Advertisement
  • হোম
  • বাণিজ্য
  • অর্থনীতির গতি মন্থর, বিনিয়োগ ১০ বছরের মধ্যে সর্বনি...

অর্থনীতির গতি মন্থর, বিনিয়োগ ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

প্রথম আলো

প্রকাশ: ২ জুন, ২০২৫

24obnd

কোভিডের অর্থবছর বাদ দিলে দেশে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমেছে গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে। বিনিয়োগও এখন এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। টানা তিন অর্থবছর ধরে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে। ১৯৮৬ সালের পর দেশে কখনোই টানা তিন বছর মূল্যস্ফীতি এত বেশি ছিল না।

উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। মজুরি বৃদ্ধির হার মূল্যস্ফীতির তুলনায় টানা ৩৯ মাস ধরে কম, ফলে মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে। বিনিয়োগ স্থবিরতায় কর্মসংস্থান কমে গেছে সব খাতে, বাড়ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা। কৃষি উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি এখন গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এতে খাদ্যনিরাপত্তাও শঙ্কার মধ্যে। আর্থিক খাত এখনো ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ব্যাংকের পরিস্থিতি নাজুক। বেড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ।

টানা তিন বছর ধরে চলা অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার প্রভাবের পাশাপাশি গত প্রায় এক বছরের বিনিয়োগ পরিবেশের অবনতি অর্থনীতির সংকটকে বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, মব সন্ত্রাসের মতো ঘটনার কারণে বেসরকারি খাত এখনো আস্থাহীন। বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় অর্থনীতির গতি মন্থর বা শ্লথ হয়ে আছে।

প্রশ্ন হচ্ছে অর্থনীতি যে অনেকটাই স্থিতিশীলতার দিকে সংহত হয়েছে, তা ব্যক্তি বিনিয়োগ যথেষ্ট পরিমাণে বাড়াতে পারবে কি না। এখন মূল লক্ষ্যই হওয়া উচিত বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান

যদিও এসবের বিপরীতে অর্থনীতিতে কিছু ইতিবাচক লক্ষণও আছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার উত্তরাধিকার সূত্রেই একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি পেয়েছিল।

বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের পতন ঠেকানো যাচ্ছিল না। ডলারের বিপরীতে ক্রমাগত মান হারাচ্ছিল টাকা। উচ্চ মূল্যস্ফীতি তো ছিলই।

সেখান থেকে সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু সূচক অনেকটাই সংহত হয়েছে। রিজার্ভের পতন ঠেকানো গেছে। দর বেড়ে টাকার মানও এখন কিছুটা স্থিতিশীল। লেনদেনের ভারসাম্যও অনেকটা ফিরে এসেছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও মনে করা হচ্ছে বাণিজ্যের আড়ালে কমেছে অর্থ পাচারের পরিমাণ। অর্থ পাচারের চাহিদা কম বলে কমে গেছে হুন্ডির পরিমাণ। এতে বেড়েছে প্রবাসী আয়। ট্যারিফ যুদ্ধের কারণে সামনে শঙ্কা থাকলেও এখন পর্যন্ত রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি আছে।

অর্থনীতির কিছু সূচকে স্থিতিশীলতা এলেও এর সুফল সাধারণ মানুষের জীবনে এখনো পৌঁছেনি। কারণ, মূল্যস্ফীতি কমার হার খুবই ধীর। সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে বিনিয়োগে স্থবিরতা। এর মধ্যে আবার সরকার নিজেই সরকারি বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ কমেছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানিসংকট ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে। অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন, ব্যক্তি বিনিয়োগ না বাড়লে অর্থনীতির কোনো অর্জনই টেকসই হবে না। ফলে দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে আছে বিনিয়োগের ওপরেই।

এ রকম এক পরিস্থিতিতে নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হচ্ছে আজ সোমবার। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি মেনে ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন হলে বাজেট বাস্তবায়নে সরকার সময় পাবে ছয় মাস। আর প্রধান উপদেষ্টার কথা অনুযায়ী জুনে নির্বাচন হলে পুরো বাজেট বাস্তবায়ন করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকেই। এ সময় সরকারের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনে বিনিয়োগের সব ধরনের বাধা দূর করা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর প্রধান কারণ, কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। একই সময়ে শিল্পের প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়লেও কমে গেছে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধিও।

দেশে সর্বশেষ এর চেয়ে কম জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরে, ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে কোভিডের এই অস্বাভাবিক অর্থবছরটি বাদ দিলে কম প্রবৃদ্ধির সময় ছিল ২০০১-০২ অর্থবছর, ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

এ রকম এক পরিস্থিতিতে নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হচ্ছে আজ সোমবার। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি মেনে ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন হলে বাজেট বাস্তবায়নে সরকার সময় পাবে ছয় মাস। আর প্রধান উপদেষ্টার কথা অনুযায়ী জুনে নির্বাচন হলে পুরো বাজেট বাস্তবায়ন করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকেই। এ সময় সরকারের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনে বিনিয়োগের সব ধরনের বাধা দূর করা।

অর্থনীতির জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হচ্ছে মোট বিনিয়োগ ও মোট দেশজ সঞ্চয়। দুটোই কমে গেছে। এবার মোট বিনিয়োগের হার হচ্ছে জিডিপির ২৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এর আগে এর তুলনায় কম বিনিয়োগের অর্থবছর ছিল ২০১৩-১৪ অর্থবছর, ২৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর মোট দেশজ সঞ্চয় তো কমছে ধারাবাহিকভাবে। অর্থনীতির তত্ত্ব অনুযায়ী, একটি দেশে মোট দেশজ সঞ্চয় কমে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থনৈতিক সংকেত, যার প্রভাব বহুমাত্রিক। এর অর্থ হচ্ছে দেশের মানুষ ও প্রতিষ্ঠান যা আয় করছে, তার বেশির ভাগই খরচ করে ফেলছে, সঞ্চয় করছে কম। অর্থাৎ ভোগ ব্যয় বেড়ে গেছে। মূলত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় মানুষ খরচ বাড়াতে বাধ্য হয়েছে, কর্মসংস্থানের অভাবে অনেকের আয় কমেছে, আর্থিক খাতের অনিশ্চয়তার কারণে মানুষ ব্যাংকেও অর্থ কম রাখছে।

বেসরকারি খাকে ঋণ কমে যাওয়া হচ্ছে আরেকটি দুশ্চিন্তার সূচক। এ খাতে বৃদ্ধির হার হচ্ছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। টানা পাঁচ মাস ধরে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের কম থাকার কোনো তথ্য বাংলাদেশে নেই। এর অর্থ হচ্ছে ব্যক্তি খাত ব্যাংকঋণ নিচ্ছে কম, বিনিয়োগও করছে কম। অন্যদিকে বিদেশি বিনিয়োগও কমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।

বেসরকারি বিনিয়োগ কমেছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানিসংকট ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে। অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন, ব্যক্তি বিনিয়োগ না বাড়লে অর্থনীতির কোনো অর্জনই টেকসই হবে না। ফলে দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে আছে বিনিয়োগের ওপরেই।

বিশ্বব্যাংক গত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে শ্রমবাজারের এক করুণ চিত্র তুলে ধরেছে। সেখানে বলা হয়েছে, দুর্বল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ব্যবসায়িক পরিবেশের অবনতি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাবের কারণে অনেকেই শ্রমবাজার থেকে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হারও কমে গেছে। আর সবচেয়ে বেশি কমেছে নারীদের অংশগ্রহণের হার। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, সব মিলিয়ে দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অনুপাতে কর্মসংস্থানের হার প্রায় ২ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে গেছে। কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে সব খাতেই। তবে সবচেয়ে বেশি কমেছে সেবা খাতে (২.৬ শতাংশ), এরপরই রয়েছে কৃষি (২.৩ শতাংশ) এবং শিল্প খাত (০.৮ শতাংশ)। অর্থাৎ দেশে বেকারত্বও বেড়ে যাচ্ছে।

দেশে ৬০ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ হারিয়েছে গত ৯ মাসে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশে প্রায় ৪ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন, নিম্ন দক্ষতার শ্রমিকদের মজুরি ২ শতাংশ এবং উচ্চ দক্ষতার শ্রমিকদের মজুরি শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমে গেছে। এ সময় আয়বৈষম্যও বেড়ে গেছে। দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রতি পাঁচটি পরিবারের মধ্যে তিনটি পরিবারই আর্থিক চাপের মুখে পড়েছে, সঞ্চয় খরচ করে জীবন চালাচ্ছে। তবে প্রবাসী আয়ের ওপর নির্ভরশীলেরা তুলনামূলক ভালো অবস্থায় আছেন। বিশ্বব্যাংকের হিসাব হচ্ছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় এবার অতিরিক্ত ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে চলে যেতে পারে।

অর্থনীতির তত্ত্ব অনুযায়ী, একটি দেশে মোট দেশজ সঞ্চয় কমে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থনৈতিক সংকেত, যার প্রভাব বহুমাত্রিক। এর অর্থ হচ্ছে দেশের মানুষ ও প্রতিষ্ঠান যা আয় করছে, তার বেশির ভাগই খরচ করে ফেলছে, সঞ্চয় করছে কম।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। আইএমএফের শর্ত পূরণের অংশ হিসেবে বিনিময় হার প্রায় বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। ফলে গত ৯ মাসে ডলারের দর ১১৮ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১২২ টাকা হয়েছে। অর্থ সরবরাহের ক্ষেত্রেও কিছুটা রাশ টানা হয়েছে। কমানো হয়েছে সরকারি বিনিয়োগ। এর প্রভাব পড়েছে প্রবৃদ্ধিতে। অর্থনীতির গতি শ্লথ আছে। তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। আর সামগ্রিকভাবে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা অনেকটা বেড়েছে।

মূল্যস্ফীতি সামান্য কমলেও স্বস্তি দেওয়ার মতো অবস্থানে এখনো যেতে পারেনি। অথচ আশপাশের প্রায় সব দেশ এ ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে। যেমন ২০২৩ সালেও পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার ছিল প্রায় ৩১ শতাংশ। গত আগস্টে তা হয়েছিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। সেই মূল্যস্ফীতি এখন ২ শতাংশের কম। শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬৭ শতাংশ, সেই হার এখন শূন্যেরও নিচে।

এ অবস্থায় অর্থনীতির মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি কমানো আর ব্যক্তি বিনিয়োগ বাড়ানো। কেবল তাহলেই অর্থনীতিতে যে স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে, তা সাধারণ মানুষের উপকারে আনবে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, অর্থনীতির ভবিষ্যতের জন্য এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে এই স্থিতিশীলতাকে কীভাবে কাজে লাগানো হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আগেই বলে রেখেছেন যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এলে তবেই নীতি সুদহার কমানো হবে। সুতরাং অর্থনীতির ভবিষ্যৎ অনেকখানি নির্ভর করে আছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর। যদিও বিনিয়োগ কেবল সুদহারের ওপর নির্ভর করে না। সুদহার কমানোর পাশাপাশি জ্বালানিসংকটের সমাধান করতে হবে। ব্যাংক খাতের রক্তক্ষরণ খানিকটা কমলেও এখনো বড় ধরনের সংকটের মধ্যে রয়েছে। ফলে ঋণ পাওয়াও সহজ হবে না। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও তেমন উন্নতি এখনো হয়নি। মব সন্ত্রাস আর হতে দেওয়া হবে না—এ ঘোষণা বক্তৃতা বা বিবৃতিতেই বেশি দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় সব ধরনের সমস্যার সমাধান করে বিনিয়োগ বাড়ানোই হবে অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে প্রবৃদ্ধি টানা কমতে থাকায় মানুষের আয় বাড়ানোর আর কোনো বিকল্প নেই বলেই অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন।

মূল্যস্ফীতি সামান্য কমলেও স্বস্তি দেওয়ার মতো অবস্থানে এখনো যেতে পারেনি। অথচ আশপাশের প্রায় সব দেশ এ ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে। যেমন ২০২৩ সালেও পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতির হার ছিল প্রায় ৩১ শতাংশ। গত আগস্টে তা হয়েছিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। সেই মূল্যস্ফীতি এখন ২ শতাংশের কম। শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬৭ শতাংশ, সেই হার এখন শূন্যেরও নিচে।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের কাছে প্রশ্ন ছিল বাজেট এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। এ বিষয়ে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতি গত আট-নয় মাসে একধরনের স্থিতিশীল অবস্থার দিকে এগিয়ে গেছে। যদিও সাফল্যটা এসেছে মূলত বহির্বাণিজ্য খাত বা এক্সটারনাল খাতে। যেমন বৈদেশিক দায়দেনা পরিশোধ করা হয়েছে, রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বেড়েছে, টাকার মূল্যমান স্থির হয়েছে, রিজার্ভ বেড়েছে। তবে এখনো বড় সমস্যা রয়ে গেছে এর আর্থিক কাঠামোর ক্ষেত্রে। এর উদাহরণ দিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাজেট বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া যদি অব্যাহত থাকে, যদি গোপনে টাকা ছাপানো হয়, তাহলে তো সমস্যা আরও বাড়বে। সরকারের পক্ষ থেকে বাজেটে ব্যয়ের ক্ষেত্রে হয়তো সংযত হওয়ার একটা চেষ্টা থাকবে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে কোথায় কোথায় অর্থমন্ত্রী সংযত থাকবেন। একদিকে সরকারি কর্মকর্তাদের মহার্ঘ ভাতা দিয়ে, অন্যদিকে যদি কৃষকের ভর্তুকি কমানো হয়, তাহলেই তো সমস্যা। সব মিলিয়ে বলা যায়, বাজেটে প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ব্যয়ের ক্ষেত্রে সংযত ভাবটা আরও টেকসই ও সুষম করা। তার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই স্থিতিশীলতাকে প্রবৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়া। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সবশেষে বলেন, এখন প্রশ্ন হচ্ছে অর্থনীতি যে অনেকটাই স্থিতিশীলতার দিকে সংহত হয়েছে, তা ব্যক্তি বিনিয়োগ যথেষ্ট পরিমাণে বাড়াতে পারবে কি না। এখন মূল লক্ষ্যই হওয়া উচিত বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো।

Lading . . .