৫ বলে ৫ উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়লেন আয়ারল্যান্ডের ক্যাম্ফার
প্রকাশ: ১৫ জুলাই, ২০২৫

লক্ষ্য ছিল ১৮৯ রান। তবে ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল নর্থ ওয়েস্ট ওয়ারিয়র্স। মুনস্টার রেডসের ভাবনায় তখনও কমপক্ষে ৩০ রানের জয় নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকার পরিকল্পনা। পরিস্থিতি দেখে এটিই ছিল স্বাভাবিক ফলাফল।
কিন্তু এরপর যা ঘটল, তা ক্রিকেট ইতিহাসে স্বপ্নকেও হার মানায়। এক রান যোগ করতে না করতেই অলআউট হয়ে গেল ওয়ারিয়র্স! আর এই অবিশ্বাস্য কাণ্ডের নায়ক আয়ারল্যান্ডের অলরাউন্ডার কার্টিস ক্যাম্ফার। পেশাদার ক্রিকেটে প্রথম বোলার হিসেবে পাঁচ বলে পাঁচ উইকেট নেওয়ার অনন্য রেকর্ড গড়ে ফেললেন তিনি।
১২তম ওভারের শেষ বল থেকে শুরু হয় ক্যাম্ফারের জাদু। জ্যারেড উইলসনকে ইনসুইং ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন তিনি। পরের বলেই (১৩তম ওভারের প্রথম বল) গ্রাহাম হিউম এলবিডব্লু হয়ে ফিরেন। ওয়ারিয়র্স তখন কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়।
আরো পড়ুন : মাঠে নেমেই ফিফটি হাঁকালেন সাকিব
তবে এমন সময়ে অনেক বোলারই হ্যাটট্রিকের কথা ভুলে যান, ক্যাম্ফারও ভুলেছিলেন। কিন্তু তিনি কাজটা ঠিকই শেষ করেন। ১৪তম ওভারের প্রথম বলেই অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনকে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান। হ্যাটট্রিক পূর্ণ হওয়ার পর সম্বিত ফিরে পান— ‘আমি তো হ্যাটট্রিকই করে ফেললাম!’
কিন্তু থামেননি এখানেই। একই ওভারে রবি মিলার অফ স্টাম্পের বাইরের বল ছুঁতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ধরা পড়েন। এরপরের বলেই জশ উইলসনের স্টাম্প উপড়ে দেন ক্যাম্ফার। মাত্র পাঁচ বলেই পাঁচ উইকেট অবিশ্বাস্য এই রেকর্ডের মালিক হয়ে যান তিনি।
ম্যাচ শেষে ক্যাম্ফার বলেন, ‘ওভার শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে নিজেও ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কী ঘটছে। তবে পরিকল্পনা ঠিকই রেখেছিলাম। আরেকজন ব্যাটার থাকলেও ছয় বলে ছয় উইকেট হতো কিনা, সেটা জানি না। তবে যা হয়েছে, তাতেই ভীষণ খুশি।’
আঙুলের চোট কাটিয়ে এটি ছিল তাঁর দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে তিনি ৩৫ বলে ৫৭ রান করলেও বল হাতে নেননি। এই ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৪ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন এবং বল হাতে গড়লেন ইতিহাস।
উল্লেখযোগ্য, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে চার বলে চার উইকেট নেওয়ার কীর্তি ক্যাম্ফারের আগেই ছিল। তবে পাঁচ বলে পাঁচ উইকেট নেওয়া পুরুষ ক্রিকেটে এই প্রথম। নারী ক্রিকেটে অবশ্য জিম্বাবুয়ের অলরাউন্ডার কেলিস ন্ডলোভু ২০২৪ সালে জিম্বাবুয়ে অনূর্ধ্ব–১৯ দলের হয়ে একই কীর্তি গড়েছিলেন।
তবে পেশাদার পুরুষ ক্রিকেটে এই কীর্তির একমাত্র নাম এখন কার্টিস ক্যাম্ফার। ক্রিকেট ইতিহাসে তাঁর নাম থাকবে অনন্য এক অধ্যায়ে।