বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে নদীতে ডুবে ছেলেরও মৃত্যু
প্রকাশ: ২৪ জুলাই, ২০২৫

বাড়ির উঠানে কাঠের চৌকি। তার ওপরে লাল চাদরে ঢাকা সরকারি চাকরিজীবী জাহিদুল ইসলাম ( ৪৫) ও তাঁর ছেলে জিহাদের (৯) মরদেহ। সেখানে আহাজারি করছেন জাহিদুলের স্ত্রী শিলু খাতুন। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন স্বজনেরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের জংগলী গ্রামের স্কুলপাড়ায় এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। এর আগে বিকেল চারটার দিকে কালিগঙ্গা নদী থেকে জাহিদুল ও জিহাদের মরদেহ উদ্ধার করেন এলাকাবাসী।
নিহত জাহিদুল ওই এলাকার রফি মণ্ডলের ছেলে। তিনি কুষ্টিয়া পল্লী ও দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন কার্যালয়ের কর্মচারী। জাহিদুলের ছেলে জিহাদ জংগলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জাহিদুল চাকরির পাশাপাশি চাষাবাদ করেন। মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে ছেলে জিহাদকে নিয়ে বাড়ির পাশের কালিগঙ্গা নদীতে পাট জাগ দিতে গিয়েছিলেন জাহিদুল। পাট জাগ দেওয়া শেষে বেলা আড়াইটার দিকে ছেলেকে কাঁধে নিয়ে নদীর মাঝ থেকে তীরে ফিরছিলেন। হঠাৎ জাহিদুল পানিতে ডুবে যান। এরপর ছেলে জিহাদ তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেও ডুবে যায়।
নদীর তীরে থাকা বৃদ্ধ ফয়জুল হক (৬৫) বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেন। পরে এলাকাবাসী প্রায় দেড় ঘণ্টা নদীতে খোঁজাখুঁজি করে প্রথমে ছেলে জিহাদ এবং পরে একই স্থান থেকে তাঁর বাবা জাহিদুলের মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহত জাহিদুল ইসলামের বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়িতে খাচ্ছিলাম। খবর পেয়ে দ্রুত নদীতে গিয়ে দেখি শত শত মানুষ। সবাই উদ্ধারের চেষ্টা করছে। পরে চারটার দিকে বাপ–বেটার মরদেহ পাওয়া যায়। পাট জাগ দেওয়ার জন্য জাহিদুল ছুটিতে ছিল আজ। বাপ–বেটা দুজনেই সাঁতার জানত।’
কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্দ্র প্রসাদ বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা পৌঁছানোর আগেই গ্রামবাসী লাশ উদ্ধার করেছে।’