Advertisement
  • হোম
  • ধর্ম
  • প্রতিশোধ নয়, ক্ষমাই নবিজির (সা.) শিক্ষা: মিজানুর র...

প্রতিশোধ নয়, ক্ষমাই নবিজির (সা.) শিক্ষা: মিজানুর রহমান আজহারী

জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রতিশোধ নয়, ক্ষমাই নবিজির (সা.) শিক্ষা: মিজানুর রহমান আজহারী
প্রতিশোধ নয়, ক্ষমাই নবিজির (সা.) শিক্ষা: মিজানুর রহমান আজহারী

সুপরিচিত ইসলামি চিন্তাবিদ ও ওয়ায়েজ ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, দ্বীন প্রচারে যত বাধা-বিঘ্নই আসুক, প্রতিশোধ নয়, বরং দয়া ও ক্ষমাই হলো আল্লাহর রাসুলের (সা.) প্রকৃত শিক্ষা।

গতকাল (১০ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আল্লাহর রাসুল হজরত মুহাম্মাদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জীবনের তায়েফ সফরের মর্মস্পর্শী ঘটনা তুলে ধরে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুকের ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন,

“অকথ্য নির্যাতন, সীমাহীন জুলুম, ভয়াবহ দমন-পীড়ন আর নির্লজ্জ ঠাট্টা-উপহাসে যখন পবিত্র ভূমি মক্কাতুল মুকাররমায় তাওহিদ ও রিসালাতের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে এসেছিল, দাওয়াহর নিভু নিভু প্রদীপের দিকে যখন ধেয়ে আসছিল একের পর এক ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস— তখন রাসুল (সা.) প্রিয় মাতৃভূমি ত্যাগ করার এক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন।

মরূ আরবের প্রতিটি ঘরে ঘরে তাওহিদের অমীয় বাণী পৌঁছে দেয়ার সুমহান উদ্দেশ্যে আকাশসম আগ্রহ ও উদ্দীপনা নিয়ে তিনি মক্কার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত তায়েফে গমন করলেন। দাওয়াহ-র কণ্টকাকীর্ণ পথে পেছনের সমস্ত তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে গিয়ে নব উদ্যমে সবকিছু আরম্ভ করার প্রয়াসে পুনর্বার সত্য ও সুন্দরের বাণী পৌঁছে দেওয়ায় নিমগ্ন হলেন।

কিন্তু তায়েফবাসীর প্রতিক্রিয়া ছিল নির্মম! তাদের আচরণ ছিল নৃশংস! উচ্ছৃঙ্খল ছেলেরা জটলা পাকিয়ে রাসুলকে (সা.) চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলল। কেউ নিন্দা করছিল, কেউ ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করছিল। সকল ধৃষ্টতার সীমা লঙ্ঘন করে কয়েকজন রাসুলকে (সা.) পাথর ছুঁড়ে রক্তাক্তও করল। তায়েফের ময়দানকে প্রিয় নবিজির (সা.) পবিত্র রক্তে রঞ্জিত করল। পাহাড়রক্ষী ফেরেশতা এসে বললেন, আপনি চাইলে আমি দুই পাশের পাহাড় চাপ দিয়ে এদের ধ্বংস করে দিতে পারি।

অমানবিক অত্যাচার, অকথ্য নির্যাতন ও বিদ্রূপের মুখে থেকেও রাসুল (সা.) ছিলেন অদম্য—পাহাড়ের মতো দৃঢ়, অবিচল এবং স্থিতপ্রজ্ঞ। বর্ষার অবিরাম বারিধারার ন্যায় তার হৃদয় থেকে উৎসারিত হতো মানুষের জন্য স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসা। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে এই হতভাগাদের জন্য তিনি দোয়া করলেন মহীয়ান সকাশে—হে আল্লাহ, আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন, কারণ তারা জানে না।

সুবহানাল্লাহ! উম্মাহর কাণ্ডারি বুঝি এমন-ই হন!

এটা হলো মহানবির (সা.) তায়েফ সফরের ক্ষুদ্র এক দৃশ্যপট—অপরিসীম ধৈর্য, অনুপম ত্যাগ-তীতিক্ষা আর পর্বতপ্রমাণ দৃঢ়তার এক বিরল দৃষ্টান্ত।

রাসুল (সা.) বলেছিলেন, হয়তো আল্লাহ তাদের বংশধর থেকে এমন কাউকে সৃষ্টি করে দেবেন, যারা এক আল্লাহর ইবাদত করবে। (সহিহ মুসলিম: ১৭৯৫)

কয়েক বছর যেতে না যেতে, সত্যি-ই সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত হয়েছিল।

সুতরাং, দ্বীন প্রচারের এ পথে যতো বাধা ও বিঘ্নই আসুক—প্রতিশোধ নয়, বরং দয়া ও ক্ষমাই হলো সিরাতের প্রকৃত শিক্ষা।”

Lading . . .