তালায় খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগে বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার
প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সাতক্ষীরার তালায় চুক্তি ভঙ্গ করে অন্যের কাছে জমি বিক্রির অভিযোগে ভবেন্দ্র দাস নামের এক ব্যক্তিকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানোর ঘটনার দুই দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। গত রোববার বিকেলে ভুক্তভোগী ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলাটি করার পর পুলিশ একমাত্র আসামি বিএনপি নেতা আবদুল আহাদ গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে। চুক্তি ভঙ্গ করে অন্যের কাছে জমি বিক্রির অভিযোগে গত শুক্রবার ভবেন্দ্র দাসকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর ও নির্যাতন করা হয়।
গ্রেপ্তার আবদুল আহাদ তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ভবেন্দ্র দাসকে খুঁটিতে বেঁধে মারধরের বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে গত শনিবার উপজেলা বিএনপির পরামর্শে খেশরা ইউনিয়ন বিএনপি এক চিঠিতে আবদুল আহাদকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ভবেন্দ্র দাস সাড়ে ৯ শতাংশ জমি বিক্রির জন্য প্রায় তিন মাস আগে একই উপজেলার বালিয়া গ্রামের আবদুল আহাদ গাজীর সঙ্গে ৬৮ হাজার টাকায় চুক্তি করেন। জমির মূল্য বাবদ কয়েকবার আবদুল আহাদ গাজী ২৫ হাজার টাকা ভবেন্দ্র দাসকে পরিশোধ করেন। নির্ধারিত সময়ে পুরো টাকা না দেওয়ায় তিনি গত ৭ আগস্ট ওই সাড়ে ৯ শতাংশ জমি দ্বিগুণ মূল্যে বালিয়া গ্রামের হারুন মণ্ডলের কাছে বিক্রি করেন। বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার জানাজানি হলে শুক্রবার সকালে আবদুল আহাদ ভবেন্দ্রকে ডেকে পাঠান। এদিন সকাল সাতটার দিকে ভবেন্দ্র আবদুল আহাদের বাড়ি গেলে অন্যের কাছে জমি বিক্রি করায় তাঁকে মারধর করা হয়। পরে আবার তাঁকে পিছমোড়া করে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়। বেলা ১১টা পর্যন্ত ভবেন্দ্রকে বেঁধে রাখা হয়। একপর্যায়ে ভাতিজা স্বপন দাস এসে তাঁর দেনা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে নেন। ১৭ হাজার টাকা দেনা পরিশোধও করা হয়। বাকি আট হাজার টাকা পরিশোধ করার জন্য ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় নেওয়া হয়।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইনউদ্দীন জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। রোববার বিকেলে ভবেন্দ্র দাস বাদী হয়ে উপজেলার বালিয়া গ্রামের আবদুল আহাদ গাজীকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। মামলা করার পরই আবদুল আহাদকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ভবেন্দ্র দাসকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল আহাদ গাজী প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘ভবেন্দ্র আমার সঙ্গে চুক্তি করেও জমি লিখে দিতে টালবাহানা করছিলেন। পরে গোপনে অন্যের কাছে বিক্রি করে দেন। খবর পেয়ে তাঁকে ডাকা হয়। তবে ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী তাঁকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন। এ ঘটনায় তিনিও ভুল করেছেন, আমিও ভুল করেছি। আমার অন্যায় হয়েছে।’