আলোচিত এসপি শফিউল্লাহর ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

খুলনার সমালোচিত সাবেক এসপি এসএম শফিউল্লাহর ভাই শামীম শেখের রহস্যজনক মৃত্যু এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে মৃত্যুর পর ভোরে এলাকার কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে নিয়ে যাওয়ায় তার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে এলাকাবাসীর মনে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর দৌলতপুর পাবলা তিন দোকানের মোড় এলাকার বাসায় রহস্যজনক এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
শামীম শেখের স্বাভাবিক মৃত্যু, নাকি আত্মহত্যা— তা ঘিরে ওই এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে শামীম নিজ বসতঘরে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। অপর আরেকটি সূত্র বলছে, তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
দৌলতপুর থানা পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, তিন দোকানের মোড় এলাকায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর বিষয়ে জানতে পেরে বাড়িতে গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ ছিল এবং বাড়িতে কোনো আত্মীয়স্বজনও ছিল না। তার মৃত্যুর সঠিক কারণের বিষয়ে এলাকাবাসী সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, ওই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিতে গিয়ে জানতে পারি— তাকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সে মোতাবেক হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি— হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। পরে নিহতের পরিবার লাশ নিয়ে গোপালগঞ্জে নিজ বাড়িতে চলে যায়।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর আতাহার আলী কালবেলাকে জানান, তার মৃত্যুর সঠিক কোনো কারণ জানা যায়নি। তার লাশ নিয়ে পরিবার গোপালগঞ্জ চলে যায়। এ বিষয়ে ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগও করা হয়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর মো. তাজুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, শামীম শেখের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। এলাকায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলোচনা হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে জানানো হয় তাকে মৃত অবস্থায় তাকে সেখানে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা তার মৃত্যুকে নরমাল বলেছেন। তার বাসায় কোনো মানুষ নেই। আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে এ ব্যাপারে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, খুলনার পুলিশ সুপার থাকাকালে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীর বাড়ি গিয়ে ব্যাপক নির্যাতন, মামলা ও বিএনপির সমাবেশে নিজেই হামলা করে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল এসপি শফিউল্লাহ। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজেই রাজনৈতিক সমাবেশে হামলা ও বিরোধী নেতাকর্মীকে দমনপীড়ন চালাতেন। গোপালগঞ্জে বাড়ি হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদেরও পাত্তা দিতেন না তিনি। ২০১৮ সালের নৈশ ভোটের সময় খুলনায় পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেন শফিউল্লাহ।