Advertisement

সাবেক ডিসি সুলতানাকে কারাগারে পাঠানো ‘কুড়িগ্রামের টক অব দ্য টাউন’

যুগান্তর

প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

সাংবাদিক নির্যাতন মামলায় কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ মোছাম্মৎ ইসমত আরা। আলোচিত এ ঘটনা এখন কুড়িগ্রামে টক অব দ্য টাউন।

হাইকোর্টের আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে জেলা দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত উভয়পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন গত ৫ বছর আগে কুড়িগ্রামে কর্মরত থাকাকালীন অবস্থায় বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাড়ি থেকে তুলে অমানবিক নির্যাতন করেন এবং তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা দায়ের করেন। পরে নির্যাতিত সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান বাদী হয়ে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনকে প্রধান আসামি করে ৪ জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ কুড়িগ্রাম সদর থানায় অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন।

দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি ৪ জন আসামির নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে আসামিদের নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন। পরে সেই মামলার প্রধান আসামি সুলতানা পারভীন হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

998119 হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক জামিনের মেয়াদ পূর্তির আগে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত নথিপ্রাপ্তি সাপেক্ষে মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করেন। মঙ্গলবার কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতে সকালে জামিনের জন্য আত্মসমর্পণ করলে বিচারক অধিকতর শুনানির জন্য দুপুর আড়াইটায় শুনানির সময় নির্ধারণ করেন। বাদী এবং আসামিপক্ষে দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে জেলা প্রশাসকের মোবাইল কোর্ট। ডিসি অফিসে এনে নির্মম নির্যাতন করেন জেলা প্রশাসনের তৎকালীন আরডিসি নাজিম উদ্দিন, এনডিসি রাহাতুল ইসলাম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা।

পরে রাত ২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে মাদক মামলায় এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে রাতেই জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরে সাংবাদিকের আন্দোলনের মুখে একদিন পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে জামিনে মুক্তি দেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু বলেন, চার্জশিটের প্রধান আসামি সুলতানা পারভীনকে কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে আমরা প্রাথমিক ও সুষ্ঠু রায় পেয়েছি।

মামলার বাদী সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগান জানান, এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট। বিচার বিভাগকে ধন্যবাদ জানাই ।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফখরুল ইসলাম বলেন, সাবেক জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তারপরও আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক নির্ধারিত সময়ে জেলা আদায় জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আদালত সাবেক ডিসির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ প্রদান করেন। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।

Lading . . .