প্রকাশ: ১১ আগস্ট, ২০২৫

২০০৯ সালে ‘চ্যালেঞ্জ’ সিনেমার মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয়েছিল অভিনেতা দীপক অধিকারী দেব ও অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলি জুটির। এরপর তারা একসঙ্গে উপহার দিয়েছেন ‘পরাণ যায় জ্বলিয়া রে’, ‘রোমিও’, ‘খোকাবাবু’, ‘খোকা ৪২০’-এর মতো অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা।
একটা সময় এ তারকা জুটির রসায়ন বিচ্ছেদে রূপ নেয়। দুজন দুদিকে গা ভাসিয়ে দেন। এরপরই আটকা পড়ে তাদের শেষ সিনেমা 'ধূমকেতু'। দীর্ঘ বিরতির পর আবার সেই সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৪ আগস্ট। এ সিনেমা পর্দায় আসার আগেই অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সিনেমাপ্রেমী দর্শকরা।
এর আগে ৪ আগস্ট ছিল 'ধূমকেতু'র ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রায় ১০ বছর পর একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল দেব ও শুভশ্রী গাঙ্গুলিকে। তাদের গলায় ধরা পড়েছিল অভিমান। সবশেষে তারা একে অপরের সঙ্গে নাচ করেন। তাদের এ অনুষ্ঠান ঘিরে তোলপাড় হয় সামাজিক মাধ্যম।
কটাক্ষের তীর ধেয়ে আসে দেবের প্রেমিকা অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র ও শুভশ্রীর স্বামী নির্মাতা রাজ চক্রবর্তীর দিকে, যা মোটেও কাম্য ছিল না। এবার সেই ব্যক্তিগত আক্রমণ নিয়ে কথা বললেন দেব।
গতকাল রোববার রানা সরকারের প্রোডাকশন হাউসের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বাংলা বিনোদন জগতের উজ্জ্বল সব তারকা উপস্থিত ছিলেন। হাজির ছিলেন দেবও। সেখানেই অভিনেতা এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।
আম অর্পিতা চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেব বলেন, এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এখন ভালোটাকে কেউ ভালোভাবে দেখতে চায় না। প্রতিটা লাইন নিয়ে কাটাছেঁড়া করে। তবে রাজ আর রুক্মিণী খুব ভালোভাবে এই দিকটা সামাল দিচ্ছে। তিনি বলেন, আসলে আমাদের পরিবারই কিন্তু আমাদের বড় সাপোর্ট। আমি শুভশ্রীকে শ্রদ্ধা করি। আমি চাই ও ভালো থাকুক। একটা সিনেমা কিংবা প্রোমোশন এটা বদলে দিতে পারে না। আর আমরা এমন কিছু করিনি, যার মূল্য হবে এটি।
অভিনেতা বলেন, সিনেমাপ্রেমী দর্শকরা দেব-শুভশ্রীকে যেভাবে দেখতে চেয়েছিল, সেটাই আমরা রি-ক্রিয়েট করার চেষ্টা করেছিলাম। একটা ওয়ার্ল্ড তৈরি করছিলাম যাতে নস্টালজিয়ার বিষয়টি ফিরে আসে।
দেব বলেন, কিন্তু যখন ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হচ্ছে, সেটি সত্যিই খারাপ লাগছে। আমার গায়ে লাগে না। তবে আমার মনে হয় যে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা ঠিক নয়। কারণ প্রত্যেকের কন্টিবিউশন আছে। যদি আমি রুক্মিণীর কথা বলি, ‘ধূমকেতু’র পেছনে ওর অনেক অবদান রয়েছে। ও আমার সঙ্গে রিলও বানিয়েছে। তিনি বলেন, আজ যখন আমার সঙ্গে দেখা হলো ও আমাকে বলল— খুব ভালো ওপেনিং হচ্ছে। আমি তোমার জন্য গর্বিত।
তিনি আরও বলেন, অভিনেতা রাজের সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়নি, কিন্তু শুভকে দেখে বোঝা যায় যে, ও কতটা খুশি। আর পরিবারের সাপোর্ট না পেলে ওই আনন্দটা আসে না।
দেব বলেন, আমরা সেদিন অভিনয় করিনি। আমার দর্শক, যারা দেব-শুভশ্রীকে বানিয়েছে, তারা যেন পূর্ণ হন সেই চেষ্টা করেছি। আর যদি অপমান হয়ে থাকে, তাহলে আমি শুভশ্রী, রাজ, রুক্মিণীর কাছে দুঃখিত। তবে এটা হয়েছে।
এ অভিনেতা বলেন, কিন্তু সামাজিক মাধ্যম থেকে এর থেকে বেশি আর কী আশা করা যায়। আসলে মানুষকে নিয়ে যত বিরূপ মন্তব্য করবে, তত তাদের ফলোয়ার বাড়বে। কিন্তু এই ফলোয়ার নিয়ে লাভটা কী?
তিনি বলেন, আমি জানি নেগেটিভ জিনিসও অনেক দূর পর্যন্ত যায়। তবে পজিটিভ বিষয়ের একটা ভিত্তি আছে, একটা আনন্দ আছে। কম শেয়ার হলো, কম লাইক হলো কিন্তু তার মধ্যেও একটা আনন্দ আছে যে, আমি কোনো নোংরামি করলাম না।
দেব বলেন, আমরা এত ঝগড়া-ঝামেলা মিটিয়ে ওদিন মঞ্চে ছিলাম, এখনো আছি। তবে আমরা জানি ছবিটা কী। আমাদের নিয়ে অনেকের মধ্যে অনেক নেগেটিভিটি ছিল। তাই আমরা ছবিটা মুক্তির আগে সবার সামনে আসতে চেয়েছিলাম। শুভ অনেক জায়গায় বলেছে যে, দেবের জন্য চার বছর…।
তা ছাড়া ‘সন্তান’, ‘খাদান’ সবটা নিয়ে একটা নেগেটিভ বিষয় তৈরি হয়েছিল। আমি আর শুভশ্রী ভেবেছিলাম যে, সেই নেগেটিভ ইমেজটা মুছে ফেলতে হবে। দেব-শুভশ্রীর মধ্যে যে পজিটিভিটি আছে, আমাদের পরিবারের মধ্যে যে পজিটিভি আছে, সেটাকে মানুষের সামনে নিয়ে আসতে হবে। আর এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন আমাদের পরিবার আমাদের পাশে থাকবে। আমি রাজ ও রুক্মিণীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, ওরা যেভাবে পুরো বিষয়টি হ্যান্ডেল করেছে।
শেষে ট্রলারদের উদ্দেশ্যে অভিনেতা বলেন, যারা যারা ট্রল করছেন চালিয়ে যান, কারণ তাতে আমার ছবিই আরও বড় হচ্ছে।