‘হাওরের সুলতান-৪’ হাউসবোটের বিরুদ্ধে মামলা, তিন শর্তে সমঝোতা
প্রকাশ: ১১ আগস্ট, ২০২৫

তিনটি শর্ত মেনে নেওয়ায় টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকবাহী হাউসবোট হাওরের সুলতান-৪ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করলেন ভোক্তা অধিকারে অভিযোগকারী পর্যটক মাহাবুর আলম সোহাগ।
এর আগে গত ২২ জুলাই টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরতে এসে পরিবার নিয়ে প্রতারণার শিকার হন এই পর্যটক। পরে গত ২৬ জুলাই ভোক্তা অধিকারে সুলতান-৪ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।
এ মামলায় ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা প্রথমে ৬ আগস্ট সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। পরে তারিখ পরিবর্তন করে ১১ আগস্ট করা হয়।
রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে হাওরের সুলতান-৪ কর্তৃপক্ষ ভুক্তভোগী সোহাগের সঙ্গে দেখা করে তিন শর্ত মেনে সমঝোতা করেন।
শর্তগুলো হলো—১. দেশের যে কোনো জেলার এতিমখানায় ১০০ জন এতিমকে একবেলা ভালো খাবার খাওয়াতে হবে। ২. যে কোনো মাধ্যমে বোটে বুকিং দিলে বোট কর্তৃপক্ষকে ভোক্তাকে দ্রুততার সঙ্গে সব তথ্য জানিয়ে দিতে হবে ও ৩. বোটের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেনের ভাউচার দিতে হবে।
ভুক্তভোগী সোহাগ বলেন, গত ২২ জুলাই আমার পরিবারসহ মোট তিনটি পরিবার গিয়েছিলাম সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে। সেখানে যাওয়ার ১৫ দিন আগেই একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে হাওরের সুলতান-৪ বোটে বুকিং করেছিলাম। যাওয়ার পর বোটের পক্ষ থেকে যে নির্ধারিত সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিল, সেটা তারা রক্ষা করতে পারেনি। আমাকে বলা হয়েছিল—সুনামগঞ্জে গাড়ি থেকে নেমেই শাহেববাড়ির ঘাটে যেতে হবে, সেখান থেকে বোট ছাড়বে; কিন্তু সেটা করা হয়নি। বোট ছেড়েছে আনোয়ারপুর নামক একটি জায়গা থেকে। যেটির দূরত্ব সুনামগঞ্জ থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে। অথচ এ ব্যাপারে তারা আমাকে আগে থেকে কিছু জানায়নি। জানিয়েছে আগের রাতে। এ ছাড়া বুকিংয়ের পর আমার জন্য কোন রুম বরাদ্দ রাখা হয়েছে সেটা বারবার জানতে চাওয়ার পরও তারা আমাকে জানায়নি। আমি একরুমে তিনজন থাকার জন্য তাদের পেমেন্ট করেছি। অথচ তারা আমাকে সেখানে এক বেডের একটি রুম দিয়ে বলেছে এখানেই তিনজন থাকতে হবে, যা আমার জন্য ছিল বিব্রতকর। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি তারা ভঙ্গ করেছে।
সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফিরে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে হাওরের সুলতান-৪-এর বিরুদ্ধে একটি মামলা করি। এতে কিছুটা টনক নড়ে হাওরের সুলতান-৪-এর কর্তৃপক্ষের। পরে তারা দুঃখ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দেয় এবং আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য তারা কয়েক দিন ধরে যোগাযোগ করেন। অবশেষে রোববার বিকেলে তারা আমার অফিসে আসেন এবং বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেন। তাদের সব কথা শোনার পর আমি তাদের তিনটি প্রস্তাব দিই।
সোহাগ বলেন, আমার তিনটি প্রস্তাবই তারা মেনে নিয়েছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে সুনামগঞ্জের একটি এতিমখানায় ১০০ জন এতিমকে একবেলা ভালো খাবার খাওয়াবেন বলে আমাকে কথা দিয়েছেন। এসব শর্ত মেনে নেওয়ায় আমি আমার মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদনে স্বাক্ষর করেছি। হাওরের সুলতানের জন্য শুভ কামনা রইল।