ফতুল্লাতে ক্রিকেট ফেরাতে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বোর্ড, ৪ প্রতিশ্রুতি বিসিবি সভাপতির
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট, ২০২৫

ফতুল্লা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সংস্কার নিয়ে কথা কম হয়নি, নানান সময় অনেকেই শুনিয়েছেন আশার বাণী। তবে সেই আশা আদৌ পূরণ হয়নি। এর মাঝে ফের নতুন আশার বাণী শোনালেন বিসিবি সভাপতি।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক কীর্তির সময়ের সাক্ষী নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ২০০৬ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ গড়ায়। একই বছরে এখানে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচও খেলে বাংলাদেশ।
এছাড়া ২০১৪ সালের এশিয়া কাপ, ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ ও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালসহ অনেক স্মরণীয় ম্যাচের সাক্ষী এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু।
২০১৬ সালের পর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়নি ফতুল্লায়, ২০২০ সালে হয়েছে শেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ। অবশ্য হওয়ার কোনো অবস্থাও নেই। একটা সময় তো মাঠের বেশিভাগ ডুবে থাকত পানির নিচে। এরপর বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে ভেতরের ও বাইরের কিছু অংশ। তবে এখনো মাঠে প্রবেশদ্বারে পানি জমা। ডানপাশের মাঠ কচুরিপানার তলে। মূল ফটক দেখে বুঝার উপায় নেই ভেতরে কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছে।
এর আগে নাজমুল হাসান পাপনের বোর্ড একাধিকবার মাঠ সংস্কার, খেলা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু কথার সাথে কাজের কোনো মিল থাকেনি। এখনো অচল সব, নেই চেয়ার। ছাওনিগুলোও খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
এমতাবস্থায় রুগ্ন এই মাঠ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। রোববার তিনি গিয়েছিলেন ফতুল্লা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে। যেখানে গিয়ে মাঠের এই হাল দেখে প্রায় কেঁদে ফেলছিলেন বোর্ড সভাপতি।
মাঠ পরিদর্শন শেষে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন তিনি এভাবে যে- ‘ফতুল্লা মাঠটা দেখে এলাম। আমার খুব কান্না পাচ্ছিল। এই মাঠে শাহরিয়ার নাফীস সেঞ্চুরি করেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল হয়েছিল। এশিয়া কাপের খেলা হয়েছিল। সেই মাঠটার অবস্থা অত্যন্ত করুণ।’
‘গতকালকে (শুক্রবার) আপনাদের নারায়ণগঞ্জের ছেলে জিসান আলম একটা ফিফটি করেছে টপ এন্ড সিরিজে। আর আজকে দেখলাম জিসান যেখানে অনুশীলন করে, এটা আমি মেলাতে পারছি না। সে ওয়ার্ল্ড স্ট্যান্ডার্ডে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিফটি করছে আর তার অনুশীলনের ব্যবস্থা এখানে কী!’ যোগ করেন তিনি।
স্থানীয় কোচ জাহাঙ্গীর তিনটি উইকেট নিয়ে অনুশীলন করাচ্ছেন স্থানীয়দের। যা আমিনুলের কাছে স্রেফ অবিশ্বাস্য। বোর্ডের কোষাগারে শত কোটি টাকা। অথচ আগামীর ক্রিকেটাররা তৈরি হচ্ছেন তিনটি উইকেটে? বিষয়টা মানতে পারছেন না আমিনুল।
এই মাঠে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট ফেরার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমিনুল বলেন, ‘জাহাঙ্গীর খুব গর্ব করছিল, আমার এখানে ৩টা উইকেট আছে। যখন একজন জেলার কোচ ৩টা উইকেটে খুশি হয়ে যায় এবং সেখান থেকে জিসান আলম বা রনি তালুকদারের মতো ক্রিকেটার উঠে আসে, এটা বলব অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার। এখানে ৩টা কেন, ৩০টা উইকেট থাকা উচিত।’
‘আমি কথা দিচ্ছি, আমার সাথে বিসিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (নাজমুল আবেদিন ফাহিম) আছেন, আমরা প্রথম অনুশীলন সুবিধা বাড়ানোর কাজ করব। এখানে ৩টা উইকেট কেন থাকবে। অন্তত ১৫-২০টা উইকেট থাকা উচিত। সেই চেষ্টা আমরা করব।’
এমনকি এই মাঠ কেন্দ্র করে একটি হাইপারফরমেন্স সেন্টার করার স্বপ্নও দেখেন আমিনুল। বলেন, ‘আমরা যদি একটা ছোটখাটো কম খরচের ইনডোর করতে পারি ও আউটডোর সুবিধা বাড়াতে পারি, তাহলে খুব অনায়াসে এখানে একটা হাই পারফরম্যান্স সেন্টার করা সম্ভব।’
এরপর তিনি চারটি প্রতিশ্রুতি দেন, যেগুলো নিয়ে বিসিবি কাজ করবে। বলেন, ‘এই ৪টা প্রতিশ্রুতি- ফ্যাসিলিটি, গ্রাউন্ড, কোচ ডেভেলপমেন্ট ও হাই পারফরম্যান্স সেন্টার, এই ৪টা কাজ আমরা ইনশাআল্লাহ্ শুরু করব।’