Advertisement

অঙ্ক মিলিয়ে জিততে হবে লিটনদের

মানবজমিন

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

24obnd

আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতলেই কি এশিয়া কাপে টিকে থাকবে বাংলাদেশ? এই প্রশ্নের উত্তর সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বলা কঠিন। কারণ টাইগার অধিনায়ক লিটন দাসের সামনে এখন শুধু জয়ই নয়, বরং এক জটিল সমীকরণ মেলানোর চ্যালেঞ্জ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরাজয়ের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। পরিসংখ্যান বলছে, গ্রুপ ‘বি’-তে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তান হংকংকে ৯ উইকেটে হারায়, যার ফলে তাদের নেট রান রেট (+৪.৭২৫) অনেক বেশি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ হংকংকে ৭ উইকেটে হারালেও, ম্যাচটি ১৮ ওভার পর্যন্ত গড়ানোর কারণে তাদের নেট রান রেট আফগানিস্তানের চেয়ে কম। এখন বাংলাদেশের জন্য সুপার ফোর নিশ্চিত করতে হলে, কেবল জয় পেলেই হবে না, বরং শ্রীলঙ্কা ও হংকং ম্যাচের ফলাফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে। এমন কঠিন ম্যাচের আগে অবশ্য টাইগার শিবির বেশ আশাবাদী। দলের ব্যাটার জাকের আলী অনিক গণমাধ্যমকে জানান, ‘আশা ছাড়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা জেতার জন্যই খেলব। আমরা তো টুর্নামেন্ট শুধু মাত্র ম্যাচ খেলার জন্য আসিনি, আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এসেছি। এক ম্যাচ হেরে গেলে এটাতে আশা হারিয়ে ফেলা যাবে না।’

আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আফগানিস্তানের শক্তিশালী বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করা। শুধু জয়ই নয়, নেট রান রেটের সমীকরণ মেলানোর জন্য দ্রুত রান তোলা এবং কম রানে আফগানিস্তানকে বেঁধে ফেলাও লিটনের দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচটি টাইগারদের জন্য ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে। সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচে জয় ছাড়া বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে। অন্যদিকে, আফগানিস্তান হংকংকে উড়িয়ে দিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে আছে। এই ম্যাচে জয় পেলে তারা গ্রুপে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করবে। সাম্প্রতিক ফর্মে আফগানিস্তান স্পষ্টতই বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তাদের শেষ ৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে ৪টিতেই তারা জয় পেয়েছে। হংকংয়ের বিপক্ষে তাদের প্রথম ম্যাচে দলগত পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যাটিংয়ে আজমতুল্লাহ ওমরজাই এবং সদিকুল্লাহ অটল অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন, যা তাদের দলকে বড় স্কোর গড়তে সাহায্য করেছে। বোলিংয়ে রশিদ খান এবং তরুণ স্পিনার আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফর ও নুর আহমদ-এর দাপট ছিল। সব মিলিয়ে আফগানরা যেন এক অপ্রতিরোধ্য দল। যাদের হারাতে নিজেদেরে সেরাটা দেয়া ছাড়া বিকল্প নেই টাইগারদের সামনে।

চলমান এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের পারফরম্যান্স মিশ্র। শেষ ৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে ৩টিতে জয় ও ২টিতে পরাজয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে তাদের ব্যাটিং মুখ থুবড়ে পড়েছিল। ইনিংসের শুরুতেই দুটি মেডেন ওভার খেলার পর টপ অর্ডার ব্যাটাররা ইনিংসকে গতি দিতে ব্যর্থ হন। যদিও জাকের আলী এবং শামীম হোসেন লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন, তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। এছাড়া, দলের ফিল্ডিং এবং ক্যাচিংও ছিল হতাশাজনক। এ ফরম্যাটে এই দুই দলের মধ্যকার লড়াইয়ে আফগানিস্তানের পাল্লাই ভারী। এখন পর্যন্ত হওয়া মোট ১২টি ম্যাচের মধ্যে আফগানিস্তান ৭টি এবং বাংলাদেশ ৫টি ম্যাচে জয় পেয়েছে। পরিসংখ্যান এবং সামপ্রতিক ফর্মের বিচারে আফগানিস্তানকে এগিয়ে রাখলেও, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেকোনো কিছু সম্ভব। শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর বাংলাদেশ একাদশে কয়েকটি পরিবর্তন আনতে পারে। দলের প্রধান পেসার তাসকিন আহমেদের ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশি, যিনি আগের ম্যাচে খেলেননি। এছাড়াও, ওপেনিং জুটিতেও পরিবর্তন আসতে পারে।

আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ সাধারণত ব্যাটিং সহায়ক। তবে স্পিনার এবং পেসাররা উভয়েই এখানে সাহায্য পেতে পারেন। ম্যাচের দিন তাপমাত্রা বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে, এই ম্যাচটি একটি রোমাঞ্চকর লড়াই হতে চলেছে। আফগানিস্তান তাদের দাপট বজায় রেখে সুপার ফোরের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে চাইবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ মরিয়া হয়ে লড়বে টুর্নামেন্টে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। টাইগারদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আছে। আজ ক্রিকেটের তিন বিভাগেই ভালো নৈপুণ্য দেখাতে হবে লিটনদের।

আরও পড়ুন

Lading . . .