নবিজির (সা.) জন্ম, হিজরত ও ইন্তেকালের মাস রবিউল আউয়াল
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট, ২০২৫

রবিউল আউয়াল মাসের সঙ্গে নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জীবনের একটা গভীর সম্পর্ক আছে। এই মাসেই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এই মাসেই হিজরত করছিলেন এবং এই মাসেই ইন্তেকালও করেছিলেন। তাই রবিউল আউয়াল মাসে নবিজিকে (সা.) আমরা বিশেষভাবে স্মরণ করি। তার জীবনের ঘটনাবলি ও তার জীবনাদর্শ নিয়ে অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি আলোচনা ও চর্চা হয়।
একজন মুসলমান জীবনের কোনো মাস, কোনো সপ্তাহ বা দিন নবিজির স্মরণ ও তার জন্য দোয়া করা ছাড়া অতিবাহিত করতে পারে না। এরপরও মাসগুলোর মধ্যে রবিউল আউয়াল নবিজির (সা.) সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশেষ মাস।
নবিজির (সা.) জন্মের মাস রবিউল আউয়াল
নবিজি (সা.) জন্ম গ্রহণ করেন রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার, হাতির বছর অর্থাৎ যে বছর আবরাহা হাতির বাহিনী নিয়ে কাবা ভেঙে ফেলতে এসেছিল ওই বছর। নবিজির (সা.) জন্ম রবিউল আউয়াল মাসে ও সোমবারে হয়েছিল এ ব্যাপারে সব আলেমগণ একমত। কিন্তু জন্মের নির্দিষ্ট দিন নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেন, তিনি ১২ রবিউল আউয়াল জন্মেছেন—এটাই অধিকাংশ আলেমের মত। ইবনে কাসির (রহ.) বলেছেন, এ বিষয়ে অধিকাংশ আলিমের ঐক্যমত রয়েছে যে, নবিজির (সা.) জন্ম হয়েছিল ১২ রবিউল আউয়াল।
এ ছাড়া অনেকে বলেন, তিনি ২ রবিউল আউয়াল জন্মেছেন। অনেকে বলেন, ৮ তারিখে। আবার অনেকে বলেন, ৯ তারিখে। এ সবই রবিউল আউয়াল মাসের দিন।
নবিজির জন্মের সময় মানবজাতি অজ্ঞতার গভীর অন্ধকারে অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.) ওই সময়ের অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, আল্লাহ পৃথিবীর দিকে প্রতি তাকালেন এবং আহলে কিতাবের গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া আরব ও অনারব সবাইকে অপছন্দ করলেন। (সহিহ মুসলিম)
ওই অন্ধকারে নবিজির (সা.) জন্ম ছিল আলোক, জ্যোতি এবং সমগ্র বিশ্বের জন্য আল্লাহ তাআলার এক বড় রহমত ও নেয়ামত।
নবিজি (সা.) জন্ম নেওয়ার পর তার মা আমিনা দাদা আবদুল মুত্তালিবকে খবর দেন। তিনি আনন্দিত হয়ে এসে তাকে কাবায় প্রবেশ করান, আল্লাহর কাছে দোয়া ও শোকর আদায় করেন এবং তার নাম রাখেন ‘মুহাম্মাদ’ অর্থাৎ প্রশংসিত।
রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের জন্য সোমবারে নফল রোজা রাখতেন কারণ সোমবার ছিল তার জন্ম ও নবুয়্যত লাভের দিন। আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একবার নবিজিকে (সা.) সোমবারে রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, সেদিনই আমি জন্মেছি এবং সেদিনই আমার ওপর ওহি নাজিল হয়েছে। (সহিহ মুসলিম)
কিন্তু নবিজি (সা.) কখনো তার বাৎসরিক জন্মদিনকে কোনো উৎসব হিসেবে পালন করেননি, তার সাহাবিদেরও পালন করতে বলেননি। নবিজির (সা.) ইন্তেকালের পর তার সাহাবায়ে কেরামও নবিজির (সা.) বাৎসরিক জন্মদিন পালন করতেন না।