Advertisement

এশিয়া কাপে কঠিন সমীকরণে বাংলাদেশ

মানবজমিন

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬ উইকেটের পরাজয়ের পর এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পথ বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখন শুধু জয়ই নয়, রান রেটের সমীকরণও বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লিটন দাসের দলকে জিততেই হবে সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখতে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত আফগানদের জন্য দ্বিতীয় বাড়ির মতো। এখানে মাঠগুলো হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। এখানে উইকেট কন্ডিশন থেকে শুরু করে সবকিছুই তাদের বেশ চেনা-জানা। তাই জয়টা যে বেশ চ্যালেঞ্জের হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে টাইগারদের জন্য সুযোগ দেখছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট হিরো শোয়েব মালিক। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামের কারণে বাংলাদেশের জন্য এখানে আফগানদের হারানোর সুযোগ বেশি। পাকিস্তানের সাবেক এই অলরাউন্ডার মনে করেন, আবুধাবির উইকেট পেসারদের জন্য সহায়ক হওয়ায় বাংলাদেশের কিছুটা সুবিধা থাকতে পারে, যা আফগানদের চেয়ে তাদের এগিয়ে রাখবে। শোয়েব মালিক বলেছেন, ‘এই গ্রুপে শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ওরা একটা খেলে ওটাই জিতেছে। হংকংয়ের সঙ্গেও এগিয়ে থাকবে। এই গ্রুপে আসল ম্যাচ হবে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মধ্যে। এই ম্যাচে যে জিতবে তার সুযোগ বেশি থাকবে।’
গ্রুপ একসঙ্গে ‘বি’-তে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তান হংকংকে ৯ উইকেটে হারায়, যা তাদের রান রেটে অনেক এগিয়ে রেখেছে। অন্যদিকে, লিটন দাসের দল হংকংকে ৭ উইকেটে হারালেও, ম্যাচটি ১৮ ওভার পর্যন্ত গড়ানোয় রান রেটে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরাজয় বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। এখন শুধুমাত্র জয়ই তাদের সুপার ফোরে নিয়ে যাবে না, পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা-হংকং ম্যাচের ফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে। শ্রীলঙ্কা যদি হংকংকে হারায়, তাহলে তাদের সুপার ফোর প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে।

আশাবাদী বাংলাদেশ
এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ দল আশাবাদী। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর জাকের আলী অনিক গণমাধ্যমকে জানান, তারা টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এসেছেন এবং এক ম্যাচে হেরে সেই আশা ছেড়ে দেবেন না। এই মানসিকতা নিয়েই দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে। তিনি বলেন, ‘আশা ছাড়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা জেতার জন্য খেলব। আমরা তো টুর্নামেন্ট স্রেফ ম্যাচ খেলার জন্য আসিনি, আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এসেছি। এক ম্যাচ হারাতে এটা আশা হারিয়ে ফেলা যাবে না।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতে বাংলাদেশের ব্যাটিং পারফরম্যান্স হতাশাজনক ছিল। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দুই ওভারেই কোনো রান না করে দুই উইকেট হারায় দল। এরপর ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যায়। শেষ পর্যন্ত জাকের আলী ও শামীম পাটোয়ারীর লড়াকু ব্যাটিংয়ে দল ১৩৯ রানের সংগ্রহ পায়। কিন্তু এই হার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, দলের টপ অর্ডারের দুর্বলতা এখনো বড় সমস্যা। জাকের আলীও এই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ওপেনিং আর তিন নম্বর ব্যাটিং পজিশন আমাদের দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেলোয়াড়দের অবশ্যই এসব বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। পাওয়ারপ্লেতে খেলা মানে এই নয় যে, প্রতিটি বলেই চার বা ছক্কা মারতে হবে। ‘ড্রপ অ্যান্ড রান’ ধরনের ছোট ছোট রান নেওয়ার বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হবে।’

পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আরও সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে টপ অর্ডারের পারফরম্যান্সই নির্ধারণ করবে ম্যাচের ভাগ্য। আবুধাবীর পেস-সহায়ক উইকেটে পেসাররা যেমন সুবিধা পাবেন, তেমনি আফগানিস্তানের রশিদ খান, মুজিব উর রহমানের মতো স্পিনাররাও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন। তাই আফগানিস্তানকে হারাতে হলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ধৈর্য ও বিচক্ষণতা দিয়ে খেলতে হবে। এখন সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সামনে একটিই লক্ষ্য্তআফগানিস্তানকে হারিয়ে সুপার ফোর-এ জায়গা করে নেওয়া। এই বাঁচা-মরার লড়াইয়ে দলীয় পারফরম্যান্স এবং সঠিক রণনীতিই হবে জয়ের মূল চাবিকাঠি। ভক্তদের প্রত্যাশা, দল ঘুরে দাঁড়াবে এবং টুর্নামেন্টে নিজেদের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখবে।

আরও পড়ুন

Lading . . .