প্রকাশ: ২ জুলাই, ২০২৫

নরসিংদীর রায়পুরা ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারীর কক্ষে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে শামীম নামে এক মাদকসেবীর বিরুদ্ধে।
বুধবার (০২ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারীর (কাম কম্পিউটার অপারেটর) কক্ষের ভেতরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যবসায়ীর নাম মোহাম্মদ শাহিন (৪২)। তিনি পার্শ্ববর্তী মির্জানগর ইউনিয়নের মেজেরকান্দী গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে ও হাসনাবাদ বাজারের একজন স্যানিটারি ব্যবসায়ী।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুপুর দুইটার দিকে শাহিন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ‘তাহসিন ইলেকট্রনিক অ্যান্ড স্যানিটারি’ ট্রেড লাইসেন্স করতে আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ যান। সেখানে হিসাব সহকারীর কক্ষে বসে ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত কথা বলার সময় হঠাৎ করে শামীম একটি ধারালো দা নিয়ে হিসাব সহকারীর কক্ষে প্রবেশ করে শাহিনকে কোপাতে থাকে।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হিসাব সহকারী কামাল হোসেনসহ অন্যরা ঘাতক শামীমকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ ছাড়া শামীমের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হিসাব সহকারীসহ আরও দুজন আহত হয়। পরে এলাকাবাসী ঘাতক শামীমকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় শাহিনকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘাতক শামীম একই ইউনিয়নের হাসনাবাদ পশ্চিমপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে। সে এলাকায় মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত।
এ ব্যাপারে আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কামাল হোসেন বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে শামীম মাতাল অবস্থায় চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। এ সময় ট্রেড লাইসেন্স করতে আসা শাহিন ও আমি শামীমকে এসব করতে নিষেধ করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করতে এলে আমরা পরিষদের একটি রুমে আশ্রয় নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেই। এ সময় একটি বাঁশ নিয়ে সে দরজায় সজোরে আঘাত করে তা ভাঙার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে চলে যায়।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলে রুমের দরজা খোলে স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম শুরু করি। বিকাল ৩টার দিকে হঠাৎ শামীম ধারালো দা নিয়ে আমার রুমে ঢুকেই শাহিনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় আমিসহ অন্যরা হামলাকারীকে প্রতিহত করার চেষ্টা করলে দুজন আহত হই। এ অবস্থায় সে শাহিনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় শামীমকে আটক করা হয়।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে যাই এবং ঘাতক শামীমকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিহত শহিনের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।