প্রকাশ: ৪ জুলাই, ২০২৫

কোরবানির গুরুত্ব নিয়ে পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা হালাল পশু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৪)
কোরবানির পশু নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইসলামী শরিয়তের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। সঠিক পশু নির্বাচন কোরবানির গ্রহণযোগ্যতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিচে কোরবানির জন্য উপযুক্ত পশু নির্বাচনের মূল দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হলো:
✅ কোরবানির জন্য বৈধ পশুর ধরন
ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী নিম্নলিখিত পশুগুলো কোরবানির জন্য বৈধ:
📏 পশুর বয়স সংক্রান্ত শর্তাবলী
কোরবানির পশুর নির্দিষ্ট বয়স পূর্ণ হওয়া আবশ্যক:
❌ যেসব পশু কোরবানির অযোগ্য
নিম্নলিখিত ত্রুটিযুক্ত পশু কোরবানির জন্য অযোগ্য:
🧾 অতিরিক্ত নির্দেশনা
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমার কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই কবুল হয় না, তবে আমার কাছে পৌঁছায় একমাত্র তাকওয়া।’ (সুরা হজ, আয়াত : ৩৭)
একদা জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরবানি কী? উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, কোরবানি হচ্ছে তোমাদের আদি পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনাদর্শ। সাহাবি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কোরবানির ফজিলত কী? রাসুল (সা.) বললেন, পশুর পশমের পরিবর্তে একেকটি করে নেকি দেওয়া হয়।’ (মিশকাত, হাদিস : ১২৯)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই কোরবানিদাতার কোরবানি আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং তার অতীতের সব গুনাহ মোচন করে দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮০)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোরবানির দিন আল্লাহর কাছে কোরবানি অপেক্ষা উত্তম কোনো আমল আর নেই।’ (মিশকাত, হাদিস : ১৯৩৭)
বিশিষ্ট সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) পবিত্র মদিনায় দশ বছর জীবনযাপন করেছেন, প্রত্যেক বছরই তিনি পশু কোরবানি করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১/১৮৯)
কোরবানির জন্য সুস্থ-সবল পশু নির্ধারণ জরুরি। যদি কোনো পশুর অধিকাংশ দাঁত না থাকে তাহলে সেই পশু কোরবানি করা যাবে কিনা? এমন প্রশ্নে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন—
কোরবানির জন্য নির্ধারণ করা গরু-ছাগলের অধিকাংশ দাঁত না থাকলেও যে কয়টি দাঁত আছে তা দিয়ে যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তবে সেই পশু দিয়ে কোরবানি করা যাবে। কিন্তু দাঁত পড়ে যাওয়ার কারণে যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে না পারে তবে ওই পশু কোরবানি করা যাবে না। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫; ফাতাওয়া আলমগীরী ৫/২৯৮)
সঠিক নিয়ম মেনে কোরবানি করলে তা আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তাই পশু নির্বাচনের সময় উপরোক্ত নির্দেশনাগুলো মেনে চলা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
আরও পড়ুন