প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুর রশিদ জিতু। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নেমে তিন হাজার তিনশ ৩৪ ভোট পেয়ে ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
জিতুর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন শিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী আরিফ উল্লাহ।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ ভোটের ফল ঘোষণা শুরু হয়।
শুরুতে ২১টি হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এরপর সম্পাদকীয় পদের ফল ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, আব্দুর রশিদ জিতু জাবির ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ প্ল্যাটফরমের আহ্বায়ক। কোটা সংস্কার আন্দোলনের আগে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও আন্দোলনের সময় সর্বপ্রথম ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে আহত হন।
আরিফ সোহেল আটক হলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে ফার্স্ট ম্যান হিসেবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলন পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে প্ল্যাটফরমের সূচনা করেন এবং এই প্ল্যাটফরম থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে জাকসু প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই বছরই জাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
তখন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগের প্রভাব বেশি ছিল। প্রথম নির্বাচনের সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন গোলাম মোর্শেদ এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা শাহ বোরহানউদ্দিন রোকন।
১৯৭২, ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে পরপর তিন বছর জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে আর ধারাবাহিকতা থাকেনি। সব মিলিয়ে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ২০ বছরে নির্বাচন হয়েছে নয়বার। তারপর আর হয়নি। ৩৩ বছর পর গত বৃহস্পতিবার জাকসুর ভোট হয়।
এবারের নির্বাচনে ১১ হাজার ৭৫৯ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ভোট দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ১৭৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ জন এবং যুগ্ম সম্পাদক (এজিএস) পদে ১৬ জন প্রার্থী ছিলেন। নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৬। নির্বাচনে অংশ নিয়েছে মোট আটটি পূর্ণ ও আংশিক প্যানেল।
ভোটগ্রহণ শুরুর পর কারচুপির অভিযোগ তুলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলসহ পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। বর্জনকারীদের মধ্যে রয়েছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের সম্প্রীতির ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’, এবং স্বতন্ত্রদের ‘অঙ্গীকার পরিষদ’।
এ ছাড়া ছাত্র ফ্রন্টের একটি বিভাজিত অংশ এবং কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও ভোটগ্রহণ বর্জনের ঘোষণা দেয়।
এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ১১ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১১৫ জন এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ জন। ভোটগ্রহণের জন্য ২১টি কেন্দ্রে ২২৪টি বুথ স্থাপন করা হয়।
এএটি