প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

শেষ কয়েক বছরে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ যেন ‘যত গর্জে, তত বর্ষে না’। ম্যাচের আগে বিস্তর আলোচনার ঝড়, কিন্তু দিনশেষে ফলাফল একই– ভারতের জয়। সেটাও আবার যেন তেন জয় নয়, ভূমিধস জয়। এবারও পরিস্থিতিটা বদলাল না। ম্যাচের আগে এত্তোএতো আলোচনার ঝড় শেষে ফল ভারতেরই জয়, পাকিস্তান শেষ পাঁচ ম্যাচের মতো এবারও পাত্তা পেল না। ব্যাট হাতে কষ্টেসৃষ্টে তুলতে পারল ১২৭ রান, এরপর কোনো রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা না গড়ে হারল ২৫ বল হাতে রেখে, ৭ উইকেটের ব্যবধানে।
এবার হিসেবটা ভিন্ন হতে পারে, এমনটাই মনে করা হচ্ছিল। কারণ পরিস্থিতিটা ছিল ভিন্ন। মাসদুয়েক আগে পেহেলগাম আক্রমণ, এরপর ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’, তার জবাবে পাকিস্তানের ‘অপারেশন বুনইয়ান-উম-মারসুস’ এর পর এটাই ছিল দুই দলের প্রথম সাক্ষাৎ। বিষয়টা থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারত পাকিস্তান।
সেসব যদি একপাশেও রাখা হয়, তারপরও পাকিস্তানের অবস্থাও তো বেশ ভালো ছিল। এশিয়া কাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়, তার চেয়েও বড় কথা একটা দল দাঁড় করিয়েছিলেন কোচ মাইক হেসন। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে মহারণে আর সেটার প্রমাণ পাকিস্তান দিতে পারল কই? সেই তো অসহায় আত্মসমর্পণই করল!
ম্যাচের প্রথম বল থেকেই পাকিস্তানের বিপর্যয় শুরু। হার্দিক পান্ডিয়ার দ্বিতীয় বলেই সাইম আইয়ুব ফেরেন শূন্য রানে। এরপর জসপ্রিত বুমরাহ আঘাত হানেন, আর মাঝের ওভারগুলোতেও পাকিস্তানকে হাত খুলতে দেননি ভারতীয় স্পিনাররা।
পাকিস্তানের হয়ে একমাত্র ভরসা ছিলেন সাহিবজাদা ফারহান। ৪০ বলে ৪০ রান করেছেন বটে, কিন্তু তার ইনিংস ছিল বড্ড ধীরগতির। শেষ দিকে শাহীন শাহ আফ্রিদি ঝড় তুললেন, মাত্র ১৬ বলে চার ছক্কায় ৩৩ রান করে দলকে টেনে নেন ১২৭ পর্যন্ত।
১২৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৫.৫ ওভারে জয় তুলে নেয় সূর্যকুমার যাদবের দল। ২৫ বল ও সাত উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচ শেষ করে দেয় তারা। শেষটা হয়েছে দুর্দান্তভাবে, পাকিস্তানি স্পিনার সুফিয়ান মুকিমকে মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করেন ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব।
৩৭ বলে ৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন সূর্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে এটিই তার সেরা ইনিংস। অন্য প্রান্তে ৭ বলে ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন শিবম দুবে। এ জয় দিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সুপার ফোরে খেলার পথ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে ভারত। আগামীকাল সংযুক্ত আরব আমিরাত ওমানকে হারালে আনুষ্ঠানিকভাবেই নিশ্চিত হবে ভারতের সুপার ফোরে খেলা।
শুরুর দিক থেকেই ভারতের ওপেনাররা আক্রমণাত্মক ছিলেন। শুবমান গিল (২২) ও অভিষেক শর্মা (৩১) দুজনেই সাইম আইয়ুবের শিকার হলেও ভালো ভিত্তি গড়ে দেন। এরপর তিলক ভার্মা ৩১ রান করে দলকে এগিয়ে নেন। শেষ পর্যন্ত সূর্য-দুবের জুটিতে জয় নিশ্চিত হয় সহজেই।