাজিব আহমেদ প্রমুক।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ২২তম বিসিএসের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মুবীন। সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া ও বৈষম্য তুলে ধরতে স্লাইড প্রদর্শন করেন ৩৫তম বিসিএস নন-ক্যাডার ব্যাচের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান।

Lading . . .