প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে সাগরে মাছ ধরার সময় আরাকান আর্মির ধরে নিয়ে যাওয়া ১৮ জেলে দেশে ফিরেছেন। আরাকান আর্মির কাছ থেকে কৌশলে একটি ট্রলারসহ পালিয়ে এসেছেন বলে দাবি ওই জেলেদের। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে এই জেলেরা নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল দুপুরের দিকে একটি ট্রলারে তাঁরা টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে পৌঁছালে কোস্টগার্ড তাঁদের হেফাজতে নেয়। পরে পুলিশ যাচাই–বাছাই শেষে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
ফিরে আসা জেলেরা জানান, আরাকান আর্মি মঙ্গলবার ধাওয়া দিয়ে বাংলাদেশি জেলেদের পাঁচটি ট্রলার আটক করে। এসব ট্রলার অস্ত্রের মুখে সন্ধ্যার পর মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাঁদের ট্রলারে ১৮ জন ছিলেন। এর মধ্যে ৮ জনকে অন্য একটি ট্রলার থেকে আনা হয়েছে। আটক ট্রলারগুলোর পেছনে আরাকান আর্মির সদস্যরা কয়েকটি স্পিডবোট নিয়ে অবস্থান করছিলেন। অন্ধকারে হঠাৎ আরাকান আর্মির সদস্যদের স্পিডবোট তাঁদের ট্রলারের কিছুটা সামনে চলে যায়। এ সময় তাঁরা উল্টো দিকে ট্রলার ঘুরিয়ে চলে এসেছেন।
ফিরে আসা জেলেদের একজন দিল মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের ট্রলারে আরাকান আর্মির দুজন সদস্যকে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে উল্টো দিকে ফেরার বিষয়টি তাঁরা বুঝতে পেরে সাগরে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে মিয়ানমারের দিকে চলে গেছেন।’
যে ট্রলারটিতে জেলেরা ফিরেছেন সেটি টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের মোহাম্মদ হাসানের। তিনি শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া ঘাটের ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘১০ জন জেলে নিয়ে আমার ট্রলারটি সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিল। আরাকান আর্মির সদস্যরা সেখানে আরও ৮ জেলেকে তুলে দিয়ে অস্ত্রের মুখে মিয়ানমারে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে জেলেরা পালিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছেন।’
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, আরাকান আর্মির কাছ থেকে পালিয়ে আসার পর ১৮ জেলেকে কোস্টগার্ড পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তাঁদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসব জেলের কাছ থেকে মিয়ানমারের জলসীমার কাছাকাছি মাছ শিকারে না যাওয়ার বিষয়ে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।