বিএনপির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে : জিকে গউছ
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ বলেছেন, বিএনপির বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। সে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে বিএনপি পরিবারের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরশহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জিকে গউছ বলেন, দেশ থেকে আওয়ামী লীগ পালিয়েছে ঠিকই কিন্তু আওয়ামী শক্তি মিলে যারা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে বানচালের চেষ্টা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি সবাই পালিয়েছে কিন্তু তাদের বীজ এদেশে রেখে গেছে। সেই বীজ আগামী নির্বাচনে বিএনপির বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একটি দল তাদের ছত্রছায়ায় সেই বীজকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং আগামী নির্বাচনে তাদের সহযোগিতা নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে অনেক কঠিন লড়াই হবে এবং সেই লড়াইয়ে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি বিএনপির বিজয় হবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, যে জাতি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, যে জাতি নিজের অধিকারের জন্য বুক পেতে দিয়েছে, সেই জাতিকে কেউ কোনোদিন রুখতে পারেনি। দেশের মানুষের ভালবাসা যদি বিএনপির সঙ্গে থাকে, দেশি-বিদেশি কোনো চক্রান্ত বিএনপিকে রুখে দিতে পারবে না। বিএনপি সারা বাংলাদেশের মানুষের মণিকোঠায়।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতির সামনে যে ৩১ দফা দিয়েছেন, সেই ৩১ দফাই হচ্ছে জাতির মুক্তির রক্ষাকবচ। তারেক রহমান অত্যন্ত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। আজ থেকে দুই বছর আগেই তো জাতির সামনে সেটি দিয়েছেন।
জি কে গউছ বলেন, বিএনপি কাউন্সিলের মাধ্যমে সারা দেশে নেতৃত্ব সৃষ্টি করছে। এটার মাধ্যমে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা শুরু হয়েছে। কাউন্সিলে নেতা নির্বাচন করবেন এ নেতৃত্বের মাধ্যমে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশি-বিদেশি সব চক্রান্তকে প্রতিহত করতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠাই হবে আমাদের মূল কাজ।
প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপির সিলেট বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, বিগত ১৭ বছর বেগম খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তৃণমূলের হাজার হাজার নেতাকর্মীরাও শেখ হাসিনার নির্যাতন থেকে রক্ষা পায়নি। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সিলেটের কিংবদন্তি নেতা এম ইলিয়াস আলীসহ অসংখ্য নেতাকর্মী নির্যাতন, গুম, খুন হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশি-বিদেশি শত্রুরা চায় না বিএনপি ক্ষমতায় আসুক। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় গিয়েছে তখনই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করেছিল। আমাদের মধ্যে এখনো বিভিন্ন ব্যক্তি চর্চা রয়েছে। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সত্যিকারভাবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, আর সেই ঐক্যবদ্ধ হবে ইস্পাত কঠিনের মতো।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বলেন, একটি বিশেষ দল রয়েছে তাদের টাকার কোনো অভাব নেই। ওদের ব্যাংক, হাসপাতাল রয়েছে। ওদের বড় বড় নেতারা বেতনভুক্ত। টাকা তাদের কাছে কোনো ফ্যাক্টর নয়। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে খুবই কঠিন। আওয়ামী লীগ ওই দলের ওপর ভর করে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী দেবে, তারা বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য মরিয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৬টি বছর বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আওয়ামী পুলিশ লীগ রাজনৈতিক মাঠে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। আগামী নির্বাচনে আমাদের দুটি দল আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঘাপটি মেরে বসে আছে আর ওই দল বলে তারা নাকি ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। ওই বট বাহিনীকে প্রতিহত করতে হবে। আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য পদের পেছনে ও নেতার পেছনে না ছুটে মাঠে নেমে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. রেদওয়ান খানের সভাপতিত্বে ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক।
আরও বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মৌলভী আব্দুল ওয়ালী সিদ্দিকী, সদস্য আব্দুল মুকিত, বকশী মিসবাহুর রহমান, ফখরুল ইসলাম, মোহিতুর রহমান হেলাল, আবুল কালাম বেলাল, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুজিবুর রহমান মজনু, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান।
অনুষ্ঠানে বিএনপির বিগত সময়ের প্রয়াত নেতাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন বহির্বিশ্ব জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ড. সাইফুল আলম চৌধুরী।