‘দ্বিতীয়ার্ধে আমার হৃদস্পন্দন বন্ধ হতে বসেছিল’, নেপালকে হারিয়ে বা
প্রকাশ: ১৫ জুলাই, ২০২৫

নেপালকে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে পিটার জেমস বাটলার কখনও মেয়েদের প্রশংসায় ভাসালেন, কখনও শেষ দিকের খেলা নিয়ে ঝাড়লেন ক্ষোভ। লাল কার্ড পাওয়া সাগরিকাকে বিঁধলেন তীর্যক শব্দে। এক দিন বিরতি দিয়ে খেলতে নামা এবং বসুন্ধরা কিংসের ভারি মাঠ নিয়েও প্রকাশ করলেন উষ্মা।
উমহেলা মারমা, তৃষ্ণা রানীদের প্রশংসায় পঞ্চমুখও হলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই ইংলিশ কোচ।
সাফ উইমেন’স অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে রোববার রোমাঞ্চের নানা বাঁক পেরুনো ম্যাচে নেপালকে ৩-২ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। দুই গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে তারা হজম করে দুটি গোল। শেষের বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে তৃষ্ণা রানীর লক্ষ্যভেদে কাঙ্ক্ষিত জয়ে টেবিলে শীর্ষে ওঠে বাটলারের দল।
ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় জয়ের পথে থাকা অবস্থায় দুই গোল হজম করা মানতে পারছেন না বাটলার। বরাবরই স্পষ্টভাষী এই ইংলিশ কোচ সমালোচনা করেন মেজাজ হারিয়ে লাল কার্ড দেখা সাগরিকারও।
“আমি মনে করি, প্রথমার্ধে আমরা তাদের তুলনায় ভালো দল ছিলাম, সম্ভবত ৫৫-৬০ মিনিট পর্যন্ত। ওই লাল কার্ডের পর আমরা একটু নার্ভাস হয়ে পড়লাম, এজন্য কোনো সমবেদনা নেই, আমাদের পাল্টা জবাব দেওয়া উচিত হয়নি। তাই, এজন্য আমার কোনো সহানুভূতি নেই (সাগরিকার প্রতি)।”
“তবে এ নিয়ে আমার কোনো অভিযোগও নেই। একই সাথে বলতে হচ্ছে, ওই বিষয় খেলার ধারা বিঘ্নিত করেছিল এবং আমি মনে করি, নেপাল সেই সুযোগ নিয়েছে। আমি কিছু বদলি নামিয়েছিলাম, তারা তেমন প্রভাব রাখতে পারছিল না। শেষ দিকে মেয়েদের খুবই নার্ভাস দেখাচ্ছিল, যেটা আমাদের বেলায় স্বাভাবিক নয়। আমার মনে হয়, শেষ ৩০ মিনিট আমরা ছিলাম একেবারেই যাচ্ছেতাই।”
দুই গোল খেয়ে চাপে পড়ার কথা ম্যাচ শেষে বলেছিলেন জয়সূচক গোল করা তৃষ্ণা। বাটলার বললেন, ওই পরিস্থিতিতে তার হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে মেয়েদের সেরাটা না পাওয়ার পেছনে টানা খেলা ও ভারি মাঠের দায়ও দেখছেন তিনি।
“এই মেয়েরাও মানুষ, তারা তরুণ এবং আমার বিশ্বাস নিজেদের পথ তারা খুঁজে নেবে। (ঠাসা সূচির কারণে) আমাদের অনুশীলনের সময় নেই। ১২ দিনের মধ্যে ছয়টি ম্যাচ খেলতে হবে। মেয়েরা চোট নিয়ে খেলছে। রিকভারি, খেলা, পুল সেশন, খাওয়া, ঘুমানো, আবারও খেলা-আমি মনে করি না, এটা উন্নয়নের জন্য ভালো।”
“আমি নিশ্চিত, অন্যরাও আমাদের মতো করেই ভাবছে। বিশেষ করে এই ভারি মাঠে খেলা…তবে আমি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না। তবে একই সাথে বলছি, যেভাবে শেষ ২০-৩০ মিনিট মেয়েরা খেলেছে, কেউ কেউ অগোছালো ছিল, সত্যি বলতে আমি খুশি নই, আমার হৃদস্পন্দন বন্ধ হতে বসেছিল।”
তবে উমহেলা, সাগরিকা, তৃষ্ণার মতো তরুণরা ভুল থেকে শিখবে বলেও মনে করেন বাটলার।
“আমার কাছে এই টুর্নামেন্টে জেতা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এই মেয়েদের উন্নতি। তারা ভুল করবে, ভুল থেকে শিখবে। মূল বিষয় হচ্ছে, একই ভুল দ্বিতীয়বার না করা। তবে যাই হোক, ম্যাচটা আমরা জিতেছি এবং আমি মনে করি, এই জয় আমাদের প্রাপ্য।”