বিবাহিত নারী বাবার বাড়িতে গেলে কি নামাজ কসর করবেন?
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রশ্ন: কোনো বিবাহিত নারীর বাবার বাড়ি যদি স্বামীর বাড়ি থেকে সফর পরিমাণ দূরত্বে অবস্থিত হয়, তাহলে ওই নারী বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেলে কি মুসাফির গণ্য হবেন এবং নামাজ কসর করবেন?
উত্তর: কোনো নারী যদি বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে স্বামীর সঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করেন, মাঝে মাঝে কিছুদিনের জন্য বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান, তাহলে স্বামীর বাড়িই ওই বিবাহিত নারীর স্থায়ী ঠিকানা বা আবাস গণ্য হয়। তাই তার বাবার বাড়ি যদি স্বামীর বাড়ি থেকে সফর পরিমাণ (৭৮ কিলোমিটার প্রায়) দূরত্বে অবস্থিত হয়, তাহলে ওই নারী ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেলে সেখানে মুসাফির গণ্য হবেন এবং নামাজ কসর করবেন।
তবে কোনো নারী যদি বিয়ের পরও বাবার বাড়িতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন, তাহলে বাবার বাড়িই তার স্থায়ী ঠিকানা গণ্য হবে। মাঝে মাঝে ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য স্বামীর বাড়িতে বেড়াতে গেলে সেখানে তিনি কসর করবেন যদি স্বামীর বাড়ি বাবার বাড়ি থেকে সফর পরিমাণ (৭৮ কিলোমিটার প্রায়) দূরত্বে অবস্থিত হয়।
সফরের ক্লান্তি ও কষ্ট বিবেচনা করে ইসলাম মুসাফিরদের শরিয়ত পালনে কিছু ছাড় দিয়েছে। যেমন রমজানের ফরজ রোজা মুসাফিররা চাইলে ভেঙে পরে কাজা করে নিতে পারেন, জুমার নামাজ ও কুরবানি মুসাফিরদের ওপর ওয়াজিব নয়। এ ছাড়া প্রতিদিনের চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজগুলো অর্থাৎ জোহর, আসর ও ইশার নামাজ মুসাফিরদের জন্য আল্লাহ কসর বা সংক্ষীপ্ত করে দিয়েছেন। সফর অবস্থায় এ নামাজগুলো দুই রাকাত পড়তে হয়।
আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা বলেন, যখন তোমরা দেশে-বিদেশে সফর কর, তখন নামাজ সংক্ষেপ করাতে দোষ নেই। (সুরা নিসা: ১০১)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদের নবির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবানে মুকিম অবস্থায় চার রাকাত ও সফর অবস্থায় দুই রাকাত নামাজ ফরজ করেছেন। (সহিহ মুসলিম: ৬৮৭)
মাগরিব ও ফজরে কসর নেই। এ দুই ওয়াক্তের ফরজ নামাজ যথাক্রমে তিন রাকাত ও দুই রাকাতই আদায় করতে হবে। ফরজ ছাড়া অন্য নামাজগুলো কসর হয় না। তাই সেগুলো আদায় করলে পরিপূর্ণভাবেই আদায় করতে হবে। বেতর তিন রাকাতই আদায় করতে হবে। তবে সুন্নাতে মুআক্কাদা নামাজ অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজের সাথে প্রতিদিন যে বারো রাকাত সুন্নাত নামাজ আমরা আদায় করে থাকি, এগুলো সফর অবস্থায় আবশ্যক থাকে না। ক্লান্তি বা ব্যস্ততা থাকলে এই নামাজগুলো ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে। তবে সময় সুযোগ থাকলে পড়ে নেওয়াই উত্তম।