প্রকাশ: ১২ জুন, ২০২৫

ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মূলত একটি লক্ষ্যই ছিল বাংলাদেশের- জিতে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আসছে ম্যাচের জন্য আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়া। এর বাইরে দলের মধ্যে স্থানীয়-প্রবাসীদের মধ্যে বোঝাপড়া হলো কতটুকু, আক্রমণ-মাঝমাঠ-রক্ষণ- এই তিন বিভাগের শক্তি-দুর্বলতা খতিয়েও দেখতে চেয়েছিলেন হাভিয়ের কাবরেরা। সহজ জয়ে সে চাওয়া পূরণ হয়েছে বলে জানালেন বাংলাদেশ কোচ।
ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে বুধবার ভুটানকে ২-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ মিনিটে হামজা চৌধুরী হেডে দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দারুণ ভলিতে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সোহেল রানা।
ম্যাচে গোল পাওয়া হামজা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এবং সোহেল মিডফিল্ডার। আক্রমণভাগে খেলা ফাহামিদুল ইসলাম, রাকিব হোসেন কিংবা পরে বদলি নামা মোহাম্মদ ইব্রাহিম, শেখ মোরসালিন ও আল আমিনের কেউই পাননি জালের দেখা। তবে ফরোয়ার্ডদের বিবর্ণতা একপাশে রেখে জয়ের আনন্দ প্রকাশেই সংবাদ সম্মেলনে বেশি আগ্রহী হলেন কাবরেরা।
“ভালো একটা পরীক্ষা ছিল। যেমনটা আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, ম্যাচটা যেভাবেই হোক তেমনই হয়েছে। খুবই শক্ত শুরু করেছিলাম আমরা, আগেভাগে গোল পাওয়ায় আমাদের মনোবল বেড়েছিল। এরপর ১০-১৫ মিনিট একটু ছন্দহীন হয়ে পড়েছিলাম, তবে দ্রুতই ঘুরে দাঁড়ালাম। ভালোভাবে প্রথমার্ধ শেষ হলো, দ্বিতীয়ার্ধে খুবই ভালো শুরু পেলাম, দ্বিতীয় গোল পেলাম। আমি মনে করি, যেটা আমাদের আজকের লক্ষ্য ছিল, সেটা পূরণ হয়েছে।”
“আমরা সবাইকে কিছুটা সময় খেলার সুযোগ দিয়েছি, যাতে করে তারা আরও বেশি সাচ্ছ্বন্দ্যবোধ করে, নতুন মাঠ ও আবহের সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারে। আরও একটি ম্যাচে ক্লিনশিট পেলাম, যেটা চমৎকার একটা বিষয় এবং সেট-পিসে আমরা ভালো করেছি। তো সবমিলিয়ে ইতিবাচক কিছুই পেয়েছি ম্যাচ থেকে।”
ইতালির সেরি ডি’তে খেলা ফরোয়ার্ড ফাহামিদুলকে লেফট উইংয়ে খেলিয়েছেন কাবরেরা। এই তরুণ ফরোয়ার্ড শুরুর জড়তা কাটিয়ে দ্রুতই মানিয়ে নেন দলের সাথে। দলের আক্রমণের সাথে ফাহামিদুলের সংশ্লিষ্টতা মনে ধরেছে কাবরেরার।
“সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে আমাদের অনেক কিছু জানা জরুরি। তার মধ্যে একটি ফাহামিদুলের সামর্থ্য। আমি মনে করি, শুরুতে সে একটু সময় বেশি নিয়েছিল সক্রিয় হতে, কিন্তু এটা আবহ এবং স্নায়ুর চাপের কারণে স্বাভাবিক। কিন্তু দুই-তিনটা পাস টানা দেওয়ার পর সে জড়তা কাটিয়ে উঠল। আমি মনে করি, সে ভালো খেলেছে।”
“বল পায়ে সে ভীষণ মনোযোগী ছিল। প্রাণশক্তি ছিল দারুণ। সে খুব ভালো করেই জানে, আমরা তাকে নিয়ে অনেক কথা বলছি। তার মনোভাব, বল পায়ে থাকা বা না থাকা অবস্থায় তার সক্রিয়তা, সবকিছুর সাথে সংশ্লিষ্টতা…সে যা করেছে, ভালো করেছে। সে যা করেছে, সেটা তাকে পরের ম্যাচে গেম টাইম দিতে পারে।”
ফাহামিদুলের মতোই এই ম্যাচে লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে ডিফেন্ডার তাজ উদ্দিন ও ফরোয়ার্ড আল আমিনের। গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে অভিষেকের পর এই প্রথম দেশের মাঠে খেলতে নেমে আলো ছড়ালেন হামজা। সবার পারফরম্যান্সেই খুশি কাবরেরা।
“হ্যাঁ, আমি সব খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সেই খুশি। দারুণ একটা মিশ্রণ ছিল দলে, একই সাথে আমরা তিন অধিনায়ক তপু বর্মন, সোহেল রানা ও জামাল ভূঁইয়াকে একসাথে দীর্ঘদিন পর খেলতে দেখলাম। তারা ভালো খেলেছে। তিন জন প্রথম খেলল বাংলাদেশের হয়ে, ফাহামিদুল, তাজ ও আল আমিন, তাদের প্রথম ম্যাচের পারফম্যান্স ভালো।”
“প্রথমার্ধে হামজার ভীষণ প্রভাব ছিল। বিশেষ করে শুরুর দিকে। হামজার মতো খেলোয়াড়ের মাঠে থাকার প্রভাব অবশ্যই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে, দল আরও ভালো খেলেছে, এটাই সত্যি।”
আগামী মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।