Advertisement

রায়পুরে ৭ হাজার চরবাসীর দুঃখ একটি সেতু

যুগান্তর

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ছবি: যুগান্তর
ছবি: যুগান্তর

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চরবংশি ইউপির পশ্চিম চর ঘাসিয়া গ্রামের চান্দার খাল এলাকায় একটি সেতুর জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ৭ হাজার চরবাসী। বাধ্য হয়ে দুর্গম চরবাসী খালের পানি সাঁতরে পারাপার হতে হয়। আতঙ্কে শিশু শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় শিক্ষকরা।

মেঘনা নদীর ওপারের চরবাসির দুর্ভোগ লাঘবে ২০২১ সালে তিন লাখ টাকা ব্যায়ে স্থানীয়রা চাঁদা তুলে ওই খালের ওপর অস্থায়ীভাবে পাটাতনটি নির্মাণ করেছিলেন। গত এপ্রিল মাসে খালের অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে পশ্চিমপাড়ের অংশ ঝুঁকিপূর্ণ পাটাতনটি ভেঙে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শতাধিক শিক্ষার্থীসহ বাসিন্দারা।

পশ্চিম চরঘাসিয়া গ্রামবাসী জানান, উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের অন্যসব ওয়ার্ডের চেয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডের আয়তন বড়। এখানে ভোটার সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত হাজার। এই ওয়ার্ডের চান্দার সংযোগ খালের দুই পাড়ের লোকজন বসবাস করেন। এর পশ্চিম অংশে চর ঘাসিয়া, চর ইন্দুরিয়া, চর জালিয়া, নতুন কানিবগার চর ও মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ের বরিশালের হিজলার কিছু মানুষ এ পথে যাতায়াত করে। ফসলের জমি দিয়ে খাল পার হয়ে চরবংশীর খাসেরহাট ও রায়পুরে আসা-যাওয়া করতে হয়। মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয় কাঁচা রাস্তা।

চরের বাসিন্দা আমির মাঝি (৫৬) বলেন, ‌‘৬ মাস আগে খালের ওপর তৈরি সাঁকোটি জরাজীর্ণ হয়ে গেলে চরবাসীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হতো। অনেক শিশু ও নারী সাঁকো থেকে পড়ে আহত হয়েছেন। এলাকার লোকজন চাঁদা তুলে খালের ওপর পাটাতন তৈরি করেন। কিন্তু নদীর জোয়ারের পানি এ খাল দিয়ে ঢোকার সময় পাটাতনের একাংশ ধসে পড়ায় পুরোপুরি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে ভাঙা অংশে গাছ বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

স্থানীয় সোহাগ গাজি (৪০) বলেন, ‘গ্রামের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় চরবাসীদের কৃষি পণ্য নিয়ে কাঁচা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয়। চরের জমিতে ব্যাপকহারে সয়াবিন, ধান ও সবজি আবাদ হয়। তবে কৃষিপণ্য ঘরে তুলতে বা বাজারে নিতে পরিবহন পাওয়া যায় না। কাঁচা রাস্তা সলিং এবং খালের ওপর সেতু নির্মাণ করলে চরাঞ্চলবাসিদের উপকার হতো।’

চান্দারখাল এলাকার রিয়াজ হোসেন বলেন, এই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব খারাফ। ‘চরের কোনো মানুষ অসুস্থ হলে সহজে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের কাছে নেওয়া যায় না। রোগীদের কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়। সেতু না থাকায় আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।’

রায়পুরে পশ্চিম চর ঘাসিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহির আলম বলেন, ‘ভেলা দিয়ে খাল পার হওয়ার সময় আমিও পানিতে পড়ে গিয়েছিলাম। আতঙ্কে বিদ্যালয়ে ছোট শিক্ষার্থীরা আসতে চায় না। অনেকে সাঁতরে এসে পাড়ে জামাকাপড় বদল করে। খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য মেম্বারকে বলেছিলাম। কোন কাজ হয়নি।

রায়পুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সুমন মুন্সি বলেন, ওই স্থানে একটি ব্রিজ দরকার। সরেজমিন গিয়ে দেখব। জনদুর্ভোগে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Lading . . .