Advertisement

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বললেন—‘ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়’

বাংলাদেশ বুলেটিন

প্রকাশ: ৮ আগস্ট, ২০২৫

24obnd

কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজ নোটিশের জবাব দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এনসিপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও দলের যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মুহাম্মদ মুরসালীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এসনিপি সূত্র জানায়, হাসনাত আবদুল্লাহ ও নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী পৃথক পৃথকভাবে লিখিত আকারে শোকজ নোটিশের জবাব দিয়েছেন।

নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারীর শোকজ নোটিশের জবাব—

৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে আমার কোনো পূর্বনির্ধারিত রাষ্ট্রীয় বা সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল না। দল থেকেও আমাকে এ সংক্রান্ত কোনো দায়িত্ব বা কর্মপরিকল্পনা জানানো হয়নি। ৪ আগস্ট রাতে দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার কোচিং অফিসের সহকর্মীর ফোন ব্যবহার করে আমাকে জানায়, সে তার স্কুল বন্ধুদের সঙ্গে দুই দিনের জন্য ঘুরতে যাবে। আমি তাকে আহ্বায়ক মহোদয়কে অবহিত করতে বলি এবং সে জানায় যে বিষয়টি জানাবে এবং আমাকেও জানাতে বলে যেহেতু তার নিজস্ব ফোন পদযাত্রায় চুরি হয়ে গিয়েছিল।

৪ আগস্ট রাতে পার্টি অফিসে আমি আহ্বায়ক মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানাই। একই রাতে আমি সদস্য সচিব মহোদয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি এবং জানতে পারি যে, রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে দল থেকে তিনজন প্রতিনিধি যাচ্ছেন এবং সেখানে আমার কোনো কাজ নাই। আমি কোনো দায়িত্বে না থাকায় এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজন ও মানসিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সফরসঙ্গী হিসেবে সস্ত্রীক সারজিস আলম ও তাসনিম জারা-খালেদ সাইফুল্লাহ দম্পতি যুক্ত হন।

আমি ঘুরতে গিয়েছিলাম, তবে এই ঘোরার লক্ষ্য ছিল রাজনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে একান্তে চিন্তা-ভাবনা করা। সাগরের পাড়ে বসে আমি গভীরভাবে ভাবতে চেয়েছি গণঅভ্যুত্থান, নাগরিক কমিটি, নাগরিক পার্টির কাঠামো, ভবিষ্যৎ গণপরিষদ এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধানের রূপরেখা নিয়ে। আমি এটিকে কোনো অপরাধ মনে করি না, বরং একজন রাজনৈতিক কর্মীর জন্য এটি একটি দায়িত্বশীল মানসিক চর্চা।

কক্সবাজার পৌঁছানোর পর হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে আমরা নাকি সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমি তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমকে জানাই, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। হোটেল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে জানায় সেখানে পিটার হাস নামে কেউ নেই। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, তিনি তখন ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন।

এই গুজব একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এবং আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা। অতীতেও আমি এই হোটেলে থেকেছি এবং কখনো কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। অতীতেও আমি বেশ কয়েকবার ঘুরতে গিয়েছি কিন্তু ঘুরতে এলে দলের বিধিমালা লঙ্ঘন হয়, এমন কোনো বার্তা আমাকে কখনো দল থেকে দেওয়া হয়নি।

পরিস্থিতির আলোকে, আমি মনে করি শোকজ নোটিশটি বাস্তবভিত্তিক নয়। আমার সফর ছিল স্বচ্ছ, সাংগঠনিক নীতিমালাবিরোধী নয় এবং একান্ত ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনার সুযোগ মাত্র। তবুও দলীয় শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং রাজনৈতিক শালীনতা বজায় রেখে আমি এই লিখিত জবাব প্রদান করছি। অসভ্য জগতে সভ্যতার এক নিদের্শন হিসেবে।

আমার বক্তব্য স্পষ্ট: “ঘুরতে যাওয়া অপরাধ নয়।” কারণ ইতিহাস কেবল মিটিংয়ে নয়, অনেক সময় নির্জন চিন্তার ঘরে বা সাগরের পাড়েও জন্ম নেয়।

প্রসঙ্গত, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের ঐতিহাসিক দিনটিতে গত ৫ আগস্ট জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ৫ শীর্ষ নেতা কক্সবাজার সফর করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৪৩৩ ফ্লাইটে কক্সবাজার বিমানবন্দরে তারা অবতরণ করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন ছড়াতে থাকে। কেউ কেউ দাবি করেন, ওই শীর্ষ নেতারা সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে কক্সবাজারের একটি হোটেলে বৈঠক করতে গেছেন। এ খবরে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা ওই হোটেলের সামনে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেন। তবে পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের খবরের কোনো সত্যতা মেলেনি।

আরও পড়ুন

Lading . . .