পাইলস কেন ও কাদের হয়, অপারেশন ছাড়া কি চিকিৎসা আছে
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পাইলস হলো পায়ুর রক্তনালি ফুলে যাওয়া। রক্তনালিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণ রক্ত জমা হলে রক্তনালি তখন ফুলে যায়। সাধারণত পায়ুপথে অতিরিক্ত চাপ পড়লে এমনটা ঘটে।
মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ দেওয়া, দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য।
লম্বা সময় বসে থাকা, বিশেষত টয়লেটে।
দীর্ঘদিনের ডায়রিয়া।
স্থূলতা।
এ ছাড়া যাঁরা প্রায়ই ভারী ওজন তুলে ব্যায়াম করেন বা ভারী ব্যাগ বহন করেন, তাঁদের এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীদের পাইলসের ঝুঁকি বেশি। পাইলস কেবল বড়দের রোগ নয়, শিশুদের হয়। এ বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন থাকা প্রয়োজন।
পায়ুপথে রক্তপাত। মলের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে কিংবা রক্ত দেখা যেতে পারে টয়লেট পেপারে।
পায়ুপথে চুলকানি, অস্বস্তি।
পায়ুপথে ব্যথা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যথা প্রচণ্ড তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
পায়ুপথের আশপাশে ফুলে যায় কিংবা ছোট গোটা হতে পারে।
কখনো কখনো ফুলে যাওয়া রক্তনালি একটা গোটার মতো হয়ে বেরিয়েও আসতে পারে পায়ুপথের ভেতর থেকে।
পায়ুপথে ব্যথা, চুলকানি বা অস্বস্তিকর অনুভূতি হলে একটি বড় পাত্রে কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে বসতে পারেন ১০-১৫ মিনিটের জন্য। সারা দিনে ২-৩ বেলা এভাবে উষ্ণতা নেওয়া যায়। ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল খেতে পারেন। সবার ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয় না। তবে কারও কারও আবার অপারেশনের বিকল্পও থাকে না। অপারেশনের অবশ্য কয়েকটি আলাদা আলাদা পদ্ধতি আছে।
যে পদ্ধতিতেই চিকিৎসা করা হোক না কেন, পাইলস নিরাময়ে এবং প্রতিরোধে জীবনধারা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিছু বিষয় মেনে না চললে পাইলসের সমস্যায় ভীষণ ভোগাতে পারে। এমনকি যিনি পাইলসের চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন, তাঁরও একই সমস্যা আবার হতে পারে। তাই কিছু বিষয় জেনে রাখা ভালো—
রোজ পর্যাপ্ত পানি খাবেন।
আঁশসমৃদ্ধ খাবার, যেমন শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়।
যেসব ফলমূল খোসাসহ খাওয়া যায়, সেসবের খোসা ফেলবেন না।
বিভিন্ন সবজির খোসা দিয়েও নানা পদ তৈরি করা ভালো।
লাল মাংস এড়িয়ে চলা ভালো।
দীর্ঘ সময় একটানা বসে থাকবেন না। টয়লেটে বসা অবস্থায় মুঠোফোন দেখতে গিয়ে বাড়তি সময় বসে থাকবেন না।
শরীরচর্চার অভ্যাস করুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
প্রয়োজনে কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন।
পাইলসের কিছু উপসর্গের সঙ্গে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের উপসর্গের মিল আছে। আজকাল কম বয়সেও এ ধরনের ক্যানসার হচ্ছে। তাই এ ধরনের যেকোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কারণ খুঁজে বের করবেন। সে অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন তিনি।