Advertisement
  • হোম
  • বাণিজ্য
  • ট্রাম্পের বাজেট বিলকে বিরক্তিকর ও জঘন্য আখ্যা দিলে...

ট্রাম্পের বাজেট বিলকে বিরক্তিকর ও জঘন্য আখ্যা দিলেন মাস্ক

প্রথম আলো

প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্করয়টার্স ফাইল ছবি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্করয়টার্স ফাইল ছবি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রস্তাবিত বাজেট ও কর বিলকে বিরক্তিকর ও জঘন্য আখ্যা দিয়েছেন ধনকুবের ও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ইলন মাস্ক। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই বিল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ও ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে এক মাস আগে বিলটি অনুমোদিত হয়। প্রস্তাবিত বিলে ট্রিলিয়ন বা লাখ কোটি ডলারের করছাড়, প্রতিরক্ষা ব্যয়ে অতিরিক্ত বরাদ্দ ও সরকারের ঋণসীমা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই বিল মোটেও মনঃপূত হয়নি ইলন মাস্কের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একাধিক পোস্টে মাস্ক লিখেছেন, ‘এই অবিশ্বাস্য ও অপচয়মূলক বিলের কারণে বাজেট ঘাটতি ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন বা আড়াই লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হবে। ফলত মার্কিন নাগরিকদের ওপর অমানবিক ঋণের বোঝা চাপবে। যারা এই বিলে ভোট দিয়েছে, তাদের লজ্জা হওয়া উচিত।’

২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করেছেন ইলন মাস্ক। নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। এরপর ট্রাম্প নির্বাচিত হলে ইলন মাস্ক প্রশাসনের ডিওজিই নামের পরামর্শক বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু এর মধ্যে ইলন মাস্কের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার কারণে তাঁর শত্রু তৈরি হয়। এমনকি টেসলার বিক্রয়কেন্দ্রে হামলা পর্যন্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের নীতিগত বিরোধও তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে তিনি গত ৩১ মে হঠাৎ পদত্যাগ করেন। বাজেট হ্রাসে কাজ করছিল সেই দল। প্রশাসন ছাড়ার পর এটাই মাস্কের প্রথম প্রকাশ্য ট্রাম্পবিরোধী অবস্থান।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন মুখপাত্র জানান, প্রেসিডেন্ট মাস্কের অবস্থান সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত। প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট বলেন, নানা সমালোচনা থাকলেও এ বিলের বিষয়ে ট্রাম্প এখন কঠোর অবস্থানে আছেন। এই বিলের নাম ‘বিগ বিউটিফুল অ্যাক্ট’।

বিলটির বিতর্কিত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে: ২০১৭ সালের করছাড়ের মেয়াদ বৃদ্ধি, ঋণসীমা বৃদ্ধির প্রস্তাব, অবৈধ অভিবাসীদের বিপুল হারে বহিষ্কারে অর্থায়ন, প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানো ও নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, যেগুলো ‘পোর্ক ব্যারেল’ হিসেবে পরিচিত। মার্কিন রাজনীতিতে ‘পোর্ক’ শব্দটির অর্থ হলো, বিশেষ নির্বাচনী স্বার্থে বরাদ্দ হওয়া অর্থ—এই অর্থ ব্যয়ে প্রায়ই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।

এই বিল ঘিরে রিপাবলিকান দলের ভেতরেই বিভাজন তৈরি হয়েছে। সিনেটে এ নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক হবে, এমন সম্ভাবনা আছে। কেন্টাকির রিপাবলিকান সিনেটর রান্ড পল স্পষ্ট জানিয়েছেন, ঋণসীমা বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকলে তিনি বিলটির পক্ষে ভোট দেবেন না। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, ‘কেন্টাকির মানুষ পলকে সহ্য করতে পারে না, তার মতামত পাগলামির শামিল।’

এদিকে রাজনৈতিক সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিয়স জানিয়েছে, ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ইলন মাস্কের স্টারলিংকের স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা একজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোম্পানি থেকে সরকারি সেবা নেবে, এটা স্বার্থের সংঘাত বলে মনে করে ট্রাম্প প্রশাসন।

বিল নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের নেতা চাক শুমার বলেছেন, ‘ইলন মাস্ক এই পুরো প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন। তিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজন। সেই তিনিও বলেছেন, বিলটি খারাপ। আমরা কল্পনাও করতে পারি না, এটি কতটা খারাপ হতে পারে।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা চান, আগামী ৪ জুলাইয়ের মধ্যে বিলটি কংগ্রেসে পাস হয়ে আইনে পরিণত হোক।

এদিকে সরকারি ব্যয় হ্রাসে অনড় অবস্থানে থাকা রিপাবলিকানদের মন জয়ে ট্রাম্প আলাদা পরিকল্পনারও কথা বলেছেন। তাঁর প্রস্তাব, ৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৯৪০ কোটি ডলার খরচ কমানো হবে। এই ব্যয় হ্রাস পরিকল্পনায় সবচেয়ে বেশি কমবে বিদেশি সহায়তা, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ও সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনপিআর ও পিবিএসের অর্থায়ন।

এদিকে বাজেট বিল নিয়ে মাস্ক রাজনৈতিক হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যারা আমেরিকান জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, আগামী নভেম্বরে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।’

Lading . . .