প্রকাশ: ১৫ জুলাই, ২০২৫

শুধু সমীহ নয় , বাংলাদেশকে প্রচণ্ড সমীহ করছে আসরের তিন প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা , নেপাল ও ভুটান । কারণটা অনুমেয় । একে তো বয়সভিত্তিক সাফের ‘ ডিফেন্ডিং ’ চ্যাম্পিয়ন বাংলার কিশোরীরা , তার ওপর অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারসহ সদ্য নেপাল থেকে এএফসি এশিয়ান কাপের মূল মঞ্চের টিকিট নিয়ে ফেরা জাতীয় দলের অটজনই আছেন এখানে । অপর সাত জন হলেন মোসাম্ম ৎ সাগরিকা , মুনকি আক্তার , স্বপ্না রানী , স্বর্ণা রানী মণ্ডল , জয়নব বিবি রিতা , মিলি আক্তার ও উমহেলা মারমা ।
ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ - শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে আজ পর্দা উঠছে অনূর্ধ্ব - ২০ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের । বৃহস্পতিবার স্থানীয় এক হোটেলে ট্রফি নিয়ে হয়েছে ফটোসেশন । আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যয় ঝরেছে বয়সভিত্তিক চার দলের অধিনায়ক ও কোচের কণ্ঠে । ২০১৮ সালে প্রথম অনূর্ধ্ব - ১৮ বয়সভিত্তিক পর্যায়ে হয়েছিল নারী সাফ । সেবার বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন । এরপর কখনো অনূর্ধ্ব - ১৯ , কখনো অনূর্ধ্ব - ২০ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে ভারত দুবার চ্যাম্পিয়ন আর একবার রানার্সআপ তারা ।
তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশে আসেনি ভারত । এবার নিজেদের মাঠে আবারও সেই মুকুট ধরে রাখার অভিযান । টুর্নমেন্ট পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ভুটানের কোচ থানকা মায়া ঘালি শুরুতেই বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান এশিয়া কাপে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেওয়ায় । লঙ্কান কোচ শ্রীনাথা কুমারা সরাসরি বাংলাদেশকে এই টুর্নামেন্টের ফেভারিট ও শিরোপার দাবিদার হিসেবে আখ্যায়িত করেন । সফরকারী তিন দলের মধ্যে নেপালই শুধু শিরোপার আশা ব্যক্ত করলেও বাংলাদেশের প্রতি সমীহ প্রকাশ করেছেন কোচ ইয়াম প্রসাদ গুরুং ।
নেপাল এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দুর্দান্ত লড়াই করেছে । টাইব্রেকারে তারা হেরে যাওয়ায় এশিয়ান কাপে খেলতে পারছে না । নেপাল সিনিয়র দলে খেলা কাউকে অনূর্ধ্ব - ২০ স্কোয়াডে রাখেনি । নেপালের কোচ প্রসাদ গুরুং বলেন ,‘ আমাদের এই দলে সিনিয়র দলের কেউ নেই । এখান থেকে খেলে খেলোয়াড়রা প্রস্তুত হয়ে জাতীয় দলে যাবে । ’ বাংলাদেশ ‘ ডিফেন্ডিং ’ চ্যাম্পিয়ন । ২০২৩ সালে সাফ অনূর্ধ্ব - ২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ । শামসুন্নাহার জুনিয়রদের দারুণ পারফরম্যান্সের সৌজন্যে নেপালকে ৩ - ০ গোলে হারিয়ে শিরোপা মুকুট পরে তারা । সব মিলিয়ে বাংলাদেশ পরিষ্কার ফেভারিট ।
শ্রীলঙ্কান কোচ শ্রীনাথা বলেন ,‘ সত্যিকার অর্থে আমাদের বাংলাদেশের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক খেলার সামর্থ্য নেই । আমাদের দলের অনেক খেলোয়াড় অ - ১৮ বয়সী । অভিজ্ঞতার জন্যই আমাদের এই টুর্নামেন্টে আসা । ’ লঙ্কান পুরুষ ফুটবল দলে প্রবাসী ফুটবলার রয়েছেন অনেকে । নারী ফুটবল দলে তেমন কেউ নেই অবশ্য । ভুটানে নারী ফুটবল লিগ চলছে । অনূর্ধ্ব - ২০ দলে থাকা প্রত্যেকে সেখানে খেলছেন । বাংলাদেশের দশ জন সিনিয়র ফুটবলার ভুটান লিগে খেলছেন । দলটির অধিনায়ক শেদু তেশরিং বলেন ,‘ বাংলাদেশের মারিয়া মান্ডার সঙ্গে আমার খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে । সে খুব ভালো গতিশীল খেলোয়াড় । ’
শ্রীলঙ্কার মতো ভুটানও মূলত অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এসেছে । এক সময় দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে ভারত ও নেপাল শ্রেষ্ঠত্বের জন্য লড়ত । এই টুর্নামেন্টে ভারত না থাকায় বাংলাদেশ - নেপাল লড়াই হবে । নেপাল মাস দেড়েকের প্রস্তুতি নিলেও শিরোপায় নজর কোচ প্রসাদ গুরুংয়ের ,‘ আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই । বাংলাদেশ অবশ্যই কঠিন প্রতিপক্ষ , এরপরও আমরা আশাবাদী । এবার ঘাসের মাঠে খেলা হচ্ছে , বিগত সময়ে বাংলাদেশে টার্ফে ( কমলাপুর স্টেডিয়ামে ) হয়েছিল । আমরা লড়াই করতে প্রস্তুত । ’
আগেরবার রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে প্রথম পর্বে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দলকে নিয়ে হয়েছিল ফাইনাল ম্যাচ । তবে এবার নতুন নিয়ম ডাবল রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতি । ফলে নেই কোনো ফাইনাল । প্রত্যেক দল নিজেদের মধ্যে দুবার করে মুখোমুখি হবে । ৬টি করে ম্যাচ খেলবে প্রতিটি দল । যে দল সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জন করবে তারাই হবে চ্যাম্পিয়ন । পুরো টুর্নামেন্ট বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় । গতবার ভারত থাকলেও এবার পারিপার্শ্বিক রাজনৈতিক ইস্যুতে বাংলাদেশে দল পাঠায়নি তারা । সুযোগ পেয়েছে শ্রীলঙ্কা । ১৩ জুলাই নেপাল , ১৫ ও ১৭ জুলাই ভুটান , ১৯ জুলাই শ্রীলঙ্কা ও ২১ জুলাই নেপালের সঙ্গে ফিরতে দেখা হবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব - ২০ নারী দলের । উদ্বোধনী ম্যাচ ও ১৫ জুলাই ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচটি শুরু হবে বেলা ৩টা থেকে । বাকি চারটি ম্যাচ শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায় ।
আরও পড়ুন