Advertisement
  • হোম
  • বিনোদন
  • দীপিকার পর নতুন মায়েদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মুখ খুললেন ...

দীপিকার পর নতুন মায়েদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মুখ খুললেন রাধিকা

প্রথম আলো

প্রকাশ: ১৪ জুন, ২০২৫

রাধিকা আপ্তে। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে
রাধিকা আপ্তে। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে

মা হওয়ার পর অভিনেত্রীদের জন্য কাজে ফেরা সহজ নয়। কিছুদিন আগেই মা হওয়ার পর কর্মঘণ্টা নির্ধারণসহ নানা বিষয় নিয়ে অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন ও নির্মাতা সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। এর মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন অজয় দেবগন, কাজল, সাইফ আলী খান ও মণিরত্নম। এবার নতুন মায়েদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বললেন বলিউড অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে সবিস্তার কথা বলেছেন তিনি।

রাধিকা গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো মা হন। তাঁর মা হওয়ার ব্যাপারটি সামনে আসে ‘সিস্টার মিডনাইট’ ছবির প্রিমিয়ারে।

ছবির প্রিমিয়ার উপলক্ষে লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবের লালগালিচায় হাঁটছিলেন রাধিকা, তখনই তাঁর বেবি বাম্প চোখে পড়ে। মা হওয়ার পর এত দিন গণমাধ্যমে কথা বলেননি ‘অন্তহীন’ অভিনেত্রী। সংগীতশিল্পী স্বামী বেনেডিক্ট টেইলর আর মেয়েকে নিয়ে তিনি এখন লন্ডনে বাস করছেন।

চলচ্চিত্রজগৎ ও মাতৃত্ব
পেশাদার অভিনেত্রীর জন্য নতুন মা হওয়ার পর চ্যালেঞ্জ কতটা বেড়ে যায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে রাধিকা বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে না তাঁরা (সিনেমা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা) মায়েদের চাহিদার ব্যাপারে সচেতন। মায়েদের চলচ্চিত্রজগতে কাজ করা সত্যিই কঠিন। এখানে অনেক লম্বা সময় ধরে শুটিং হয়। অনেক সময় বাচ্চাকে দেখার সুযোগ পাওয়া যায় না। আমি ভবিষ্যতে কীভাবে এখানে মানিয়ে নেব, সে ব্যাপারে চিন্তিত। আমার মনে হয়, এ পরিস্থিতির দ্রুত একটি সমাধান প্রয়োজন।’

রাধিকা এমন সময়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বললেন, যখন দীপিকা বনাম সন্দীপ রেড্ডির দ্বন্দ্ব চরমে। এ বিতর্কের সূত্রপাত ফরাসি সাময়িকী মেরি ক্লেরকে দেওয়া অভিনেত্রীর সাক্ষাৎকার।

আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব একটা সক্রিয় নই। সারাক্ষণ ছবি তুলি না, সেলফি পোস্ট করি না। ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিজের দিকে না তাকিয়ে থাকাটা খুব শান্তির। কারণ, ছবি তুললেই ক্যামেরায় কেমন লাগছে, এ ব্যাপারে আমরা ভাবতে শুরু করি। এই দূরত্বের কারণে আমি নিজের শরীর ও মনকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছি।
রাধিকা আপ্তে

সেখানে দীপিকা জানান, এক পরিচালককে দেখা করতে না যাওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘বাচ্চার জন্য বাসায় থাকতে হবে।’ উত্তরে শুনতে হয়, ‘মনে হচ্ছে মা হওয়ার বিষয়টা খুব সিরিয়াসলি নিচ্ছেন!’ এর কয়েক দিন পরই জানা যায়, সন্দীপ রেড্ডির ‘স্পিরিট’ সিনেমা থেকে বাদ পড়েছেন তিনি। কারণ, মা হওয়ার পর আট ঘণ্টার বেশি কাজ করতে রাজি হননি দীপিকা। আরও কিছু শর্ত নিয়েও বনিবনা হয়নি। এরপর এ বিষয়ে দীপিকার পক্ষে কথা বলেছেন অজয় দেবগন-কাজল দম্পতি, অভিনেতা সাইফ আলী খান ও দক্ষিণি নির্মাতা মণিরত্নম।

আবেগের উত্থান-পতন
রাধিকা তাঁর সন্তান জন্মানোর পর তাঁর আবেগের ওঠানামা নিয়ে খোলামেলাভাবে কথা বলেছেন। তিনি সন্তান জন্মানোর পরের চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রসব–পরবর্তী বিষণ্নতার (পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন) জন্য আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারকে এ ব্যাপারে আগেই জানিয়ে রেখেছিলাম। আমি তাদের বলেছিলাম, আমি যদি সন্তান জন্মদানের পর বিষণ্নতায় ভুগি, তাহলে তারা যেন পাশে থাকে। তবে সৌভাগ্যবশত আমি কোনো তীব্র বিষণ্নতায় ভুগিনি। সন্তান জন্মানোর পর আমি আনন্দে উদ্বেল ছিলাম। পরবর্তী সময়েও আনন্দের সঙ্গে মাতৃত্ব উপভোগ করেছি।’

একা একা
মা হওয়ার পর একা একাই সব সামলাতে হচ্ছে রাধিকাকে। লন্ডনে তাঁদের সাহায্য করার জন্য কোনো গৃহপরিচারিকা নেই। তবে এটা নিয়ে আক্ষেপ নেই অভিনেত্রীর। ‘আমরা লন্ডনে থাকি, নিজেদের কাজ নিজেরাই করি। কোনো রকম সাহায্যকারী নেই। না আছে আয়া, না আছে রাঁধুনি—কেউ নেই। সবকিছু নিজেরাই করি। খুবই ব্যস্ত সময় যাচ্ছে, তবে আমরা এটা উপভোগ করি,’ বলেন রাধিকা।

নতুন অধ্যায়
সন্তান জন্ম দেওয়ার আগে-পরে মিলিয়ে বেশ কিছুদিন গণমাধ্যম থেকে দূরে ছিলেন রাধিকা। প্রকাশ্যে তাঁকে খুব একটা দেখাও যায়নি। তবে সবকিছু থেকে দূরে থেকেও দারুণ সময় কাটিয়েছেন বলে জানান রাধিকা। তাঁর ভাষ্যে, ‘সবকিছু থেকে দূরে থাকাটা আমাকে সতেজ করেছে। কেউ আমাকে দেখছে না—এ অনুভূতিটা উপভোগ করেছি। আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুব একটা সক্রিয় নই। সারাক্ষণ ছবি তুলি না, সেলফি পোস্ট করি না। ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিজের দিকে না তাকিয়ে থাকাটা খুব শান্তির। কারণ, ছবি তুললেই ক্যামেরায় কেমন লাগছে, এ ব্যাপারে আমরা ভাবতে শুরু করি। এই দূরত্বের কারণে আমি নিজের শরীর ও মনকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছি।’

গর্ভাবস্থায় রাধিকার কাজ না করার সিদ্ধান্তটি ইচ্ছাকৃত ছিল কি না, এটা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি সে সময় কোনো কাজ করিনি। কারণ, শারীরিকভাবে আমি কাজ করার মতো অবস্থায় ছিলাম না। তখন আমার শারীরিক অবস্থার সঙ্গে মানানসই কোনো কাজ বা চরিত্র ছিল না।’ মাতৃত্ব নিয়ে রাধিকা আরও বলেন, ‘এটা এখনই বলা একটু কঠিন। নতুন মা হয়েছি। এখন পর্যন্ত এটি এককথায় অসাধারণ, দুর্দান্ত; একই সঙ্গে খুব কঠিন। এখন পর্যন্ত সবকিছু বেশ ভালোই চলছে।’

নিজের মধ্যে কোনো ধরনের পরিবর্তন অনুভব করছেন কি না, এর উত্তরে রাধিকা হেসে বলে ওঠেন, ‘ভাবার মতো কোনো মানসিক শক্তি আমার নেই এখন। প্রতি রাতে দু-তিন ঘণ্টা ঘুমাতে পারছি। আমি আসলে জানি না। নিজেকে বিশ্লেষণ করার কোনো সময়ই আমার হাতে নেই। তবে আশা করি, কয়েক বছরের মধ্যে সেটা বুঝতে পারব।’

কবে ফিরছেন পর্দায়
রাধিকা জানান, মা হওয়ার পর থেকে নতুন নতুন কাজের প্রস্তাব পাচ্ছেন তিনি। ভালো প্রস্তাব যেমন আসছে, তেমনি আবার প্রচুর বাজে প্রস্তাবও পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে একটা মিশ্র অবস্থার মধ্যে আছেন তিনি। তবে তিনি সব সময় ভালো কাজের প্রস্তাব পেয়েছেন, এটা উল্লেখ করে বলেন, ‘ভালো কাজ সব সময়ই আমার কাছে এসেছে। সেদিক থেকে আমি ভাগ্যবান।’

Lading . . .