Advertisement

ব্যাংকে ভর করে ১৩ মাস পর সর্বোচ্চ লেনদেন ঢাকার শেয়ারবাজারে

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

শেয়ারবাজারপ্রতীকী ছবি
শেয়ারবাজারপ্রতীকী ছবি

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় ১৩ মাসের ব্যবধানে আবার সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। আজ বুধবার দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। প্রায় ১৩ মাস পর এটিই ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে গত ১১ আগস্ট ডিএসইতে সর্বোচ্চ ২ হাজার ১০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।

লেনদেনের পাশাপাশি সূচকও প্রায় এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে। বুধবার দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচকটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৩২ পয়েন্টে। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বরের পর এটিই ডিএসইএক্সের সর্বোচ্চ অবস্থান। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ডিএসইএক্স সূচকটি সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৬৫৮ পয়েন্টের অবস্থানে ছিল।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শেয়ারবাজারে এক-দেড় মাসে কিছুটা গতি সঞ্চার হয়েছে। এ সময় ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা যায়। তাতে লেনদেনে ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলো শীর্ষে উঠে আসে। এর সঙ্গে কিছু দুর্বল কোম্পানির শেয়ারেরও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটে। ফলে শেয়ারবাজারে লেনদেনেও ভালো গতি দেখা যাচ্ছে।

ঢাকার বাজারে গতকাল ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্যাংক ও ওষুধ খাত। আজ এই দুই খাতের সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৮৬ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ২৮ শতাংশ বা এক-চতুর্থাংশের বেশি। এর মধ্যে ব্যাংক খাতের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২১৯ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ১৬ শতাংশ। ব্যাংক খাতের লেনদেনের ক্ষেত্রে নেতৃত্বে ছিল সিটি ব্যাংক। বুধবার ঢাকার বাজারে সিটি ব্যাংক ছিল লেনদেনের শীর্ষে। এদিন এককভাবে ব্যাংকটির প্রায় ৭০ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা ঢাকার বাজারের এদিনের মোট লেনদেনের ৫ শতাংশ। ব্যাংক খাতের লেনদেনে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল ইস্টার্ন ব্যাংক। আজ এককভাবে ব্যাংকটির ৩১ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় সোয়া ২ শতাংশ।

ব্যাংক খাতের পর লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওষুধ খাত। এই খাতের সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৬৭ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ শতাংশ। ওষুধ খাতের লেনদেনের ক্ষেত্রে শীর্ষে ছিল ওরিয়ন ইনফিউশন। এদিন কোম্পানিটির প্রায় ৫১ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ৪ শতাংশ।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভালো কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি বাজারের জন্য ইতিবাচক। আর লেনদেন বৃদ্ধি পাওয়ার মানে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। দুটিই বাজারই বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক।

জানতে চাইলে শেয়ারবাজারের সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি ইনভেস্টইট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরান হাসান প্রথম আলোকে বলেন, গত মাস শেষে শেয়ারবাজারের দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল হাজার কোটি টাকার বেশি। বেশ কয়েক বছর পর বাজারে লেনদেনের এই গতি দেখা যাচ্ছে। শেয়ারবাজারে এই গতি ফেরার পেছনে প্রধান ভূমিকা সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদ হারের নিম্নগতি। ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার যত কমছে, শেয়ারবাজারে লেনদেনেও তত গতি দেখা যাচ্ছে। অনেক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীও এখন সক্রিয় হয়েছে। শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক যে পরিস্থিতি, সেটি মধ্য মেয়াদে টেকসই মনে হচ্ছে। তবে মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতার থেকে বাজারে মাঝেমধ্যে নিম্নগতি দেখা দিতে পারে। তবে সেটি হবে সাময়িক। ভালো শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ যত বেশি থাকবে, বাজারও তত বেশি টেকসই হবে।

Lading . . .