দরপত্রের বাক্স খোলার আগেই ক্যালেন্ডার মুদ্রিত হয়ে দপ্তরে দপ্তরে
প্রকাশ: ৬ জুলাই, ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের দেয়াল ও টেবিল ক্যালেন্ডার (এক পৃষ্ঠা করে) মুদ্রণের টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দরপত্র গ্রহণের পরদিনই সেই ক্যালেন্ডারের মুদ্রণ কপি বিভিন্ন দপ্তরে বিতরণ করা হয়েছে। তবে দরপত্রের কোটেশন (ঠিকাদারদের দামের প্রস্তাব) বাক্স এখনো খোলাই হয়নি। দরপত্র যাচাই-বাছাই না করেই ‘পছন্দের’ ঠিকাদারকে আগেই কাজ দিয়েছেন বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক আখতার হোসেন মজুমদারের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর দেয়াল ও টেবিল ক্যালেন্ডার (এক পৃষ্ঠা করে) মুদ্রণের দরপত্র আহ্বান করে একটি কোটেশন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৩০ জুন বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। ওই দিনই বেলা ১২টায় দরপত্রদাতাদের উপস্থিতিতে (যদি কেউ থাকেন) কোটেশন খোলার কথা ছিল। তবে সেই টেন্ডারের বাক্স এখন পর্যন্ত খোলা হয়নি। অথচ মুদ্রিত ক্যালেন্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে বিতরণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ দপ্তরের উপরেজিস্ট্রার মো. আনোয়ারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিবছর জুলাই মাসের শুরুতে ক্যালেন্ডার বিতরণ করা হয়। এবার ক্যালেন্ডার মুদ্রণে দরপত্র জমা দেওয়ার ও ঠিকাদার নির্বাচনের শেষ সময় ছিল ৩০ জুন। প্রতিবার সাধারণত আরও আগে দরপত্র আহ্বান করা হয়। জনসংযোগ দপ্তরকে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তাঁরা সাড়া দেয়নি। সেই দরপত্র জমার বাক্স এখনো আমাদের দপ্তরে পড়ে আছে।’ টেন্ডারের বাক্স না খুলে এবং যাচাই-বাছাই না করেই কীভাবে কাজ শেষ হলে—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসা করতে বলেন।
দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হলে এবং কত টাকার কাজ—এসব বিষয়ে অবগত থাকেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল দপ্তর। তবে এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না এই দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। এটি জনসংযোগ দপ্তরের কাজ। আমি খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাতে পারব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এই টেন্ডার ডাকা হয়েছে। এটি তাঁরা দেখভাল করেন। এ অনিয়মের ব্যাপারে জানতে চাইলে এই দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি রাজশাহীর বাইরে আছি। আমি এসে বিষয়টি দেখব, আপনার সঙ্গে কথা বলব।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।