Advertisement

তালিবানের ভয়ে সূর্যাস্তের আগে খেলা বন্ধ করে দিতেন, আজ সেই ক্রিকেটার আফগান দলের মেরুদণ্ড

এই সময়

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আজ়মতউল্লাহ ওমরজ়াই এখন আফগানিস্তান ক্রিকেটের প্রধান অস্ত্র।,ছবি: ACB এক্স
আজ়মতউল্লাহ ওমরজ়াই এখন আফগানিস্তান ক্রিকেটের প্রধান অস্ত্র।,ছবি: ACB এক্স

একটা সময় তালিবানের ভয় ছিল তাঁর ছায়াসঙ্গী। সন্ধ্যা নামলেই ক্রিকেট বন্ধ— কারণ জীবন ছিল অনিশ্চয়তার মাঝে। সেই আজ়মতউল্লাহ ওমরজ়াই এশিয়া কাপ ২০২৫-এর প্রথম ম্যাচে যেন নিজের অতীতকে ছাপিয়ে গিয়েছেন। মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে যেন ঘোষণা করেন, ‘আমি শুধু খেলতে আসিনি, ইতিহাস লিখতে এসেছি।’

ওমরজ়াই বড় হয়েছেন নাঙ্গারহারের রুক্ষ রাস্তায়, যেখানে দিনের আলোয় ক্রিকেট ছিল তাঁর একমাত্র মুক্তির স্বাদ। কিন্তু সূর্য ডুবে গেলে, তাঁর এবং ভাইদের জন্য বাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে যেত। কারণ? তাঁদের এলাকা ছিল তেহরিক-ই-তালিবানের শক্ত ঘাঁটি, যেখানে প্রতি মুহূর্তে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চলছিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

Azmatullah Omarzai on childhood cricket

২০১৪ সালে, আফগানিস্তান যখন প্রথম বারের মতো এশিয়া কাপে বাংলাদেশকে হারায়, তখন ১৪ বছরের ওমরজ়াইয়ের চোখে ফুটে ওঠে এক স্বপ্ন। ম্যাচ শেষে তাঁর বাবা জিজ্ঞাসা করেন, ‘তুই বড় হয়ে কী হতে চাস?’ ওমরজ়াই এক মুহূর্তও না ভেবে বলেছিলেন, ‘আমি ক্রিকেটার হতে চাই। কারণ ক্রিকেটই আমার সব কিছু।’

২০২১ সালে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের ইউটিউব চ্যানেলে ওমরজ়াই স্মৃতির পাতা ওল্টাতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘সেই দিনটা আমি কখনও ভুলব না। আমরা সবাই মিলে ম্যাচটা দেখছিলাম। আফগানিস্তান জেতার পর, আমার বাবা, যিনি খেলাধুলা নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না, তিনিও আনন্দে ভেসে গিয়েছিলেন। আফগানিস্তানের প্রতিটি চার-ছক্কার পর তিনি বিস্মিত হয়ে জানতে চাইছিলেন, এখন কী হলো? তিনি এতটাই উচ্ছ্বসিত ছিলেন যে, সন্ধ্যার পর বাইরে যাওয়া নিষেধ থাকা সত্ত্বেও, আমাদের উদ্‌যাপনের জন্য গাড়ির চাবি হাতে তুলে দেন।’

Azmatullah Omarzai on childhood cricket

সেই ওমরজ়াই এখন আফগানিস্তান ক্রিকেট টিমের মূল স্তম্ভ। মঙ্গবার এশিয়া কাপে হংকংয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে ব্যাট এবং বল হাতে দলকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। চাপের মাঝে দলকে ভরসা দেন। ওমরজ়াই যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন ১০০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছে আফগানিস্তানের। টেনশনের চোরাস্ত্রোত দলের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। সেই পরিস্থিতিতে ২১ বলে ৫৩ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ২৫২+, হাঁকান ৫টি ছক্কা! সেদ্দিকুল্লা অটলের সঙ্গে তাঁর ৮২ রানের পার্টনারশিপই ম্যাচের রং বদলে দেয়। বল হাতেও তিনি সফল। ২ ওভারে ৯টি ডট বল, মাত্র ৪ রান দিয়ে ১টি উইকেট তুলে নেন ওমরজ়াই।

Lading . . .