Advertisement

মেঘনার ডেঞ্জার জোনে চলছে নিষিদ্ধ নৌযান

যুগান্তর

প্রকাশ: ৩০ জুন, ২০২৫

বোরহানউদ্দিনের মেঘনার ডেঞ্জার জোনে মালবাহী ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার। ছবি: যুগান্তর
বোরহানউদ্দিনের মেঘনার ডেঞ্জার জোনে মালবাহী ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার। ছবি: যুগান্তর

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার আন্তঃরুটে চলছে ছোট ছোট লঞ্চ-ট্রলার। খোদ ভোলার বোরহানউদ্দিন হাকিমুদ্দিন সদরঘাট থেকেই মেঘনার ডেঞ্জার জোনে চলছে নিষিদ্ধ নৌযানগুলো।

প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই ডেঞ্জার জোনে এসব অবৈধ নৌযান চলছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। এসব নৌযান চলাচলের কারণে একদিকে যেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে, অন্যদিকে যাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অবৈধভাবে চলাচলকারী এসব নৌযানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রশাসনের কোনো নিয়মনীতি মানছেন না নৌযান মালিকরা।

সরকারি সি-ট্রাক সার্ভিস ছাড়া ডেঞ্জার জোনে এসব ছোট ছোট ফিটনেসবিহীন লঞ্চ-ট্রলার চলাচল করায় যে কোনো সময় দুর্ঘটনা আর প্রাণহানির আশঙ্কা করা হলেও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে।

অনেকের মতে, সরকার বিকল্প যান না দেওয়ায় যাত্রীরা অনেকটা বাধ্য হয়েই এসব নৌযানে যাতায়াত করছেন।

রোববার সরেজমিন উপজেলার হাকিমুদ্দিন লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক ছোট ট্রলার অধিকসংখ্যক যাত্রী নিয়ে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন চরের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।

ঘাটে নোঙর করা আছে তজুমদ্দিন উপজেলার চর জহিরউদ্দিন, নাগর পাটোয়ারীর চর, চর মোজাম্মেলের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার জন্য ছোট ছোট কাঠের তৈরি ট্রলার। এসব ট্রলারে একদিকে মালামাল উঠানো হচ্ছে, অন্যদিকে যাত্রীরা উঠছেন। অতিরিক্ত মালামাল আর ধারণক্ষমতার ৪-৫ গুণ যাত্রী; কিন্তু ততক্ষণে নদী উত্তাল হয়ে উঠছিল। আর এ উত্তাল মেঘনায় ডেঞ্জার জোনের মধ্যেই ছেড়ে যাচ্ছে ট্রলারগুলো।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ অঞ্চলের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর অন্তত ১০-১২টি রুটে একই চিত্র।

অনেকের অভিযোগ, সরকার ঘাটগুলোতে ইজারা বসিয়ে রাজস্ব আয় করলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী এসব অবৈধ নৌযানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, সরকার নৌদুর্ঘটনা রোধে প্রতি বছর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৮ মাস সময়কে মেঘনার-তেঁতুলিয়ার ডেঞ্জার জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ সময় নদী ও সাগর উত্তাল থাকায় সি-ট্রাক সার্ভিস ছাড়া অন্য ছোট ছোট নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

৪ বছর বয়সের নাতিকে নিয়ে বোরহানউদ্দিনে ডাক্তার দেখাতে আসা চর জহিরউদ্দিনের যাত্রী সালমা বেগম বলেন, উত্তাল মেঘনায় আমাদের একমাত্র চলাচলের বাহন হচ্ছে এসব ছোট নৌকা।

বিকল্প নৌযান না থাকায় আমরা অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছি। একটি সি-ট্রাক সার্ভিস তাদের দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও কোনো সরকারই তাদের দাবি আমলে নেয়নি বলে জানান যাত্রীরা।

ভোলা নৌবন্দর কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন বলেন, অবৈধভাবে চলাচলকারী এসব নৌ-যানগুলোকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও কেউ নিয়ম না মানলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান উজ্জামান বলেন, ডেঞ্জার জোনে নৌযান চালানো নিষেধ। কেউ চালালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

Lading . . .