Advertisement

অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দিতে হবে

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১ জুন, ২০২৫

নৌশিন ফারজানা হুদা চৌধুরী
নৌশিন ফারজানা হুদা চৌধুরী

অন্তর্বর্তী সরকার আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবে। যতটুকু জেনেছি, এবারের বাজেটের আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের চেয়ে নতুন বাজেটের আকার ৭ হাজার কোটি টাকা কম হতে পারে। অর্থ উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহল থেকে বলা হচ্ছে, এবারের বাজেট হবে জনকল্যাণমুখী। যদি তা–ই হয় তাহলে প্রশ্ন, অন্যান্য আর্থিক বছরের বাজেটের মতো এবারের বাজেটেও কি শিক্ষা খাত উপেক্ষিত থাকবে নাকি এবারের বাজেটে সরকার এই খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেবে?

জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেসকোর পরামর্শ অনুযায়ী, মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির অন্তত ৪ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সরকারি ব্যয়ের ১৫ শতাংশ শিক্ষা খাতে খরচ করা উচিত। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩ সালে শিক্ষা খাতে আমাদের ব্যয় ছিল জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বৈশ্বিকভাবে এই বরাদ্দ চতুর্থ সর্বনিম্ন। শিক্ষা খাতে অপ্রতুল ব্যয় আমাদের দক্ষ জনশক্তি তৈরির পথে এক বিরাট বাধা। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর শিক্ষা শেষ করে এ দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন অনেক শিক্ষক। তাঁদের অভিজ্ঞতা ও মতামত থেকে জানা যায়, উচ্চশিক্ষা খাতে গবেষণা ও শিক্ষা উপকরণের ব্যবহারে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। অপ্রতুল শিক্ষা বরাদ্দ নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বৈশ্বিক মানে সামনের দিকে আসতে পারবে না। তাই উচ্চশিক্ষাসহ সামগ্রিকভাবে শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে বরাদ্দ করা অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

বাজেটকে সামনে রেখে আরেকটি প্রত্যাশা রয়েছে। দেশে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এই মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে অনেক বেশি দুঃসহনীয় করে তুলেছে। তাই বাজেটের আকার কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিরও লাগাম টেনে ধরতে হবে। চলতি বছর প্রত্যাশা অনুযায়ী, কর আদায় না হওয়ায় বাজেটের অর্থ জোগান সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে সরকারকে অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক প্রকল্পগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলো বাদ দিতে হবে। পাশাপাশি অত্যন্ত জরুরি ও প্রয়োজনীয় প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে এবারের বাজেটকে বাস্তবমুখী বলে দাবি করা হচ্ছে। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে উপলব্ধি করতে হবে, শিক্ষা খাত একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সব খাতের সঙ্গে শিক্ষা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই সরকারের উচিত হবে এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো। এই বরাদ্দের ব্যয় যেন সুষ্ঠুভাবে ও সুপরিকল্পিতভাবে হয়, সেদিকেও লক্ষ রাখা জরুরি।

নৌশিন ফারজানা হুদা চৌধুরী , সহকারী অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

Lading . . .