টিসিবি ডিলারের বিরুদ্ধে ‘পচা চাল’ বিক্রির অভিযোগ
প্রকাশ: ৩০ জুন, ২০২৫

ঝালকাঠির নলছিটির কুলকাঠি ইউনিয়নে টিসিবির কার্ডধারীদের কাছে ভেজা ও পচা চাল বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে ডিলারের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, প্রতি কার্ডে পাঁচ কেজি করে ভেজা চাল কিনে বাড়িতে নিয়ে শুকানোর পর ওজনে চার কেজি করে চাল পেয়েছেন তারা।
জানা গেছে, কুলকাঠি ইউনিয়নে বর্তমানে এক হাজার ৫৯৪ জন টিসিবির কার্ডধারী রয়েছেন। স্বত্বাধিকারী জিএম মোর্শেদের সরদার এন্টারপ্রাইজ নামক লাইসেন্সে মাসুদ জোমাদ্দার ও আব্দুল আলিম নামের দুই ব্যক্তি ওই ইউনিয়নে টিসিবি পণ্য বিক্রির সাব-ডিলার হিসেবে কাজ করেন।
গত ২৮ জুন বিক্রির জন্য দুটি ট্রলি ভর্তি টিসিবির পণ্য কুলকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নেওয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে আখরপাড়া নামক স্থানে ব্রিজ পার হওয়ার সময় একটি ট্রলি উল্টে পার্শ্ববর্তী খালে পড়ে যায়। ওই ট্রলিতে ১৬৫ বস্তা চাল ছিল। পরে খাল থেকে বস্তাভর্তি ভেজা চাল তুলে ইউপি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
খালে পড়া সেই ভেজা চাল কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করতে চান সাব-ডিলাররা। তবে, সেই ভেজা চাল নিতে অনীহা প্রকাশ করে কার্ডধারীরা। পরে সেই চাল কুলকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে শুকানোর চেষ্টা করা হয়। আর রোববার ও সোমবার কার্ডধারীদের কাছে ওই ভেজা ও দুর্গন্ধযুক্ত চালই বিক্রি করা হয়।
টিসিবির চাল কেনা ওই ইউনিয়নের পাওতা গ্রামের আবুল কালাম বলেন, ‘দুদিন আগে পানিতে পড়ে ভেজা, পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল আমাদের কাছে বিক্রি করেছেন ডিলার, যা খাওয়ার মত না। হাঁস-মুরগিকে এ চাল খাওয়াবো। এখনও সে চাল ঘরেই আছে।’
কুলকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আরিফ মল্লিক বলেন, ‘আমি ডিলারদেরকে ওই ভেজা চাল বিক্রি করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তারা সে কথা শোনেননি। দুদিন ইউনিয়ন পরিষদে রেখে ওই চালই টিসিবির কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করেছেন সাব-ডিলাররা।’
টিসিবির সাব-ডিলার আব্দুল আলিম বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী ওএমএস ডিলারের মাধ্যমে বিক্রয় কেন্দ্রে আমাদের কাছে চাল পৌঁছানোর কথা। কিন্তু তা করা হয়নি। আমরা গোডাউন থেকে চাল নেওয়ার পথে শনিবার ১৬৫ বস্তা চালসহ ট্রলি খালে পড়ে যায়। এটি একটি দুর্ঘটনা। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ইউএনও ও খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে জানায়। তারা বলেন, ভেজা চাল গোডাউনে ফেরত পাঠালেতো নষ্ট হয়ে যাবে। তাদের সম্মতিতেই ওই ভেজা চাল কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।’
নলছিটির ইউএনও মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিস্তারিত জেনে বলতে পারব। তবে টিসিবির চালসহ একটি গাড়ি খালে পড়েছে শুনেছি। চাল নাকি ভালো ছিল। চাল ভালো থাকলে তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।’