Advertisement

পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার দোয়া ও আমল

যুগান্তর

প্রকাশ: ১৬ জুলাই, ২০২৫

24obnd

প্রশ্ন: পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার কোন আমল থাকলে অনুগ্রহ করে জানাবেন।

উত্তর: সফলতার জন্য আল্লাহতায়ালার রহমত অপরিহার্য বিষয়। আর কোনো কাজে আল্লাহতায়ালার রহমত তখনি আসে যখন বান্দার পক্ষ থেকে চেষ্টা ও দোয়া থাকে।

এ জন্য উদ্দিষ্ট সুফল লাভের জন্য চেষ্টা যেমন প্রয়োজন, তেমনি আল্লাহ তায়ালার রহমত ও বরকতের জন্য সকাতরে তার সাহায্য প্রার্থনা করা আবশ্যক। সুতরাং পরীক্ষায় সফল হতে হলে পরীক্ষার্থীদের প্রতি অভিজ্ঞমহল ও বিশিষ্ট আলেমদের পরামর্শ হল–

প্রথমত, অলসতা ত্যাগ করে নিজের সাধ্যানুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কারণ, যারা ব্যাপক পরিশ্রমী তাদের সাফল্য ব্যাপক হয় আর যারা অপেক্ষাকৃত অলস তারা সফলতা থেকে তুলনামূলকভাবে বঞ্চিত হয়।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর সকলের জন্যই তাদের কর্ম অনুসারে মর্যাদা রয়েছে। আর আল্লাহ যেন তাদেরকে তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিতে পারেন। আর তাদের প্রতি কোন জুলুম করা হবে না।’ (সুরা আল-আহকাফ ১৯)

দ্বিতীয়ত, আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে, তিনিই সকল কাজে সফলতা দান করেন, তাই তিনি অবশ্যই আমাকে সফলতা দিবেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট।’ (সুরা ত্বলাক : ৩)

তৃতীয়ত, মহান আল্লাহর কাছে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করতে হবে। প্রয়োজনে ‘সালাতুল হাজত’ পড়ে দোয়া করা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, বিশেষ কোন হালাল চাহিদা পূরনের জন্য আল্লাহ’র উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করাকে ‘সালাতুল হাজত’ বলা হয়। (ইবনু মাজাহ ১৩৮৫)

এই নামাজের আলাদা কোনো নিয়ম নেই। স্বাভাবিক নামাজের মতোই উত্তমভাবে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে। নামাজ শেষে নিজের মনের কথা ব্যক্ত করে আল্লাহর নিকট দোয়া করবে।

চতুর্থত, পরীক্ষার্থীরা সময়ভিত্তিক নিম্নোক্ত দোয়াগুলো পড়লে পরীক্ষায় সফল হয় বলে অভিজ্ঞ আলেমরা অভিমত প্রকাশ করেছেন।

পড়ার পূর্বে : اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْألُكَ فَهْمَ الأَنبِياءِ وَحِفظَ المُرسَلينَ و المَلائكَةِ المُقَرَّبِينَ ‬‎

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ফাহমাল আম্বিয়া, ওয়া হিফযাল মুরসালিন ওয়াল মালাইকাতিল মুকাররবিন।

পরীক্ষার দিন: اللَّهُمَّ إِنِّي تَوَكَّلْتُ عَلَيْكَ وَسَلَّمْتُ أَمْرِي إلَيكَ لا مَلْجَأَ وَلا مَنْجَا مِنكَ إلَّا إلَيك

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি তাওয়াক্কালতু আলাইকা ওয়া সাল্লামতু আমরি ইলাকা লা মালজায়া ওলা মানজায়া মিনকা ইল্লা ইলাইকা।

পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময়: رَّبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَل لِّي مِن لَّدُنكَ سُلْطَانًا نَّصِيرًا

উচ্চারণ: রব্বি আদখিলনি মুদখলা সিদকি ওয়া আখরিজনি মুখরাজা সিদকিও ওয়াজয়াল্লি মিন লাদুনকা সুলতানান নাসিরা।

পরীক্ষা শুরুর পূর্বে: رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي يَفْقَهُوا قَوْلِي بِسم اللهِ الفَتَّاح

উচ্চারণ: ‘রব্বিশ রাহলী সদরী ওয়া ইসসিরলী আমরী, ওয়াহলুল ওক্বদাতাম মিল লিসানি ইয়াফক্বাহু কওলি বিসমিল্লাহিল ফাত্তাহ।

পরীক্ষার মাঝে: يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيثُ رَبِّ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

উচ্চারণ: ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়ুম আসতাগিসু রব্বি আন্নি মাসসানিয়াদ দুররু ওয়া আনতা আরহামুর রহীমিন। লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনায যালিমীন।

কোনকিছু ভুলে গেলে: اللَّهُمَّ رَبَّ الضَّالَّةِ ، هَادِيَ الضَّالَّةِ ، تَهْدِي مِنَ الضَّلَالَةِ ، رُدَّ عَلَيَّ ضَالَّتِي بِقُدْرَتِكَ وَسُلْطَانِكَ مِنْ عَطَائِكَ وَفَضْلِكَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রব্বাদ দালালাহ, হাদিয়াদ দালালাহ, তাহদি মিনাদ দালালাহ, রুদ্দা আলাইয়া দল্লাতি বিকুদরতিকা ওয়া সুলতানিকা মিন আতায়িকা ও ফাদলিকা

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কঠিন হলে : اللُّهُمَّ لاَ سَهْلَ إِلاَّ مَا جَعَلْتَ سَهْلاً ، وَأَنْتَ إِنْ شِئْتَ جَعَلْتَ الْحَزْنَ سَهْلاً

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লা-সাহলা ইল্লা মা জায়ালতাহু সাহলান, ওয়া আনতা তাজআলুল হুজনা সাহলান ইজা শিইতা সাহলা।’

পরীক্ষা শেষ করে : الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي هَدَانَا لِهَٰذَا وَمَا كُنَّا لِنَهْتَدِيَ لَوْلَا أَنْ هَدَانَا اللَّهُ

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহিল্লাযি হাদানা লিহাযা ওমা কুন্না লিনাহতাদিয়া লাওলা আন হাদানাল্লাহ

উল্লেখ্য যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তার সাহাবায়ে কেরাম (রা.), তাবেইন ও পরবর্তী মনীষীরা এ দোয়াগুলো বা এগুলোর একাংশ বিভিন্ন সময়ে পড়তেন। সুতরাং বাড়িতে বা যে কোনো স্থানে লেখাপড়ার শুরুতে কিংবা সাধারণ দোয়াতেও এ দোয়াগুলো পড়া যেতে পারে।

Lading . . .