প্রকাশ: ২৮ জুলাই, ২০২৫

চলতি বছরের জুনে পাকিস্তান সফর করে বাংলাদেশ। টানা ৩ ম্যাচ হেরে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফেরে টাইগাররা। দেড় মাসের ব্যবধানে ঘরের মাঠেই সেই হারের প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ এসেছে লিটন কুমার দাসের দলের সামনে। মঙ্গলবার মিরপুরে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। আজ একই মাঠে সন্ধ্যা ৬টায় গড়াবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। জিতলেই এক ধাপ টপকে র্যাঙ্কিংয়ের নবম স্থানে উঠে আসবে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে ঠিক মানিয়ে নিতে পারছে না, বাংলাদেশ দলকে ঘিরে এই লাইনটা অনেকবার উচ্চারিত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই লাইনটা থেকে বের হওয়ার সময় এসেছে। অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩টি সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। যেখানে একাধিক ম্যাচের সিরিজ জিতেছে ১০টি আর এক ম্যাচের দুটি। এরপর ৭টি সিরিজ জয়ই এসেছে শেষ চার বছরে। এর মধ্যে বড় সাফল্য বলতে গেলে ইংল্যান্ডকে ঘরের মাঠে ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ করা।
২০২১ সালে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ, তবে এই দুটো সিরিজের উইকেট নিয়ে সমালোচনা আছে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে পাঁচবার হোয়াইটওয়াশ করেছে। এর মধ্যে ৩ ম্যাচের সিরিজে ৩বার ও ২ ম্যাচের সিরিজে দুইবার। ইংল্যান্ড ছাড়া আয়ারল্যান্ডকে ২০১২ সালে ৩-০তে সিরিজ হারায় বাংলাদেশ। এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বরে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন কুমার দাসের অধীনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাঠে ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ করে টাইগাররা। আর সবমিলিয়ে প্রতিপক্ষের কাছে ১২বার হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। এরপর সবচেয়ে বেশি পাকিস্তান করেছে ৩ বার। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ১ বার, দক্ষিণ আফ্রিকা ২ বার, নিউজিল্যান্ড ২ বার, আফগানিস্তান ১বার, ভারত ১বার ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১ বার হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ।
আজ প্রতিপক্ষকে আরেকটি ধবলধোলাইয়ের মিশনে নামবে লিটনের দল। পাকাপাকিভাবে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারে তার দল। এরপর পাকিস্তান গিয়ে হয় ৩-০তে হোয়াইটওয়াশ। তবে অধিনায়ক লিটন ঘুরে দাঁড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কা সফরে। প্রথম ম্যাচ হারার পর টানা দুই ম্যাচ জিতেই লঙ্কা থেকে প্রথমবার সিরিজ জিতে দেশে ফেরে টাইগাররা। সেই দুর্দান্ত ফর্ম ঘরের মাঠেও ধরে রেখেছে তার দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১১০ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। ৭ উইকেট হাতে রেখেই সেই ম্যাচে জয় পায় টাইগাররা। যেটা ছিল এই সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ বছর পর জয়। পরের ম্যাচে অবশ্য পাকিস্তান লড়াই করেছে। তবে
ফাহিম আশরাফের ৫১ রানই মূলত শেষ দিকে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবে স্নায়ু ধরে রেখে ৮রানের রোমাঞ্চকর জয়ে প্রথমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ে লিটনের দল। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৫ রানেই পাকিস্তানের ৫ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, মোস্তাফিজরা দুর্দান্ত বোলিং করেন। যদিও পাওয়ার প্লেতে ব্যাটারদের নিয়ে চিন্তা রয়েই গেছে। এদিন ২৮ রানেই ৪ উইকেট হারায় লিটনের দল। এরপর শেখ মেহেদী ও জাকের আলী মিলে এনে দেন লড়াকু সংগ্রহ। ৪৮ বলে ৫৫ রান করেন জাকের। যেটা কিনা দলের ১৩৩ রানের ৪১.৩৫ শতাংশ।
ফিল্ডিং নিয়েও বাংলাদেশের দুঃশ্চিন্তার জায়গা আছে। এদিন বেশ কয়েকটি মিস ফিল্ডিং আর ক্যাচ ফেলেছেন ফিল্ডাররা। বিশেষ করে ১৮তম ওভারে ফাহিম আশরাফের ক্যাচ ফেলেন তানজিম। যেটা ধরতে পারলে তখনই প্রায় জয় নিশ্চিত হয়ে যেত। পরে শেষ ওভারে গিয়ে স্নায়ুক্ষয় করে জয় পায় স্বাগতিকরা। যদিও এটাকে ‘পার্ট অব দ্য’ গেম বলেন জাকের আলী । জানান, আজ শেষ ম্যাচ জিতে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্যের কথাও। দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘লাইটলি (নেব) না। আমরাও জেতার জন্য যাব। ম্যাচ জেতা জেতাই। ওরাও খুব ভালো ফাইট করেছে। টানা ৪ ম্যাচ জেতা। অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে (শেষ) ম্যাচ জেতা। (হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য আছে কি না) হ্যাঁ হ্যাঁ (হোয়াইটওয়াশ করাই লক্ষ্য)। প্রসেস ধরে এগোতে চাচ্ছি।’
হোয়াইটওয়াশ করতে পারলে র্যাঙ্কিংয়েও এগোবে বাংলাদেশ। আজ জিতলে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট ২২০ থেকে বেড়ে ২২৩-এ দাঁড়াবে। বর্তমানে আফগানিস্তানের রেটিং পয়েন্ট ২২৩। তবে ভগ্নাংশের হিসেবে ৯ এ উঠে যাবে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে দশে নেমে যাবে আফগানিস্তান।
আরও পড়ুন